৩ বছর ধরে নিয়োগ নেই, রাজ্যের বহু স্কুলে শিক্ষক সংকট চরমে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের
স্কুলগুলিতে চরম শিক্ষক সংকট চললেও তিন বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ করছে না বিজেপি সরকার।অথচ কয়েক হাজার বেকার টেট উত্তীর্ণ হয়ে চাকরির জন্যে দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। ত্রিপুরা সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকায় টেট উত্তীর্ণ বেকাররা বার বার চেষ্টা করেও শিক্ষামন্ত্রীর দেখা পাচ্ছেন না। ফলে রাজ্যে বেকার বিক্ষোভ চরমে উঠেছে।এদিকে প্রায় তিন বছর সরকারী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ থাকায় শিক্ষক শিক্ষিকার সংকটে স্কুলগুলিতে পড়াশোনা লাটে উঠেছে।পাশাপাশি বহু টেট উত্তীর্ণ বেকার বয়স উত্তীর্ণ বেকারে পরিণত হচ্ছে।এতে তাদের চাকরির সুযোগ চিরতরে বন্ধ হচ্ছে।এই অভিযোগ এনে মঙ্গলবার
আবারও রাজ্য শিক্ষাদপ্তর ও টিআরবিটি রাজ্য দপ্তরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে বেকার যুবক যুবতীরা।তবে এদিন বেকার যুবক যুবতীদের বিক্ষোভের চাপে পড়ে টিআরবিটি কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিল,এখন আর নিয়োগে এনসিটিই এবং সুপ্রিম কোর্টের কোনও বাধা নেই।রাজ্য সরকার চাইলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, শুধুমাত্র এসটিজিটি পদে শিক্ষক শিক্ষিকা রাজ্য সরকার নিয়োগ করতে পারবে না।কারণ এসটিজিটি পদে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে।সুপ্রিম কোর্টে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হলে রাজ্যেও শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়োগ হবে না।অভিযোগ রাজ্য সরকার বর্তমানে এসটিজিটি পদে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগের মামলার অজুহাতে টেট ১,টেট ২ এবং এসটিপিজিটি পদে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করছে না।
টিআরবিটি সূত্রে খবর রাজ্যে ২০২২ সাল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ।যদিও এখন টেট ১ এবং টেট ২ পদে শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স অ্যাডুকেশনের কোনও বাধা নেই এবং সুপ্রিম কোর্টের মামলারও নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে।এনসিটিই এবং সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে বলেছে রাজ্যেও এখন থেকে টেট ১ শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় শুধুমাত্র ডিএলএড উত্তীর্ণরা বসতে পারবেন। এমনকি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শুধুমাত্র ডিএলএড উত্তীর্ণরা শিক্ষকতা করতে পারবেন।নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত টেট-১ পরীক্ষায় বি.এড উত্তীর্ণরা বসতে পারবেন না।
এমনকী স্নাতক ডিগ্রি সহ বিএড উত্তীর্ণরা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষকতাও করতে পারবেন না।যদিও এতকাল রাজ্যে ডিএলএড ডিগ্রি ছাড়া যাদের শুধুমাত্র বিএড ডিগ্রি রয়েছে তারাও টেট-১ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষকতার চাকরিও পান। এমনকি এই পুরানো নিয়মে, ২০২২ সালে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর জন্য ১৯৭টি পদে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য টেট-১ পরীক্ষা হয়। তবে এখন ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশনের নতুন নিয়মের জন্য টেট-১ পরীক্ষার মাধ্যমে বি.এড উত্তীর্ণদের শিক্ষক শিক্ষিকা পদে চাকরি প্রদান করা যাবে না।এই অজুহাতে টেট-১ শিক্ষক শিক্ষিকা পদে ১৯৭ জন এবং টেট-২ শিক্ষক শিক্ষিকা পদে ১৬৯ জনকে নিয়োগ করছে না রাজ্য সরকার। অথচ এনসিটিই বলে দিয়েছে ২০২২ সালে যেসব বেকার টেট ১ পরীক্ষায় বিএড ডিগ্রি নিয়ে পাস করছেন,তাদের বাদে বাকি সব ডিএলএড উত্তীর্ণদের সরকার চাকরি দিতে পারে। তবে রাজ্যে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে বেকার যুবক যুবতীদের অভিযোগ।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২২ সালে টিচার্স রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের এসটিজিটি পরীক্ষার মাধ্যমে ২৩০ জন স্নাতক শিক্ষক শিক্ষিকা পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।তবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া জেনারেল, এসটি, এসসি পদের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি সঠিক নয়- এই অভিযোগ এনে উচ্চ আদালতে মামলা হয়। এরপরই আদালতের নির্দেশে গ্রেজুয়েট (এসটিজিটি) টিচার পদে নিয়োগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।এখন এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।অভিযোগ,এই মামলার অজুহাতে বেকার দরদি সরকার টেট-১, টেট-২, এসটিজিটি এবং এসটিপিজিটি সব নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে।
শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, টিআরবিসি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র চাকরি পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ করতে পারে। তবে টিআরবিটি কর্তৃপক্ষের কোনও চাকরি প্রদানের ক্ষমতা নেই।এরমধ্যে দুবার রাজ্য সরকারের কাছে পাইলা পাঠানো হয়েছে। যাতে টেট ১ এবং টেট ২ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চাকরি প্রদান হয়।
এমনকী নতুন করে টেট ১, টেট ২ এবং এসটিপিজিটি পরীক্ষা নেওয়ারও অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।তবে প্রথমে লোকসভা নির্বাচন এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের অজুহাতে আবেদন খারিজ হয়ে যায়।রাজ্য সরকার এখন শুধুমাত এসটিজিটি পদে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা থাকায় শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করতে পারবেন না।