১৯১ তম জন্মদিন পালন জোনাথনের!!
পৃথিবার ইতিহাস জোনাথন হল সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী। সম্প্রতি মহা ধুমধান করে উদযাপিত হল তার ১৯১ তম জন্মদিন।তিন দিন ধরে চলল শিশুদের হই-হট্টগোল আর বড়দের খানাপিনার আসর। জোনাথন একটি দৈত্যাকৃতি প্রজাতির কচ্ছপ।কচ্ছপ এমনিতে পৃথিবীর যে কোনও প্রাণীর চেয়ে দীর্ঘায়ু হয়। জোনাথন হল কচ্ছপকূলে সবচেয়ে জীবিত প্রবীণ।তিন শতাব্দীর সাক্ষী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে সে। তার বাস দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সেন্ট হেলেনা দ্বীপে। তবে জোনাথনের সঠিক বয়স কত, তার কোনও প্রামাণ্য নথি নেই।গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের মতে, ১৮৮২ সালে আফ্রিকার সেশেলস কাউন্টি থেকে যখন সেন্ট হেলেনা দ্বীপে তাকে আনা হয়, তখনই তার বয়স হয়েছিল অন্তত ৫০ বছর। সেই হিসাবে এখন তার বয়স অন্তত ১৯১ বছর।সম্ভবত তার বয়স আরও বেশিও হতে পারে।জোনাথন হল নথিভুক্ত ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক কচ্ছপ।এটি পূর্ব আফ্রিকার সিশেল দ্বীপের দৈত্য আকৃতির কচ্ছপ।এই প্রাণীর গড় আয়ু প্রায় ১৫০ বছর। পশু চিকিৎসক জো হোলইনস গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেন, ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলা এবং চোখে ছানি পড়ার পরেও জোনাথনের খিদে কিন্তু আগের মতোই আছে।একটি ছোট্ট দল প্রতি সপ্তাহে তাকে হাত দিয়ে ফল ও সবজি খাওয়ায়।এটি শুধু তার ক্যালরির পরিপূরক নয়,বরং খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং নানা উপাদানের জোগান দেয়।গ্রেট ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণাধীন দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপ সেন্ট হেলেনার গভর্নরের আবাসিক বাসভবন প্ল্যান্টেশন হাউসে জোনাথন ১৪১ বছর ধরে বসবাস করছে।সেখানেই প্রতি বছর নভেম্বরের শেষ দিনটিতে ঘটা করে তার জন্মদিন পালন করা হয়। জোনাথন অবশ্য একা থাকে না,তার সঙ্গী হিসাবে রয়েছে দৈত্যাকৃতির আরও তিনটি কচ্ছপ।তাদের নাম ডেভিড ও এমা।১৯৬৯ সালে এদের এখানে আনা হয়েছিল।দুটির বয়সই আনুমানিক ৫৫ বছর।পরে ফ্রেডরিক নামে আরও একটি ছোট কচ্ছপ এদের সঙ্গে যোগ দেয় ১৯৯১ সালে। এখন তার বয়স ৩২ বছর।জোনাথনের প্রিয় খাবার বাঁধাকপি, শসা, গাজর, লেটুস, আপেল ও অন্যান্য মৌসুমি ফল।সে বিশেষ করে কলা খেতে খুব ভালবাসে।জোনাথনের দীর্ঘ জীবনে তার চারপাশের বিশ্বে অনেক পরিবর্তন এলেও সে আগের মতোই আছে।দুটি বিশ্বযুদ্ধ, প্লেগ ও কোভিড়ের মতো অতিমারি সে দেখেছে। জোনাথনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক জো বলেন,“ও সূর্যের আলো পছন্দ করে। তবে বেশি গরম পড়লে ওকে ছায়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।আর সূর্যালোকিত দিনে জোনাথন সূর্যস্নান উপভোগ করে।সে খোলস থেকে বের হয়ে আসে। লম্বা গলা ও পা ছড়িয়ে রোদের উত্তাপ শুষে নেয়।আর শীতের দিনে ঝরে পড়া পাতার নিচে বা কাটা ঘাসের নিচে চুপচাপ বসে থাকে।’