৩৫ লক্ষ টাকার ঘোটালা দৌড়ঝাঁপ আরক্ষা দপ্তরে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিনা টেন্ডারে প্রায়
পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়া এবং কাজ সমাপ্তের আগেই ঠিকাদারের বিল জমা দেবার ঘটনায় রাজ্য পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক সহ জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের মধ্যে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।দুর্নীতির ঘটনা চাপা দিতে চলছে নানা চেষ্টা।খোয়াই-আগরতলা ২০৮ নং জাতীয় সড়ক অবরোধের কারণে নিয়মিত যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।জেলা আরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মাফিক মিয়াকে ডেকে আনা হয় খোয়াইতে।ঠিকাদারকে নিয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, সঙ্গে একাধিক ডিএসপিদের নিয়ে ঘটনার তদন্তে
নামেন।খোয়াই জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা এই দুর্নীতি কীভাবে চাপা দেওয়া যায় তা গতকাল রাত থেকে শুরু হয় যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
একদিকে, জেলাশাসকের নির্দেশমত তদন্তের কাজ করছেন গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের এসডিও মহেশ্বর দেববর্মা। আবার একই কাজের জন্য নতুন করে তদন্ত শুরু করেছেন মহকুমার পুলিশও। পুলিশের ভয়, যদি গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিক সত্য খবরটা জেলাশাসককে দিয়ে থাকেন তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে। তাই আরক্ষা দপ্তর নিজেই তদন্ত শুরু করে দেন। আরক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই দুর্নীতির বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া না গেলেও এই দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তারা আজ দিনভর সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের দেখেই লুকিয়ে পড়লেন। অভিযোগ উঠেছে,জেলা পুলিশসুপার কার্যালয়ের ইউডিসি ক্লার্ক দীপক দেববর্মা এবং অফিস সুপারিনটেনডেন্ট প্রদীপ দাস সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য আরক্ষা দপ্তর সঠিকভাবে অডিটের মাধ্যমে তদন্ত করালে এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রাঘব বোয়ালরা বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক পুলিশ আধিকারিক।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্বতন জেলা পুলিশ সুপার রমেশ কুমার যাদব নিজের ক্ষমতা বলে যে আঠারোটি কাজের টেন্ডার করেছেন সেই টেন্ডারের যে কমিটি সেই কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসাবে তিনিই ছিলেন।পূর্বতন জেলা পুলিশ সুপার খোয়াই থানার সাতটি টাইপ থ্রি কোয়ার্টার এবং টাইপ টু চারটি কোয়ার্টার এই টেন্ডারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। পুলিশের সরকারী কোয়ার্টার সংস্কারের নামে ঠিকাদার পুরোনো জিনিসে রং করে দিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ।থানার সরকারী কোয়ার্টার এবং পুলিশ ব্যারাক পরিদর্শন করে যে অভিযোগ পাওয়া যায় তাতে রাজ্য পুলিশের মুখে চুনকালি পড়ার মতো ঘটনা প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসে। থানার সরকারী কোয়ার্টারে থাকা পুলিশ কর্মীদের পরিবার পরিজনেরা অভিযোগ করেন রাজ্য সরকার পুলিশের সরকারী কোয়ার্টার সরকারের জন্য যে লক্ষ লক্ষ টাকা দিচ্ছে সে টাকা যাচ্ছে কোথায়? প্রত্যেকটি সরকারী কোয়ার্টারের অবস্থা খুবই খারাপ। সরকারী কোয়ার্টারগুলোর দরজা জানালা থেকে শুরু করে শৌচালয়, রান্নার ঘর ভেঙে ভেঙে পড়ছে। ছাদ থেকে খসে পড়ছে প্লাস্টার, সেই সঙ্গে প লাস্টার ভেঙে পড়ে এক শিশুও জখম হয়েছিল কিছুদিন আগে। সরকারী কোয়ার্টারে বসবাসকারী পুলিশ কর্মীদের আত্মীয় পরিজনেরা জানায়, তাদের পকেটের টাকা খরচা করে এই কোয়ার্টারগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। কোথাও জল নেই আবার কোথাও জলের পাইপ ভেঙে পড়ে আছে। সবচাইতে করুণ দশা শৌচালয়গুলোর। প্রশ্ন উঠছে পূর্বতন জেলা পুলিশ সুপার এই সরকারী কোয়ার্টারগুলোর দুরবস্থা দূরীকরণের জন্যই কী বিনা টেন্ডারে এই পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার কাজের বরাদ দিয়েছিলেন মাফিক মিয়াকে।