৫২ বছর পর মহাকাশ পোশাকে বদল নাসার!
আগামী বছর ফের চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশচারীদের নামানোর, পরিকল্পনা নিচ্ছে নাসা আর এই নতুন করে চন্দ্র অভিযানের আগে নতুন পোশাক সামনে এল। আগামী আর্টেমিস চন্দ্র অভিযানের জন্য চূড়ান্ত ব্যস্ততা এখন নাসায়।১৯৭২ সালে অ্যাপোলো চন্দ্র মিশনের মাধ্যমে চাঁদের বুকে প্রথম পা রেখেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং আর বাজ অলডুইন। তার প্রায় ৫২ বছর পর ফের চন্দ্রপৃষ্ঠে নামতে চলেছেন দুই মহাকাশচারী। ইতিমধ্যেই ১৪ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিককে নিয়ে প্রশিক্ষণ পর্ব চলছে নাসায়।আর্টেমিস প্রকল্পের সঙ্গে নাসা নতুন প্রযুক্তি, ক্ষমতা ব্যবসায়িক পদ্ধতিগুলি প্রদর্শন করতে চায় যা শেষ পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহের অভিযানের জন্য প্রয়োজন হবে।এই প্রকল্পটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথনটি সম্ভবত আগামী বছর চন্দ্রাভিযানের মাধ্যমে শুরু হবে। আর্টেমিস দ্বিতীয়টি প্রথম ক্রু বিমানের পরীক্ষা।এই বিশেষ বিমানে করে চার জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নভোশ্চর যাবেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে।আর আপাতত ঘোষিত আর্টেমিসের শেষ তথা তৃতীয় প্রকল্পটি হল মঙ্গল অভিযান।যেটির নাম রাখা হয়েছে ‘মার্স ইন আই’।আপাতত প্রথম প্রকল্পটি নিয়ে নাসায় চলছে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। ৫২ বছর পর চন্দ্র অভিযানের এই পর্যায়ে চাঁদে গিয়ে বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহ করাই হবে প্রধান কাজ। যেমন এক্সপ্লোরেশন গ্রাউন্ড সিস্টেমগুলি, স্পেস লঞ্চ সিস্টেম বা এসএলএস, ওরিওন বা চন্দ্র মিশনের জন্য মহাকাশযান, গেটওয়ে বা চাঁদের চারপাশে পরিবেশের বিশ্লেষণ,ল্যান্ডারগুলিকে অবতরণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা এবং আর্টেমিস জেনারেশন স্পেসসুট তৈরির কাজ। গত বছর নভেম্বর মাসে এসএলএস নামের নাসার নতুন রকেটটি যাবতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছে।ওই রকেটে করে পৃথিবী থেকে ‘ওরিয়ন’ নামের মহাকাশযানটি মহাকাশচারীদের নিয়ে উড়ে যাবে।একবার মহাকাশচারীরা ওরিয়নে পৌঁছে গেলে সেখান থেকেই তারা চাঁদের চারপাশে কাজ করতে সক্ষম হবেন এবং মহাকাশযান থেকে চাঁদের চুল যা পৃষ্ঠে অভিযান করবে।অভিযানের একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবথেকে বেশি প্রয়োজন মহাকাশচারীদের পোশাক। সহজ উপায় বলতে গেলে স্পেসস্যুট।আর তার জন্যই বিশেষ স্পেসস্যুট বা মহাকাশ অভিযানের উপযুক্ত পোশাক প্রস্তুত করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা।সাংবাদিক সম্মেলন করে তা প্রকাশ্যে নাসার প্রধান জিম ব্রিডেনস্টাইন।’ওরিয়ন ক্রু সারভাইভ্যাল স্যুটটি র দেখে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে মহাকাশ গবেষক মহলে।কী রয়েছে নতুন এই স্পেসস্যুটে?এটি দেখতে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ব্যবহৃত পোশাকের মতো। নাসার অবশ্য দাবি, এটি আরও আরামদায়ক এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে পদচারণার জন্য এক্কেবারে উপযুক্ত।হেলমেট সহ ১০০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহের থাকছে স্যুটটিতে।হেলমেটে থাকছে ভয়েস অ্যাকটিভেটেড মাইক্রোফোন।একটি ফোম ব্লক, যাতে নাক চুলকোতে পারবেন মহাকাশচারীরা। – ২৫০ ডিগ্রি থেকে ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাতেও কর্মক্ষম থাকবে পোশাকটি।এটি এমন একটি উপাদান দিয়ে তবেই তৈরি, যাতে ধুলোবালিও লাগবে এবার না। মহাকাশচারী ছেলে হোক বা মেয়ে, তার চেহারা যেমনই হোক, এই তৃতীয় পোশাকটি পরতে অসুবিধা হবে না।এভাবেই সেটি তৈরি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সামনেই মহিলা মহাকাশচারী অ্যান ম্যাককেইন এবং মহাকাশযানের ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস্টিন ডেভিস নতুন এক্সইএমইউ স্যুটটি পরে দেখিয়েও দিলেন।স্পেসস্যুটটিতে হেলমেট সহ তিনটি ভাগ রয়েছে। কোমর থেকে পা পর্যন্ত অংশটিকে চন্দ্রপৃষ্ঠে সহজে চলাফেরার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এই অংশটি অনেকটাই হাল্কা। আর এই স্পেসস্যুট গায়ে চাপানোও যায় সহজেই। যা আগের স্যুটগুলিতে করা সম্ভব ছিল না।