১২ বছরেও গড়ে ওঠেনি পরিকাঠামো,ক্ষুব্ধ ছাত্ররা!!

 ১২ বছরেও গড়ে ওঠেনি পরিকাঠামো,ক্ষুব্ধ ছাত্ররা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-১২ বছর হলেও রাজ্যের একমাত্র প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়ের পড়াশোনা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হলেও ভেটেরিনারি কলেজে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা নিরসন হলো না।উল্টো বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে, রাজ্যের একমাত্র প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয় বন্ধের পথে। ফলে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।
মহাকরণ সূত্রে খবর,২০০৯ সালে প্রাণী বিজ্ঞান কলেজের অনুমোদন আসে ত্রিপুরায়। ২০১২ সাল থেকে পঠনপাঠন শুরু হয়।তবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল এই তিন বছরে শুধুমাত্র কলেজে ছাত্র ভর্তি ও পড়াশোনার জন্যে একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ হয়।এরপর ২০১২ সাল থেকে পড়াশোনা শুরু হয়ে যায়। তবে এক অদৃশ্য কারণে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভেটেরিনারি কলেজে নিয়মিত পড়াশোনার জন্যে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। এমনকী ছাত্র ছাত্রী অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা পর্যন্ত নিয়োগ নেই। আর গত ৫ বছরে তো ছাত্র বিক্ষোভের চাপে প্রতিশ্রুতি প্রদান হলেও তা কার্যকর হয়নি।উল্টো প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করতে হচ্ছে। আর বর্তমানে ২০১১ সালে কলেজের জন্যে নির্মিত পাকা বাড়িটির পর্যন্ত বেহাল দশা। এমনকী শিক্ষক শিক্ষিকারা পর্যন্ত চাকরি ছেড়ে বহিঃরাজ্যে চলে যাচ্ছেন।তবে দপ্তর উদাসীন! পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ কলেজে পঠনপাঠনের ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই। তাই কলেজের নিয়মিত পড়াশোনা লাটে উঠেছে। তবে ছাত্রছাত্রীর স্বার্থে পদক্ষেপ অধরা। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়ের বর্তমান বেহালদশা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।শুধু তাই নয়, পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা তাদের সমস্যাগুলি প্রমাণ সহ কেন্দ্রীয় সরকার ও ভিসিআই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। প্রাণী বিজ্ঞান কলেজ সূত্রে খবর প্রাণী বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষক শিক্ষিকারা সংকটে ধুঁকছে। নিয়োগ নেই। ভিসিআই’র নীতিমালা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে প্রাণী বিজ্ঞান কলেজ ন্যূনতম ৯৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকার প্রয়োজন রয়েছে।আর এখন আছেন মাত্র একত্রিশ জন। সহজেই অনুমেয় পড়ুয়াদের করুণ অবস্থা।

শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে সিলেবাস শেষ তো দিবাস্বপ্ন। প্রত্যেকদিন নিয়মিত পঠনপাঠন হচ্ছে না। ফলে জেরক্স নির্ভর চলছে পঠনপাঠন। এই প্রাণী বিজ্ঞান কলেজে পাঠরত প্রায় তিন শতাধিক পড়ুয়ার প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাতে কলমে শিক্ষাই এই কোর্সের প্রধান বিষয়। পরিতাপের বিষয় হলো, পড়ুয়াদের প্রত্যেকদিন প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হচ্ছে না। ‘প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিযোগ, ভেটেরিনারি কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ২০১৬ সালের নীতিমালা অনুযায়ী চলছে কলেজ। তবে ভিসিআই ২০১৬ নির্দেশিকা মানা হচ্ছে না। অভিযোগ রাজ্য প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের আধিকারিকরা পড়ুয়াদের দাবিতে কর্ণপাত করছেন না। যার খেসারত দিচ্ছেন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা।বিগত পাঁচ বছর ধরে পড়ুয়াদের সমস্যা আরও বেড়ে গিয়েছে। বিগত শিক্ষাবর্ষেও বছর প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়ের নতুন করে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন প্রদান করেনি ভিসিআই। ওই সময়ে লাগাতার ছাত্রছাত্রীর আন্দোলনের চাপে পড়ে পুনরায় ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন প্রদান হয়। মূলত ছাত্রছাত্রীর কাঁধে ভর করেই ভর্তির অনুমোদন পায় রাজ্য। অবাক করার বিষয় হলো, অনুমোদন প্রাপ্তির পর আর পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হলো না। তাই আবারও ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন বাতিল হয়ে যেতে পারে। এমনকী প্রাণী বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয় কলেজটিও বন্ধের পথে। একপ্রকার অস্তিত্বের সংকটে ধুঁকছে প্রাণী বিজ্ঞান কলেজ। এদিকে ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিযোগ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্য রাজ্য থেকে প্রাণী বিজ্ঞান কলেজের জন্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের আনা হয়েছিল। তা মানলেন না সরকার। তাই গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা ক্ষুব্ধ হয়ে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। রাজ্যে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই রাজ্যে ভেটেরিনারি কলেজের সূচনা হয়েছিল। তবে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের দায়সারা মনোভাবের জন্যে বর্তমানে সব গায়েব। খয়েরপুরস্থিত আরকে নগরে প্রাণী বিজ্ঞান কলেজের দিকে গুরুত্ব দেয়নি রাজ্য সরকার। ব্যাচেলর অব ভেটেরিনারি সায়েন্স কোর্সে পড়াশোনা রাজ্যে বন্ধের পথে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.