১০৩২৩ এর জয়েন করা নিয়ে জনমনে ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তি
চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ একাংশ শিক্ষকদের পুনরায় নিজ নিজ স্কুলে জয়েন করতে যাওয়ার প্রশ্নে ও কর্মসূচি ঘিরে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে । চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের এই কর্মসূচি ঘিরে প্রথমে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে সেটি হলো – এইভাবে কি কোনও সরকারী বা বেসরকারী চাকরিতে জয়েন করা যায় ? দ্বিতীয়ত : এই শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করেছে হাইকোর্ট । দেশের সর্বোচ্চ আদালতও ( সুপ্রিম কোর্ট ) হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে। – আদালতের নির্দেশে চাকুরিচ্যুত হওয়া সেই শিক্ষকদের পুনরায় স্কুলে জয়েন করাতে হলে তো সুপ্রিম কোর্টই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে হবে । সুপ্রিম কোর্ট এমন কোনও নির্দেশ রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দপ্তরকে দিয়েছে কি? বিভ্রান্তি তৈরি সৃষ্টি হয়েছে । মামলায় যুক্ত হওয়া বা না হওয়া প্রসঙ্গে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাওয়া আরটিআই এর জবাব নিয়েও জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে চাকরি মামলায় যুক্ত আইনজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , এখানে বিভ্রান্তির কোনও সুযোগ নেই । কেননা , হাইকোর্ট মামলা চলাকালীন সময়েই আদালত থেকে পাবলিক নোটিফিকেশন করা হয়েছিল । ওই নোটিফিকেশন অনুযায়ী সকলেই মামলার পক্ষভুক্ত । এছাড়াও ওই নোটিফিকেশনে বলা হয়েছিল যদি কারও কোনও বক্তব্য থাকে তাহলে লিখিতভাবে জমা দেওয়ার জন্য । ফলে কে বা কারা মামলার পক্ষভুক্ত আর কে বা কারা নয় ? এই প্রশ্নের কোনও সুযোগ নেই বলে জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থ শঙ্কর দে । তাহলে সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে আরটিআই – এর জবাব দেওয়া হয়েছে , সেটি তাহলে কি ? এই প্রশ্নের উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রী দে বলেন , সুপ্রিম কোর্ট থেকে কি জানিয়েছে সেটা আমার জানা নেই এবং দেখিওনি । ফলে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবো না । তবে এইটুকু বলতে পারি, মূল চাকরি মামলার আবেদনে তো আর সবার নাম থাকে না । তাই হয়তো সুপ্রিম কোর্ট থেকে এমন কোনও জবাব দেওয়া হয়েছে । তিনি আরও জানান , ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার সকল শিক্ষককে টার্মিনেশন লেটার দিয়েছে । সেই টার্মিনেশন লেটার সকলে গ্রহণ করেছে । শুধু তাই নয় , সকল শিক্ষককে এই টার্মিনেশন লেটার দিয়ে বলেছে ছয় মাসের জন্য তোমাদের সকলকে অ্যাডহক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র দিচ্ছি । ছয় মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর বর্তমান সরকার সুপ্রিম কোর্টে বিশেষ জানিয়ে এই শিক্ষকদের আরও দুই বছর অ্যাডহক চাকরির সুযোগ করে দিয়েছে । পরবর্তী সময় রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবার আবেদন জানিয়ে বলেছে , এদেরকে নিয়োগ করার জন্য । এর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচটি পদ্ধতি উত্থাপন করে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট শুধু বয়সে ছাড় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই অনুমোহন করেনি । ফলে পুনরায় স্কুলে জয়েন করার প্রশ্নই আসে না । আর এটা করতে হলে সুপ্রিম কোর্ট পূর্বের আদেশ প্রত্যাহার করে নতুন করে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে হবে । শুধু তাই নয় , এই মামলার রায় আইনের ভাষায় ‘ Judgement in Rem ‘ । অর্থাৎ এই রায় সকলের উপরে লাগু হবে । ফলে বিভ্রান্তির কোনও সুযোগ নেই । তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা হলে কিছু বলার নেই । এখন প্রশ্ন হচ্ছে , চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা কি অপরাধী ? না , তারা মোটেও অপরাধী নয় । তাদের যারা বেআইনিভাবে , আইন বহির্ভূতভাবে চাকরি
দিয়েছে অপরাধ তাদের । আমরাও চাই বর্তমান সরকার তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুক।