৬ মাসে রাজ্যে খুন ৪৭ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার জমানায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।এই নিয়ে বিরোধী দলগুলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিদিনই অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। ধর্মনগর থেকে সাব্রুম,গোটা রাজ্যে চাঁদার জুলুম, তোলাবাজি, ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।সারা রাজ্যে নিগো ও জমি মাফিয়ারা সমান্তরাল প্রশাসন কায়েম করে নিয়েছে।রাজ্যে মাদকের রমরমা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে,যুবসমাজ আজ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে।গোটা রাজ্য এখন মানব পাচারের অন্যতম প্রধান করিডর হয়ে উঠেছে। খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, নারী নির্যাতন, চুরি এবং নানা ধরনের অপরাধকাণ্ড একের পর এক ঘটেই চলেছে।সেই সাথে সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা জনগণকে গভীর উদ্বেগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।আর এই উদ্বেগের অন্যতম কারণ হচ্ছে অপরাধের পরিসংখ্যান।
স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে খবর, চলতি বছরের গত মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ছয়মাসে রাজ্যে খুন হয়েছে ৪৭ জন। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে প্রায় আটটি করে খুনের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় চুরির মামলা নথিভুক্ত হয়েছে ছয় মাসে ১১০টি, অপহরণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে ৬৫টি। ডাকাতি নথিভুক্ত হয়েছে ৩টি সিঁধ চুরি নথিভুক্ত হয়েছে ৪৪টি সংঘর্ষ (হিংসা)-এর ঘটনা লিপিবদ্ধ হয়েছে ১২টি। নারী নির্যাতন, শিশু এবং অন্যান্য মহিলা সংক্রান্ত অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছে ১২৯৩টি।এই ছয় মাসে ভারতীয় ন্যায় সংহিতাভক্ত
মামলা হয়েছে ১৫৬৫টি। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ২৬০টি মামলা হয়েছে। এছাড়াও গত ছয় মাসে আরও বহু ঘটনা ঘটেছে যেগুলো থানা এবং আদালত পর্যন্ত যায়নি।অভিযোগ নথিভুক্ত করার আগেই মাঝপথে নানাভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।বহু ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে মীমাংসার জন্য মিডলম্যান হিসেবে কাজ করছে।এই ক্ষেত্রে একেবারে সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ তুলে ধরা যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকায় বটতলা ব্রিজ সংলগ্ন ‘আপনজন’ নামে একটি ক্লাব পার্শ্ববর্তী নাগেরজলাস্থিত একটি বহুতলের আবাসিকদের পঁচিশ হাজার করে মোট দশ লক্ষ টাকা পুজোর চাঁদা ধার্য করে হুমকি দিয়েছে।এই ঘটনায় আবাসিকরা এডি নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে,বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।এই নিয়ে মীমাংসা বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু বুধবার সর্বশেষ খবর নিয়ে জানা গেছে, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি।প্রস্তাব ও আলোচনা ভেস্তে গেছে।
সাম্প্রতিক কালে গণ্ডাছড়ায় ঘটে যাওয়া ভয়ানক হিংসার ঘটনায় মানুষ এখনও আতঙ্কগ্রস্ত।সর্বস্ব হারানো মানুষগুলো আজও অসহয়ায় জীবনযাপন করছেন।প্রশাসন আজও তাদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি।গণ্ডাছড়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে জিরানীয়া মহকমার রাণীরবাজার কৈতরাইবাড়িতে হিংসার ঘটনা ঘটে।এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।সবমিলিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এমনটাই অভিযোগ বিরোধী দল থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলের।অথচ,মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি উদয়পুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে দাবি করেছেন,রাজ্যে অপরাধ হ্রাস পেয়েছে।কিন্তু অপরাধের পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা।