১২২ বছরে আবহাওয়ার অদ্ভূত পরিবর্তন।
৫০ ডিগ্রি থেকে এক ধাক্কায় ১৫ ডিগ্রি! কিছুদিন আগেই গনগনে তাপপ্রবাহে পুড়ছিল দিল্লি।আর বৃহস্পতিবার সকালে কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু দিল্লিবাসসী।তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ১৫ ডিগ্রিতে। ভেল্কি দেখাচ্ছে আবহাওয়া। তার থেকেও বড় কথা হল; সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় মুড়ে গিয়েছিল দিল্লি। ঝোড়ো ঠান্ডা হাওয়ার সঙ্গে সকাল থেকেই শীত শীত ভাব। কাঠফাটা গরমের মে মাসে এমন ঠান্ডা গত একশো বছরেও পড়েনি।আবহাওয়ার ইতিহাস বলছে; ১৯০১ সালের ২২ মার্চ দিল্লির তাপমাত্রা নেমেছিল ১৭ ডিগ্রিতে।এই প্রথম শীতল মে মাস দেখল দিল্লি।মৌসম ভবন জানিয়েছে,১২২ বছরের মধ্যে মে-র গরমে আচমকা এমন ঠান্ডা সকাল দেখা যায়নি।রাজধানীর তাপমাত্রা দুপুর ১২টা থেকে ২টোর মধ্যে বেড়ে হয়েছে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।শেষবার ২০০৯ সালে ২৯ এপ্রিল পারদ নেমেছিল ২২ ডিগ্রিতে।এরপর এত নিচে কখনই নামেনি দিল্লির পারদ।এই আবহে বৃহস্পতিবার সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গিয়েছিল দিল্লি।হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৫ দিন দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি জারি থাকবে।সেই সঙ্গে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলেও অনুমান করছেন আবহাওয়াবিদরা।দিল্লির গরম কারও অজানা নয়। গত বছরই জুন মাসে রাজধানী দিল্লির “হিট ইনডেক্স’ ৫৩ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সার্বিক আর্দ্রতার আনুপাতিক হিসাব করেই ‘হিট ইনডেক্স’এর অঙ্ক কষা হয়।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, দিল্লিতে গরমের পাশাপাশি আর্দ্রতাও বেশি হওয়ায় অস্বস্তিকর আবহাওয়া তৈরি হয়। তার উপর দূষণ তো আছেই। অ্যারোসল দূষণ ক্রমশ বাড়ছে দিল্লিতে। প্রতিবেশী রাজ্য থেকে খড়পোড়া ধোঁয়ার কারণেও বাতাসে ভাসমান দূষিত গ্যাসের মাত্রা বাড়ছে।একদিকে দূষণ, অন্যদিকে খামখেয়ালি আবহাওয়া দুইয়ের জেরে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন দিল্লিবাসী। তার মধ্যে হঠাৎ ঠান্ডায় সব কিছুই যেন তালগোল পাকিয়ে গেল।ছয় ঋতুর এখন রঙ্গ আর নেই।শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যেন খিচুড়ি হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে গনগনে রোদে গরম আবার মে মাসে তাপমাত্রা কমে ঠান্ডা। এমন উলটপুরাণের কারণ যে জলবায়ুর বদল তা বেশ বোঝা যাচ্ছে,’ বললেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ব উষ্ণায়ণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, উত্তাপ বাড়ছে সমুদ্রের পৃষ্ঠদেশের।নগরোন্নয়ণ যত বেশি হচ্ছে, ততই কংক্রিটের জঙ্গলে সিমেন্ট-বালি-ধাতুর ইমারত তাপমাত্রা শোষণ করে নিচ্ছে। সেই তাপ বেরিয়ে যেতে পারছে না শহর ছেড়ে। ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে; জানালেন পরিবেশবিদ অধ্যাপক স্বাতীনন্দা চক্রবর্তী। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডও তাপ শোষণ করে। দূষণের মাত্রাও বাড়িয়েছে।