৪৮ঘন্টা সময় দিয়ে সুদীপকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিকাশ!!

 ৪৮ঘন্টা সময় দিয়ে সুদীপকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিকাশ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-
অবশেষে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগ খণ্ডন করলেন জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। শুধু অভিযোগ খণ্ডন করাই নয়,বিধায়ক শ্রী বর্মণকে আটচল্লিশ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা।বলেন, আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে সুদীপবাবুকে আমার বিরুদ্ধে তোলা সমস্ত অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে।নতুবা তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবো।এখানেই থেমে থাকেননি মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা,পাল্টা বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন,আপনি তো রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই করেন না। তারপরও আপনার এত সম্পত্তি হলো কী করে? আগরতলা কর্ণেল চৌমুহনী এলাকায় আপনার বিশাল সম্পত্তি (বাড়ি) কিছুদিন আগেও অবৈধ ছিল।সেটা এখন বৈধ হয়ে গেল কীভাবে?প্রশ্ন তোলেন বিকাশবাবু।উল্লেখ্য,সদ্য সমাপ্ত রাজ্য বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীর রায় বর্মণ রাজ্যের জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। জনজাতি কল্যাণে এডিবি’র দেওয়া ১৪০০ কোটি টাকার ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগের আঙুল তোলেন।দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার বিরুদ্ধেও। সুদীপবাবুর অভিযোগ, বিকাশবাবু মন্ত্রী হয়েছেন মাত্র দেড় বছর হয়েছে,এর মধ্যেই তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন।স্ত্রী, পুত্রের পেট্রোল পাম্প, দিল্লীতে ফ্ল্যাট, বড়মুড়ায় বিশাল সম্পত্তি,সরকারি অর্থে নিজের বাড়ির বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, আগরতলা অ্যাডভাইজার চৌমুহনীতে ডা. ইলা লোধের বাড়ি ক্রয় করা সহ আরও একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন। সুদীপবাবুর এই অভিযোগ নিয়ে বিধানসভাতেও গুঞ্জন তৈরি হয়।এমনকী রাজ্য রাজনীতিতেও এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।বিভিন্ন মহল থেকে মন্ত্রী বিকাশের বিরুদ্ধে সমালোচনায় ঝড় ওঠে।কয়েকদিন চুপচাপ থাকার পর শনিবার মহাকরণে নিজের চেম্বারে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ খোলেন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা।বিভিন্ন কাগজপত্র এবং তথ্য তুলে ধরে সুদীপ বর্মণের উত্থাপিত যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।তিনি বলেন, আমার বাবা, ঠাকুরদা জমিদার ছিলেন।ঠাকুরদার দুশো কানির উপর সম্পত্তি রয়েছে। আমার বাবা-মা দুজনই কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী ছিলেন।আমার পৈত্রিক সম্পত্তিও প্রচুর। পরিবারের অনেকেই সরকারী চাকরিজীবী। আমার শ্বশুর মশাইয়েরও প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।আমি নিজে রাজনীতিতে আসার আগে প্রায় ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ঠিকাদারি পেশায় যুক্ত ছিলাম।কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছি।আমার সমস্ত কাজের হিসাব ও তথ্য রয়েছে।চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেটের ব্যাল্যান্সশিট আছে।আমার জমিতে দুইটি মোবাইল টাওয়ার আছে। সেখান থেকে প্রতিমাসে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা ভাড়া পাই। আমি এবং আমার পরিবার ফকির নই।আমরা ভূমিপুত্র জমিদার।সুদীপবাবু যেসব অভিযোগ তুলেছেন সব অসত্য এবং ভিত্তিহীন। আমাকে এবং আমার পরিবারকে কালিমালিপ্ত করতেই তিনি চক্রান্ত করেছেন।তিনি বলেন, আমার স্ত্রী এবং পুত্রের নামে কোনও পেট্রোল পাম্প নেই। ডা. ইলা লোধের বাড়ি ক্রয়ের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অসত্য।এডিবির দেওয়া ১৪০০ কোটি টাকার যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন, সেটাও সম্পূর্ণ অসত্য। কেননা, এই প্রকল্পের সাথে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের কোন যোগাযোগ নেই। এডিবি’র পক্ষ থেকে শুক্রবার পৃথকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে যাবতীয় স্পষ্টীকরণ দিয়েছে। তবে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দিল্লীতে ফ্ল্যাট। ক্রয় করার কথা নিজেই স্বীকার করেছেন।কত টাকায় (২০লক্ষ) ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন, সেই টাকা কোথা থেকে কীভাবে এসেছে, তারও স্পষ্টীকরণ দিয়েছেন।বলেন, একটি সংস্থা এই আবাসন নির্মাণ করছে। সেই সংস্থার সাথে আমার চুক্তি হয়েছে। সরাকরি অর্থে বাড়ির বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, নিরাপত্তা রক্ষীদের থাকার জন্য এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্যই এটা করা হচ্ছে। কাগজপত্র সব জোগাড় করে সুদীপবাবুর অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে দেরি হয়েছে বলে জানান। এছাড়াও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বিকাশবাবু। একটা সময় তিনি কেঁদেই ফেলেন। বলেন, আমি জনজাতি বলেই কি সুদীপবাবু আমার বিরুদ্ধে এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন। জনজাতি বলে আমরা কি ব্যবসা করতে পারবো না? পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন বিকাশবাবু। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিকাশবাবু যেসব তথ্য এবং বক্তব্য তুলে ধরেছেন, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, পারিবারিক ক্ষেত্রে বিকাশবাবুরা প্রচুর সম্পত্তির মালিক।এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বিকাশবাবু যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তাতে কি তাঁর এই বিশাল সম্পত্তির উল্লেখ আছে?

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.