২৪ বছর পর সন্তানের জন্ম, মা মেয়েকে রথে চাপিয়ে বাড়ি আনল হোসেল পরিবার

 ২৪ বছর পর সন্তানের জন্ম, মা মেয়েকে রথে চাপিয়ে বাড়ি আনল হোসেল পরিবার
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

২৪ বছর অপেক্ষার পর কোল আলো করে এল কন্যা সন্তান । আনন্দে আত্মহারা দম্পতি । সদ্যজাত শিশুকন্যাকে যে ভাবে বাড়িতে নিয়ে এলেন তার বাবা সেই ছবি প্রকাশিত হয়েছে বিহার রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটেও । বিষয়টিকে ‘ উদাহরণ ‘ বলে যেমন ব্যাখ্যা করেছে নীতিশ্বের প্রশাসন তেমনই আবার কোথাও কোথাও ঘটনাটিকে ব্যতিক্রমী ‘ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে । মেয়ের জন্মদিন যেখানে একবিংশ শতাব্দীতে এসে বহু বাধার মুখে পড়তে হয় , সেখানে কন্যা সন্তানকে কার্যত ‘ লক্ষ্মী’র সম্মানে ঘরে আনলেন ওই দম্পতি । বিহারের কাটিহারের হোসেল পরিবার এবার মেয়ের জন্মের উদযাপন করল নিজেদের মতো করে । ২৪ বছর পর পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হল । তাকে জমকালোভাবে স্বাগত জানানো হল । আজও কাটিহারে কন্যা সন্তান জন্মকে খুব একটা ভালোভাবে দেখে না বিহারের মানুষজন । তাদের ভয় একটাই , মেয়ের জন্ম মানেই বিয়েতে পণ দিতে লাখ লাখ টাকা খরচ হবে । ২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে শুধুমাত্র কন্যা সন্তান জন্মের কারণে হয় মাকে নয় মেয়েকে মৃত্যুর মুখেপতিত হতে হয়েছে । এই সংখ্যা শুধু কাটিহারে ৭৫। এইরকম একটা পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে এক অনন্য নজির তৈরি করলেন এই দম্পতি । হাসপাতাল থেকে মা ও মেয়েকে রথে চাপিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে পরিবার । মেয়ের জন্মের পর পুত্রবধূকে হয়রানির খবর যখন প্রায় সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে , সেখানে এই খবর সামনে আসতেই দম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে ’ ’ছুটে আসেন খোদ জেলাশাসক । ২৪ বছর ধরে কাটিহারের হোসেল পরিবারে কোন সন্তানের জন্ম হয় নি । ফলে একটা চাপা দুঃখ ছিল হোসেল পরিবারের । গত বছর ডিসেম্বর মাসে যখন হোসেল বাড়ির পুত্রবধূ গর্ভবতী হলেন তখন থেকেই খুশির হওয়া বইতে থাকে । এরপর কন্যা সন্তানের জন্ম হলে তাকে বাড়িতে আনার জন্য একটি সুসজ্জিত রথের ব্যবস্থা করা হয়েছিল হোসেল পরিবারের তরফ থেকে । গানের তালে তালে নাচতে নাচতে কন্যাসন্তান ও তার মাকে বাড়িতে আনল পরিবার । ‘ সমাজের একটা অংশের রক্ষণশীলতাকে আয়না দেখাচ্ছে এই পরিবার । পরিবারটি উৎসবের মতো কন্যা সন্তান জন্মের সময়টাতে আনন্দ উদযাপন করেছেন ‘ , এমনটাই সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন কাটিহার জেলাশাসকের দপ্তর ।প্রতি বছর ঘটা করে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘ আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস ‘ পালিত হয় । যার উদ্দেশ্য কন্যা ভ্রূণহত্যা বন্ধ করা । কিন্তু এক্ষেত্রে সদ্যজাত কন্যা সন্তানের বাবা জানালেন , ‘ কন্যা সন্তান হল দেবদূতের মতো , যে পরিবারে আসে সেই বাড়িতেই অফুরন্ত আনন্দ এবং ভালবাসায় ভরে ওঠে । পরিবারে সর্বদা সৌভাগ্য বিরাজ করে । একজন কন্যা তার বাবার হৃদয়ে বাস করে এবং মায়ের সত্যিকারের বন্ধু হয়ে ওঠে । তারা প্রত্যেক বাবা – মায়ের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ । কন্যার জন্ম পিতা – মাতার জীবনকেও অনেকাংশে বদলে দেয় । বড় হয়ে সে তার পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় । বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি এবং বাবার বাড়ি উভয় তরফেই সমান দায়িত্ব পালন করে । ‘

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.