৭ বছর আগের মেমো কার্যকর স্কুলে ই-অ্যাটেন্ডেন্স চালু হলো!!

 ৭ বছর আগের মেমো কার্যকর স্কুলে ই-অ্যাটেন্ডেন্স চালু হলো!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের ই-অ্যাটেন্ডেন্স চালুর জন্য এক মেমোরেন্ডাম প্রকাশ করেছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। মেমো ভাইড নং এফ ২(২৩)-এসই-ই(এনজি)/২০১৭. তাং ২ মার্চ ২০১৭ মূলে রাজ্যের প্রতিটি জেলা শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করেছেন রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত শিক্ষাসচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা। যে নির্দেশনামায় উল্লেখিত বিষয়টিকে ১৫ জুলাই ২০২৪ থেকে রাজ্যের প্রতিটি স্কুলকে মান্যতা দিতে হবে। সেখানে বলা হয়েছে, সকালে চালু স্কুলগুলিতে ছয়টা বেজে ত্রিশ মিনিটের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে প্রবেশ করবে এবং অ্যাটেন্ডেন্স দেখাতে হবে। তেমনি দুপুরের স্কুলগুলিতে দশটা বেজে পয়তাল্লিশ এবং একক স্কুল হিসেবে যেগুলি রয়েছে সেগুলিতে সাতটা পয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে শিক্ষকদের অ্যাটেন্ডন্স দিতে হবে। প্রকাশ যে, বিদ্যা সমীক্ষা কেন্দ্রের এই নির্দেশনামাটি ২০১৭ সালে প্রকাশ করার কথা থাকলেও সেটা চালু করা হচ্ছে ১৫ জুলাই ২০২৪ থেকে। ভালো উদ্যোগ রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের। এটা হলফ করেই বলা যায়। রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনগুলিকে বাঁচাতে শিক্ষকদের নিকট সময় জ্ঞান তুলে ধরতে এবং ছাত্রছাত্রীদের সময়ের মধ্যে স্কুলে আনার এই নির্দেশ সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলতেই হয়। যা রাজ্যের সরকারের পরিচালনায় স্কুল এবং র স্বশাসিত জেলা পরিষদের স্কুলগুলিতে প্রযোজ্য হবে। এই নির্দেশনামাটি রাজ্যের প্রতিটি জায়গায় মান্যতা পাওয়া বড়ই কষ্টের হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্তের স্কুলগুলিতে সেটা মানা অত্যন্ত দুষ্কর বলেই মনে হচ্ছে। বিশেষ করে ধলাই জেলার প্রত্যন্তের স্কুলগুলিতে এই মেমোকে মান্যতা দেওয়া হাস্যস্পদ বিষয় বলে বিবেচিত ইচ্ছে।
বাবু কুমারধন লংতরাইয়ের টাওয়ার মালদাপাড়া সহ এমন সব এলাকায় ই-অ্যাটেন্ডেন্স মান্যতা পাবে মহীন তো? কারণ এখনও সেই জায়গাগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। মেমোর নির্দেশ মতো একক স্কুলে (সিঙ্গল) সকালে সাতটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে শিক্ষকদের যেতে হবে। স্কুল চালু করতে হবে। এদিকে, আমবাসা থেকে সকাল ছয়টায় মালদাপাড়ার উদ্দেশে শিক্ষকরা রওয়ানা দিলে পৌঁছবে কম ক করে সকাল আটটায়। যেখানে নানা প্রতিকূল পরিবেশ বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে অবশ্যই মান্যতা পাবে না অতিরিক্ত শিক্ষাসচিবের স্বাক্ষরিত নির্দেশনামাটি। মালদা রোহিদা লংতরাই বাবু কুমারধনই নয়। রাজ্যের আটটি জেলাতেই এমন এক জেও বহু বহু স্কুল রয়েছে প্রত্যন্তের গ্রামগুলিতে যেখানে এই নির্দেশনামা তথা মেমোটি অর্থহীন বলে বিবেচিত হবে। আবার এই মেমোকে মান্যতা দেবে তো শহরাঞ্চলের স্কুলগুলিতে কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকারা? প্রতিদিন আগরতলা থেকে যারা ট্রেন ধরে আসা-যাওয়া করেন তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রযোজ্য হবে তো? আগরতলা থেকে ধলাই জেলার আমবাসা মনু এলাকার বহু স্কুলে শিক্ষকদের একটা অংশ নিত্যদিন আসা-যাওয়া করেন। মেমোরেন্ডামে উল্লেখিত সময়ের বহু পর যাত্রীট্রেন আমবাসা এবং মনুতে পৌঁছে। প্রথমত, বর্তমানে এই একটি মাত্র উদাহরণ দেওয়া হল। যা থেকে পরিষ্কার শিক্ষা দপ্তরের এই নির্দেশ কতটা কার্যকরী হতে পারে। যেমন ধলাই জেলা সদরের আশপাশের স্কুলগুলিতে শিক্ষকতার কাজে যুক্তরা যারা তেলিয়ামুড়া, আগরতলা, উদয়পুর বা ধর্মনগর, কুমারঘাট থেকে আসছেন তাদের আগমনের সময়টা সকাল সাড়ে আটটার আশপাশের সময়।
সেক্ষেত্রে সশরীরে প্রশ্ন আসে কি? বাধ্য হয়ে সেই প্রতিদিনকার যাত্রী শিক্ষকরা ট্রেনে বসেই অ্যাটেন্ডেন্স দেখাবে। এমনকী বাড়িতে বসেও অভ্যস্ত অনেকেই। সেক্ষেত্রে কতটা মান্যতা দেওয়া হবে এই মারেন্ডামকে?এই প্রশ্নটা লোকাল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। যেখানে আমবাসার লালছড়িস্থিত বিদ্যাজ্যোতি মডেল স্কুলটি শুরুর সময় উল্লেখ করা হয়েছে সকাল আটটা বেজে চল্লিশ মিনিটে।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত সচিবের স্বাক্ষরিত নির্দেশনামা সেখানে কার্যকর হবে তো? এই একমাত্র স্কুলের নানা বিষয়ে বারবার সংবাদ হওয়ার পরও শিক্ষা দপ্তরের কার্যকর্তাদের নেই কোনও
হেলদোল। স্কুলের পরিচালনায় থাকা অধ্যক্ষের বেহিসাবি চালচলন, মিড-ডে মিল অর্থনৈতিক বিষয়ে নানা গরমিল, পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসককে এড়িয়ে চলা, জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিদ্যালয় শিক্ষা আধিকারিকদের নির্দেশকে অবজ্ঞা করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে বারবার সংবাদ হলেও শোধরানোর কোনও ছবি ফুটে উঠছে না স্কুলে। দিনের পর দিন স্কুলে অনুপস্থিত থেকে সেই স্কুলকে সঠিক পথে আসতে বা আনতে কতটা কী
করছেন অধ্যক্ষা?যেখানে শহরের এমন একটি স্কুলের এই অবস্থা, সেখানে প্রত্যন্তের স্কুলগুলিতে কতটা মানা হতে পারে নির্দেশনামাটি। বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবতে হবে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের কার্যকর্তাদের। এখনও এ বিষয়টা নিয়ে সঠিক ভাবনাচিন্তা করার সময় রয়েছে। ফাঁকিবাজ শিক্ষকদের বাগে আনতে যে ভূমিকা নিচ্ছে শিক্ষা দপ্তর সেটাকে হয়তো আরও ঝাড়াই বাছাই করা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন শিক্ষিত এবং বুদ্ধিজীবী অংশের লোকেরা। এখন দেখার বিষয় যে, রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের এই নির্দেশনামা কতটা গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকর করেন সমাজের মেরুদণ্ড হিসেবে থাকা শিক্ষকমণ্ডলী।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.