২৪’র প্রস্তুতিতে কংগ্রেস

 ২৪’র প্রস্তুতিতে কংগ্রেস
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

২০২৪-এর প্রস্তুতি এবার যে কংগ্রেস জোরকদমে করতে চাইছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০১৪ এবং ২০১৯-এর কংগ্রেস থেকে এবার অনেক আগে থেকেই মাঠে নামার প্রস্তুতি কংগ্রেসের। টিমও গড়া হয়ে গেছে। নয়া সভাপতিও পেয়ে গেছে দল। এবার শুধু ময়দানে নেমে গোল দেওয়া। যদিও এর আগে অনেক প্রস্তুতি দরকার এবং একটা শক্তপোক্ত টিম দরকার। এর লক্ষ্যেই রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি পুনর্গঠিত হলো। নয়া সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে দশ মাস হলো নিযুক্ত হয়েছেন। তার সভাপতি হবার প্রথম ভোট ছিল গুজরাট আর হিমাচলে। কিন্তু গুজরাটে কংগ্রেস ডাহা ফেল করলেও হিমাচল কিন্তু কংগ্রেস বিজেপি থেকে ছিনিয়ে এনেছে। তেমনি কর্ণাটকও কংগ্রেস বিজেপির থেকে ছিনিয়ে এনেছে। স্বভাবতই কংগ্রেস দল উজ্জীবিত। সামনেই পাঁচ রাজ্যে ভোট। রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরাম। এর মধ্যে রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস ক্ষমতায়। মধ্যপ্রদেশে গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলেও পরবর্তীতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। ফলে সে রাজ্যে কংগ্রেস সরকারের পতন হয়। এই অবস্থায় কংগ্রেস মনে করছে রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং মধ্যপ্রদেশ এবারও কংগ্রেসই সরকারে আসছে যদি না কিছু অঘটন ঘটে।অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোটও গঠিত হয়েছে। তবে জোট এখনও শক্তিশালী কিংবা বিজেপিকে মাত দিয়ে দেবে একথা বলার সময় আসেনি। তবে যদি বছর শেষে ৫ রাজ্যের মধ্যে অন্তত ৩ রাজ্যে বিজেপিকে হারাতে পারে কংগ্রেস তাহলে বলা যায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এত সহজ হবে না নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির কাছে। তাই এবার অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস। একদিকে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা-১ দারুণ সফল হয়েছে বলে কংগ্রেস বরাবরই দাবি করে আসছে। এবার তাই কংগ্রেস চাইছে গান্ধীজয়ন্তীর দিন ২রা অক্টোবর রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা-২ যে শুরু করতে যাচ্ছে। – গুজরাট থেকে তাতে ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য – শরিক নেতৃত্বও পা বাড়াক। তাহলে বিজেপি বিরোধী তকমাটা আরও জোরদার হবে। কংগ্রেস অবশ্য এ নিয়ে বসে নেই। খাড়গে সভাপতি হবার পর দশ মাস সময় নিয়েছেন দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণ কমিটি তথা সিডসিকে সাজাতে। তাতে আপাতদৃষ্টিতে বলা যায় খাড়গে অনেকটাই সফল।
একটা সময় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। দলীয় শীর্ষনেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করে বসেন। এই তালিকায় পোড়খাওয়া আনন্দ শর্মা, শশী থারুর, গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিবালের মতো নেতৃত্বরা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত কপিল সিবাল অন্য দলে যোগ দেন। গুলাম নবি আজাদের মতো নেতা নয়া দল গঠন করেন। অন্যরা দল না ছাড়লেও দলে কার্যত কোণঠাসা ছিলেন। এবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির যে পুনর্গঠন হয়েছে তাতে খাড়গে এই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়েছেন। শশী থারুর, আনন্দ শর্মা, মণিশ তিওয়ারিদের মতো বিক্ষুব্ধ নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে ওয়ার্কিং কমিটি গড়েছেন খাড়গে। তেমনি শচিন পাইলট, গৌরব গগৈদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে নবীন হিসাবে ওয়ার্কিং কমিটিতে। তেমনি মহিলাদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শাখা সংগঠনের পদাধিকারীদেরও ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারসাম্য আনা হয়েছে কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণ কমিটি গঠনে এবং এ কাজে দারুণ সফল মল্লিকার্জুন খাড়গে তার আগে কংগ্রেসের আরও পরীক্ষা আসছে। ২০২৪-এর আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোট কংগ্রেসের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। কংগ্রেসের এই নয়া টিম কী রণকৌশল ঠিক করে নির্বাচনকে ঘিরে তাই এখন দেখার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.