Categories: দেশ

৭টি সমঝোতা পত্র স্বাক্ষরিত

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বদলে যাওয়া কূটনৈতিক সমীকরণেও দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কোনওদিন সম্পর্ক তিক্ত হয়নি । আগামীদিনেও হবে না । বরং এই সৌহার্দ্য এবং দ্বিপাক্ষিক মৈত্রী যাতে আরও বৃদ্ধি পায় সেই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত করা হচ্ছে । তারই উদাহরণ হিসেবে নতুন করে সাতটি সমঝোতাপত্রের স্বাক্ষর । ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়ের বৈঠকের পর আজ বারংবার এই সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মুখেই উঠে এলো যথারীতি ১৯৭১ প্রসঙ্গ । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল , সেটা বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না বলে আজ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলেছেন , ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তি যেন হয় ১৯৭১ সালের আত্মিক সম্পর্কের ইতিহাস । সুতরাং কোনও কোনও শক্তি যদি এই দুই দেশের মধ্যে কোনও ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে কিংবা বিভাজনের প্রয়াস ঘটায় সেটা আমাদের উভয় পক্ষকেই সতর্কভাবে প্রতিহত করতে হবে ।

সন্ত্রাস ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে । মোদির এই ভাষ্যে যে তার পরোক্ষ অঙ্গুলিহেলন চিন পাকিস্তানের দিকেই , সেটা স্পষ্ট । চিন সম্প্ৰতি বাংলাদেশে নিজেদের সক্রিয়তা বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে । এদিকে , আজ শেখ হাসিনা তিস্তা জলবন্টন চুক্তি নিয়ে বস্তুত ভারতকে পরোক্ষে চাপ দিয়েছেন । এবার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং আলোচনার ইস্যু যা ছিল , সেই তালিকায় তিস্তা ছিল না । তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সে বিষয়টি উত্থাপন করেননি তার বিবৃতিতে । কিন্তু দুপুরে হায়দ্রাবাদ হাউসে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের ঠিক পর হাসিনা নিজেই বলেন , আশা করি দ্রুত তিস্তা চুক্তিও সম্পাদন করা যাবে । হাসিনা প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রশংসা করে বলেন , মোদিজি যখন প্রধানমন্ত্রী আছেন , তখন দুই দেশের যাবতীয় সমস্যাগুলির সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস । এদিন দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সবথেকে বেশি আলোচ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিভিন্ন নয়া ব্যবস্থা কার্যকর করা । এই তালিকায় রাস্তা , রেল , নদীপথ এবং বিমান পরিবহণ অন্যতম ।

ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশ একটি নতুন রেলপথ কলকাতা পর্যন্ত সম্প্রসারিত রুট হিসেবে চালু করা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে । একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া হবে । প্রধানমন্ত্রী মোদি শেখ হাসিনাকে বলেছেন , আমাদের কাছে সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হলো বাংলাদেশের পণ্যের সবথেকে বড় মার্কেট ভারতই । এই আর্থিক আদানপ্রদানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে । আজ দুই দেশের শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা । সংবাদ প্রতিনিধি , ঢাকার সংযোজন : প্রতিবেশীদের মধ্যে কূটনীতির ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ককে ‘ রোল মডেল ’ আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন , ‘ আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে গতি সঞ্চার করার ক্ষেত্রে মোদিজির দূরদর্শী নেতৃত্বকে সাধুবাদ জানাই । বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সবচেয়ে নিকট প্রতিবেশী ভারত । ‘ প্রধানমন্ত্রী মোদি ও আমি আরেক দফায় ফলপ্রসূ আলোচনা শেষ করছি , যার ফল দুদেশের জনগণের উপকার বয়ে আনবে । নিবিড় বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার উদ্দীপনা নিয়ে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

দ্রুত সময়ের মধ্যে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন , ‘ আমরা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে অনেক অনিষ্পন্ন সমস্যার সমাধান ইতিমধ্যে করেছি । আমি আশা করি , তিস্তা জল বন্টন চুক্তি সহ অন্যান্য অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো শিগগির সম্পন্ন করতে পারবো । ‘ ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম বছর পূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী আয়োজিত ‘ আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’র সফল সমাপ্তির জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা । দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠককে আরেকটি ‘ ফলপ্রসূ আলোচনা ’ হিসেবে বর্ণনা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন , এই বৈঠকের ফল দুই দেশের জনগণকেই উপকৃত করবে । এদিকে , চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । দুই প্রধানমন্ত্রী করমর্দন করেন । পরে শেখ হাসিনাকে ‘ গার্ড অব অনার ‘ লালগালিচা সম্মাননা দেওয়া হয় ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের বলেন , ‘ ভারত আমাদের বন্ধু । আমি যখনই ভারতে আসি , এটা আমার জন্য আনন্দের । বিশেষ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করি । আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে , আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি । ‘ দিনের অন্য কর্মসূচি অনুযায়ী , রাষ্ট্রপতি ভবনের আনুষ্ঠানিকতার পর শেখ হাসিনা রাজঘাট গান্ধী সমাধিস্থলে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান । এছাড়াও শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন । ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন । সোমবার চারদিনের সফরে দিল্লী পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

23 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

24 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago