দ্বিতীয়দিন ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো হাজারো দর্শক-শ্রোতা!!
২ দেশের নির্বাচনি আবহে সবার চোখ হাসিনার সফরে!

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং ইউক্রেন সঙ্কট পরবর্তী আঞ্চলিক রাজনৈতিক নির্বাচনপূর্ব ইস্যু । দুই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি , কৌশল নিয়ে একান্তে আলোচনা করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী । এছাড়া দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পাশাপাশি ভারতের পক্ষ থেকে ট্রানজিট এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর জলবন্টন ইস্যু তুলে ধরা হবে । অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি , সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

এসব ব্যাপারে দুই দেশের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে অত্যন্ত অর্থবহ মতবিনিময় এবং অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়ার ব্যাপারটি এবারের সফরে মূল বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে । বিভিন্ন মহল শেখ হাসিনার ভারত সফর বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী পাঁচ থেকে আট সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত সফর করবেন । তার সঙ্গে যাবেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী , উপদেষ্টা , সচিব এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা । এ সফরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী থাকবেন । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ সেপ্টেম্বর দিল্লীর বাংলাদেশ দূতাবাসে ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন ।

ছয় সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন । তার আগে তিনি দিল্লীর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন শেখ হাসিনা । সাত সেপ্টেম্বর ইণ্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । একই দিন বিকেলে আজমীর শরিফে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির মাজার জিয়ারত করবেন তিনি । পরদিন আট সেপ্টেম্বর জয়পুর শহর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার ।

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে আগামী বছর ডিসেম্বর মাসে । আর ভারতে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে ২০২৪ সালের মে মাসে । এ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে এটাই হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেষ ভারত সফর । তার সফরের কিছুদিনের মধ্যে দুই দেশে নির্বাচনি বাতাস বইতে শুরু করবে । ফলে তখন আর শীর্ষ নেতাদের বড় মাপের দ্বিপাক্ষিক সফরের সময় বের করা যাবে না । এমন প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার এবারের সফর নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ । প্রকাশ্যে আলোচনা না হলে পরোক্ষে বলা হয় যে , বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় প্রভাব কাজ করে । এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারাও প্রায় বলে থাকেন ।

কূটনৈতিক মহলে এমন আলোচনা এখন শোনা যায় যে , এবারের শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশের নির্বাচনে মৌলবাদী প্রভাব কতটা কাজ করবে না করবে এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় শেখ হাসিনার থাকা কতটা প্রয়োজনীয় তা নিয়ে ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে অলিখিত আলোচনা হতে পারে । কারণ বাংলাদেশে মৌলবাদী সরকার ক্ষমতায় আসুক সেটা ভারত কখনওই চাইবে না । এটা ভারতের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী বলেই ভারতীয়রা মনে করেন । ফলে বাংলাদেশে মৌলবাদী সরকার না আসার ব্যাপারে ভারতের কিছু করার থাকলে তা ভারত করবে – এমন একটা মনোভাব ভারতের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন । এ সফরে সে কাজটি হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ।