২ বছর পর কলকাতা-ঢাকা বাস পরিসেবা শুরু, সময় লাগছে ৪ ঘন্টা কম
বাংলাদেশে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হওয়ার দুই দিনের মধ্যে কলকাতা থেকে ঢাকার বাস পরিষেবা ফের চালু হয়ে গেল। আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর চালু হল কলকাতা – ঢাকা ‘ সৌহার্দ্য ’ বাস পরিষেবা । পদ্মা নদীর উপর সাড়ে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু তৈরির ফলে এখন বাসে কলকাতা থেকে ঢাকা পৌঁছতে সময় লাগবে আগের চেয়ে ৪ ঘণ্টা কম । আগে লাগত প্রায় ১৪ ঘণ্টা । এখন লাগছে ১০ ঘণ্টা । ১৯৯৯ সালে প্রথম চালু হয়েছিল ‘ সৌহার্দ্য ’ পরিষেবা । তখন বাংলায় ছিল বাম আমল । পরিবহণমন্ত্রী ছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী ।
মূলত তার উদ্যোগেই দুই বাংলার রাজধানীর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল । মাঝখানে যাত্রীর অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায় । অনেক পরে , ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি , বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রীতিমতো ঢাক – ঢোল পিটিয়ে কলকাতা – ঢাকা বাস পরিষেবা শুরু হয়েছিল । ভালই চলছিল । প্রতিদিনই যাত্রীতে ভরা থাকত দুই পিঠের যাত্রা । কিন্তু ‘ ২০২০ সালের মার্চ থেকে বাদ সাধল করোনা । অতিমারির কারণেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য দুই বাংলার রাজধানীর মধ্যে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ।
গত ১০ জুন ঘোষণা করা হয় , পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরেই ফের চালু হবে এই পরিষেবা । গত সোমবার ১৫ জন যাত্রী নিয়ে শ্যামলী যাত্রী পরিবহণ সংস্থার ‘ সৌহার্দ্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসটি ঢাকা গিয়ে পৌঁছয় বাংলাদেশের সময় রাত ৯ টায় । শ্যামলীর কর্তা অবনী ঘোষ জানান , প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তাদের পৌঁছতে কিছুটা দেরি হওয়ার কারণ সীমান্তে যাত্রীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে বরণ করতে কিছুটা বাড়তি সময় চলে যায় । তবে মঙ্গলবার থেকে কলকাতা ছেড়ে ঠিক ১০ ঘণ্টায় তাদের বাস পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকায় ।
পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কলকাতা – ঢাকার মধ্যে ৪ টি ‘ সৌহার্দ্য ’ বাস চালাচ্ছে শ্যামলী পরিবহণ । পাশাপাশি তাদের আরও ৪ টি বাস চলছে ঢাকা থেকে আগরতলা । অবনীবাবু জানান , আগে কলকাতা থেকে ঢাকা পৌঁছনোর আগে খুলনায় পদ্মা নদীর তীরে দৌলতপুর ফেরিঘাট গিয়ে লঞ্চের মাথায় চাপিয়ে সৌহার্দ্যকে পদ্মা নদী পার করানো হতো । ফেরিতে থাকত অন্যান্য বাসের লম্বা লাইন । সব মিলিয়ে অনেকটা সময় পেরিয়ে যেত সেখানেই । কিন্তু এখন পদ্মার উপর সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ায় ফেরি পারাপারের প্রশ্ন তো নেই – ই , উল্টে ৯০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে গেছে । অবনীবাবু বলেন , ‘ যাত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্যাদি সম্পর্কে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়ার পরেই আমরা টিকিট দিচ্ছি । হয়তো সেই কারণে এখনও যাত্রী সংখ্যা আশানুরূপ নয় ।