৭ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী খার্চি উৎসব ও মেলা শুরু!!

 ৭ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী খার্চি উৎসব ও মেলা শুরু!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-হাওড়ার পুণ্যস্নানঘাটে চতুর্দশ দেবতাকে অবগাহনের মধ্য দিয়ে রবিবার থেকে শুরু হবে রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী সপ্তাহব্যাপী খার্চি পুজো। ২৬৫ বছরে পা দিল এবার খার্চি পুজো।আনুষ্ঠানিকভাবে সকাল সাড়ে এগারোটায় মেলা ও প্রদর্শনীর সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন খাদ্য, পরিবহণ ও পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক তথা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বিধায়িকা স্বপ্না দেববর্মা, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ শীল, সমাজসেবী অমিত নন্দী সহ অন্যরা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক রতন চক্রবর্তী।সপ্তাহব্যাপী এই খার্চি পুজো ও উৎসবের প্রাক সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনারের মধ্য দিয়ে অধিবাস যাত্রা শুরু করেন প্রধান পুরোহিত চন্তাই।এদিন হাওড়ার পুণ্যস্নানঘাটে
দেবতাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
উলুধ্বনি,শঙ্খধ্বনি,ধূপ, মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রচুর পুণ্যার্থী মঙ্গল কামনায় দেবদেবী দর্শন করেন। সন্ধ্যায় পুণ্যার্থীদের জনঢল নামে পুরাতন আগরতলায়। ঢাকঢোল বাজনার মধ্যে মানুষের ভিড়ে উৎসবের রূপ নেয় এলাকা।ত্রিপুরার রাজাদের কুলদেবতা হিসেবে পরিচিত চতুর্দশ দেবতা।এই চতুর্দশ দেবতা পুজো রাজ্যের জাতি জনজাতিদের কাছে শুধু পুজোই নয়,এক উৎসব। সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব চললেও কার্যত একাকার হয়ে দশদিনের রূপ নেয়।১৭৬০ সালে খয়েরপুর পুরাতন আগরতলায় চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে শুরু হয়েছিল খার্চি পুজো।এবার ২৬৫ বছরে পা দিল খার্চি পুজো।১৯৮৪ সালের পনেরো অক্টোবর থেকে সরকারীভাবে খার্চি পুজো ও মেলার দায়িত্ব নেওয়া হয়।প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লাষ্টমীর ভোরে পুরাতন হাবেলির চতুর্দশ দেবতা বাড়িতে শুরু হয় খার্চি পুজো।রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অগণিত পুণ্যার্থী মেলায় আসেন।প্রতিদিন মঙ্গল কামনায় পুণ্যার্থীরা পুজো দেন মন্দিরে।চতুর্দশ দেবতার কোনও পূর্ণাবয়ব মূর্তি নেই।একমাত্র দেবতা যার মুখমণ্ডলের প্রতিকৃতি দিয়ে পূজার্চনা হয়।যা হিন্দু ধর্মীয় আচার ও রীতি প্রকৃতির মধ্যে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী বিষয়।দেবতাদের মধ্যে হর উমা হরি- এই তিন দেবদেবীর মুখমণ্ডলের প্রতিকৃতি নিত্য পূজিত হয়। কিন্তু প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লাষ্টমীতে একত্রে পূজিত হন চতুর্দশ দেবতা। খার্চি পুজোর প্রধান পুরোহিত চন্তাই।তার নাম দুর্গামানিক দেববর্মা।মূলত পুরোহিত চন্তাইয়ের হাত ধরেই খার্চি পুজোর সূচনা হয়।মহারাজ কৃষ্ণমাণিক্যের সময়ে ১৭৬১-১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দের এক সময় পাথরের মস্তকের পরিবর্তে ধাতুর তৈরি চৌদ্দটি মস্তক নির্মাণ করে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।খার্চি পুজো ও মেলাকে ঘিরে শনিবার সন্ধ্যায় পুণ্যার্থীর সমাগম হয়।প্রচুর পুণ্যার্থী এদিন ভিড় জমায় মন্দির এলাকায়।ইতিমধ্যে মেলার নিরাপত্তাব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য এলাকায় মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ টিএসআর।মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক রতন চক্রবর্তী জানান, এবার মেলার থিম ‘সবুজেই ভবিষ্যৎ’।সবুজায়নের কথা মাথায় রেখে এবার মেলায় ১৫ হাজার গাছের চারা পুণ্যার্থীদের মধ্যে বিলি করা হবে।ইতিমধ্যে একাংশ ব্যবসায়ী তাদের পসরা সাজিয়ে বসে গেছেন। আলোকমালায় সাজিয়ে তোলা হয় গোটা এলাকাকে। মেলার কদিন জাতীয় সড়কের বিজয় সংঘ থেকে দলুরা পর্যন্ত কোনও ধরনের গাড়ি পার্কিং করা যাবে না বলে ইতিমধ্যে মাইকিং করা হয়।জানা গেছে, পরিবহণমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর প্রয়াসে মেলায় পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.