১৮ মাসে ১০ লক্ষ চাকরিঃ মোদি

 ১৮ মাসে ১০ লক্ষ চাকরিঃ মোদি
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দেড় বছরের মধ্যে ১০ লক্ষ চাকরি হবে । ঘোষণা মোদি সরকারের । স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । তিনি সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকে কর্মী সংখ্যার পরিসংখ্যান এবং কত শূন্যপদ রয়েছে , সেই বিষয়ে খোঁজখবর করেন । নিজেই যাচাই করেন কোন্ বিভাগে কত কর্মী প্রয়োজন অথবা কোন দপ্তর কিংবা মন্ত্রকের কাজকর্ম পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ছে । এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন , কেন্দ্রীয় সরকারী দপ্তরগুলিতে কর্মী নিয়োগ করতে হবে । মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে , প্রধানমন্ত্রী সমস্ত মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আগামী দেড় বছরের মধ্যে এই ১০ লক্ষ নিয়োগ সমাপ্ত হয়ে যায় ।

এই লক্ষ্য পূরণ করার জন্য তিনি মন্ত্রকগুলিকে বলেছেন , মিশন মোড হিসাবে কাজ করতে । অর্থাৎ দেড় বছরের মধ্যে অবশ্যই লক্ষ্যপূরণ করতে হবে । ঠিক যেদিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনায় চলেছে বিরোধীরা , তার প্রাক্কালেই মঙ্গলবার ১০ লক্ষ চাকরির ঘোষণা করে বস্তুত মোদি চমকপ্রদ এক রাজনৈতিক টেক্কা খেলার প্রয়াস করেছেন । আগামীকাল কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠক হবে বিরোধীদের । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা ওই বৈঠকে এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে , প্রায় কমবেশি সব বিজেপি বিরোধীই হাজির থাকতে চলেছে । তবে আম আদমি পার্টি এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি যোগ দেবে কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত নয় । যদিও মমতার ডাকা বৈঠকে সিপিএম হাজির থাকবে বলেছে । আসবে কংগ্রেস , সমাজবাদী পার্টি , এনসিপি , রাষ্ট্রীয় জনতা দল , ডিএমকে । বিরোধীরা চান এক সম্মিলিত প্রার্থী হোন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ।

এই বৈঠক নিয়ে জোরদার চর্চার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ১০ লক্ষ চাকরির ঘোষণা করেছেন । যদিও বিরোধীদের দাবি , তিনি এই ঘোষণা করেছেন লোকসভা ভোটের কথা ভেবে । ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে মোদি ঘোষণা করেছিলেন বছরে ২ কোটি চাকরি হবে । আর এখন আবার সেই চমকের রাজনীতিকেই হাতিয়ার করেছেন মোদি বলে বিরোধী দলগুলি আজ কটাক্ষ করেছে । যদিও লোকসভা ভোটের আগে মোদির এই ঘোষণা বিজেপির কাছে যথেষ্ট মনোবল বৃদ্ধিকারী এক পদক্ষেপ বলে বিজেপি এখন থেকেই উচ্ছ্বসিত । রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিরোধীরাও তৎপরতা বাড়াতে শুরু করল । এই উদ্দেশ্যেই মঙ্গলবার দিল্লীতে গিয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এ দিন দিল্লী পৌঁছেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ারের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে দেখা করেন । আগামীকাল রাজধানীতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা চালাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বৈঠক আহ্বান করেছেন ।

এই বৈঠকে শেষপর্যন্ত কোন্ কোন্ দল যোগ দেয় এ নিয়েই রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে রয়েছে । এদিকে , এই উদ্দেশ্যেই মঙ্গলবার রাজধানী দিল্লীতে এসে পৌঁছান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এ দিনই মমতা বিকালে শারদ পাওয়ারের সাথে দেখা করেন । এ দিন শারদ পাওয়ারের সাথে দেখা করেন ২ বাম দলের নেতৃবৃন্দ । মমতার শারদ পাওয়ারের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাকে রাজি করানো রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী পদে তিনি যেন দাঁড়াবার সম্মতি প্রদান করেন । যদিও ‘ মারাঠা স্ট্রংম্যান যায়নি । ভবিষ্যতে কী করবেন তা অবশ্য জানা যায়নি।
এদিকে , আগামীকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহুত বৈঠকে বামেদের তরফে সিপিএম এবং সিপিআই তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে । যদিও সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মমতাকে পাল্টা চিঠি লিখে বলেছেন , এই ধরনের বৈঠক ডাকার আগে বিরোধীদের নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করা প্রয়োজন , যাতে বৈঠকে যতবেশি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা যায় । কিন্তু মমতা তা করেননি ।

আগামীকালের বৈঠকের আগে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে বৈঠকের স্থান , সময় , আমেণ্ডা ইত্যাদি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । মমতা চিঠিতে লিখেছেন , এই সময়ের দাবি হচ্ছে , বিরোধীদের এক জোট হয়ে একজন সর্বসম্মত প্রার্থী দেওয়া । সীতারাম পাল্টা লেখেন , তবে ভালো হতো যদি বৈঠকে বসার আগে সবার সাথে আলোচনা করা যেত । এতে হয়তো অংশগ্রহণ আরও ভালো হতো মত ইয়েচুরির । এদিকে , এদিনই সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআইএর ডি রাজা শারদ পাওয়ারের সাথে দেখা করেছেন । শারদ পাওয়ারের সাথে ছিলেন এনসিপির অপর নেতা পিসি চাকো এবং প্রফুল্ল প্যাটেল । তবে সূত্রের খবর , পাওয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে না লড়ার কথাই বলেছেন । অন্যদিকে , মমতা ব্যানার্জী আহূত আগামীকাল , বুধবারের বৈঠকে কংগ্রেস যোগ দেবে । কংগ্রেসের তরফে মল্লিকার্জুন খাড়গে , রণদীপ সুরজেওয়ালা , জয়রাম রমেশ যোগ দিতে পারেন । আগামী ১৮ জুলাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন । নির্বাচনে ভোটাভুটি হলে এখনও পর্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে এনডিএ । ইলেট্রোরাল কলেজের অর্ধেকই এনডিএর । এর উপর বিজিডি , জোট এডিএমকে , ওয়াইএমআর কংগ্রেসের সমর্থন মিলতে পারে এনডিএর ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.