১০৩২৩-এর সুরাহার পথ খুঁজতে কমিটি গঠন করল সরকার
অবশেষে ১০,৩২৩ ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন করলো রাজ্য সরকার। কমিটিতে রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ বি পাল, বরিষ্ঠ আইনজীবী চন্দ্রশেখর সিন্হা এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএফএস অফিসার তথা বর্তমানে ইণ্ডিয়ান অয়েল বোর্ড এবং রাবার বোর্ডের অধিকর্তা প্রসেনজিৎ বিশ্বাস । এই অ্যাডভাইজরি কমিটি তন্ময় নাথ বনাম অন্যান্য WP (C) 51/2014 নং মামলায় গত ৭ মে ২০১৪ ইং তারিখে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিষয়ে যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনা করবে। কমিটিকে বলা হয়েছে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে তাদের অভিমত জানিয়ে রাজ্য সরকারের (শিক্ষা দপ্তর) কাছে রিপোর্ট জমা দিতে। এই তিন সদস্যের কমিটিকে সহায়তা করার জন্য শিক্ষা দপ্তর থেকে আরও চারজন কর্মীকে কমিটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এই চারজনের মধ্যে একজন প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা, দুইজন সেকেণ্ডারি এডুকেশনের ইউডিসি এবং একজন প্রাথমিক ও সেকেণ্ডারি এডুকেশনের ওএসডি। উল্লেখ্য, তিনজনের যে অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা কয়েকদিন আগেও মহাকরণে একটি বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল, আইন সচিব সহ অন্যান্য আইনি বিশেষজ্ঞরাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে ইতিবাচক কিছু বেরিয়ে আসেনি। পরবর্তী সময়ে আবারও বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু নির্বাচনি ডামাডোলে সেই বৈঠক আর হয়ে উঠেনি। এই পরিস্থিতিতে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করার প্রস্তাব আসে। সেই মতো রাজ্য সরকার কমিটি গঠন করে, সেই কমিটির উপরই দায়িত্ব অর্পণ করেছে আইনি জটিলতাগুলি পর্যালোচনা করে এই বিষয়ে মতামত জানাতে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে ১০,৩২৩ ইস্যুতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। রাজ্য সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে আইনের মধ্যে থেকে এবং আইন মেনে যদি চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সমস্যা সমাধান করা যায়, তাহলে সরকার সেই পথেই হাঁটবে। রাজ্য সরকারকে আদালত অবমাননার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সরকার এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না যা বেআইনি হবে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং জটিল। নানাভাবে আইনের ব্যাখ্যাতে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। কমিটিকে যাবতীয় বিষয় এবং দিকগুলি পর্যালোচনা করে এমন একটি উপায় বের করতে হবে, যাতে সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ বি পাল ১০,৩২৩ ইস্যুতে বিভিন্ন সময় নানা লেখালেখি করেছেন। নানা ভাবেই তিনি হাইকোর্টের রায়ের আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে, সেই জটিলতা থেকে কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় বা যাবে, সেই নিয়েও দিকনির্দেশ করেছিলেন। কিন্তু এই নিয়েও আইনজ্ঞ মহলে দ্বিমত রয়েছে বলে খবর। রাজ্যে আইন তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে খণ্ডন করা যায় কিনা সেটাও একটা বড় আইনি বিষয়। ফলে কমিটি কী মতামত দেয়, এখন সেটাই দেখার। তবে এই কমিটি গঠন করার পর একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে নির্বাচনের আগে আর কিছুই হচ্ছে না। অনেকে আবার অভিযোগ তুলে বলছে, নির্বাচনের বৈতরণী পার হতেই সরকার কমিটি গঠন করে আপাতত ইস্যুটিকে চাপা দিয়ে রাখতে চাইছে। যদিও সরকারের কাছে এছাড়া অন্য কোনও পথ নেই ।