৭ হাজার হেক্টর জমিতে হবে পাম অয়েল চাষ : কৃষিমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ন্যাশনাল মিশন অন এডিবেল অয়েল – অয়েল পাম প্রকল্পে ত্রিপুরায় ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে কমপক্ষে সাত হাজার হেক্টর জমি পাম অয়েল চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।আজ সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতনলাল নাথ এই সংবাদ জানান।তিনি জানান,রাজ্যের কৃষকদের আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের আয় আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার পাম অয়েল চাষে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে।ভারতে পাম অয়েল সম্ভাবনাময় একটি নতুন ফসল।ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, থাইল্যাণ্ড এবং কম্বোডিয়ায় বিশ্বের নব্বই শতাংশেরও বেশি পাম অয়েলের উৎপাদন হয়।কৃষিমন্ত্রী জানান,ভারত ২০২০-২১ সালে প্রায় ১৩৩.৫২ লক্ষ মেট্রিকটন ভোজ্য তেল আমদানি
করেছে যার মূল্য প্রায় আশি হাজার কোটি টাকা।সমস্ত আমদানিকৃত ভোজ্য তেলের মধ্যে পাম অয়েলের অংশ প্রায় ছাপ্পান্ন শতাংশ।অর্থাৎ পঁচাত্তর লক্ষ মেট্রিকটন। ভোজ্য তেলে আত্মনির্ভরতার পাশাপাশি আমদানি কমাতে ভারত সরকার পাম অয়েল চাষে গুরুত্ব দিয়েছে।ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে পাম অয়েল চাষ হচ্ছে ৩৮,৯৯২ হেক্টরে।ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জয়বায়ু, বৃষ্টিপাত,মাটি ইত্যাদি পাম অয়েল চাষের জন্য অনুকূল। কৃষিমন্ত্রী জানান,২০২০ সালে আইসিএআর-আইআইওপিআর পুন:মূল্যায়নের কমিটি ডিজিটাল ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে রাজ্যে পাম অয়েলের চাষযোগ্য এলাকা সম্প্রসারণের জন্য ১,৪৬,৩৬৪ হেক্টর জমি চিহ্নিত করেছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী জানান, ন্যাশনাল মিশন অন এডিবেল অয়েল পাম অয়েল প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্যের কৃষি দপ্তরের সাথে দেশের দুটি কৃষি উৎপাদক সংস্থা যথাক্রমে গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেড এবং পতঞ্জলি ফুড প্রাইভেট লিমিটেড মৌ স্বাক্ষর করেছে।ইতিমধ্যেই গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেড ধলাই জেলার নালকাটাতে সরকারী বাগানে ৬.৫ হেক্টর এলাকায় একটি নার্সারি স্থাপন করেছে যেখানে বিদেশি জাতের ১,৫০,০০০টি এবং ৬০০০টি দেশীয় পাম অয়েলের চারা উৎপাদন করেছে।গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেড এ বছর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আনা পাম অয়েলের চারা ব্যবহার করে কৃষকদের মাধ্যমে রাজ্যে ৫২.০১ হেক্টর জমিতে পাম অয়েলের চারা রোপণ করেছে।পতঞ্জলি ফুড প্রাইভেট লিমিটেডও এ বছর মোট ৪.৩১ হেক্টর জমিতে পাম অয়েলের চারা রোপণ করেছে।রাজ্যে মোট ৫৬.৩৫ হেক্টর পাম অয়েল চাষের এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।তিনি জানান,রাজ্যে কৃষি বিভাগের আঠারোজন অফিসারকে ইতিমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে পাম অয়েলের উপর প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে।এছাড়া এখন পর্যন্ত রাজ্যের ২,১২৩ জন কৃষককে পাম অয়েল চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।১,০৭৬ জন কৃষক ইতিমধ্যেই পাম অয়েল চাষের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি জানান,২০২১ সালের নভেম্বরে ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় স্পনসর্ড স্কিম ন্যাশনাল মিশন অন এডিবেল অয়েল অয়েল পাম প্রকল্পটি চালু করা হয়।এই প্রকল্পে পাম অয়েল চাষিদের জন্য বিভিন্ন সহায়তাগুলি নিয়েও তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি আরো জানান ভারত সরকার পয়লা নভেম্বর ২০২১ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০৩৭ সাল পর্যন্ত পাম অয়েল চাষীদের জন্য তাজা ফলের গুচ্ছের মূল্যের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এ বছর নিশ্চিত মূল্য প্রতি কেজিতে ১৩.৩৪ টাকা।চার বছর পর থেকে পাম অয়েল থেকে উৎপাদন শুরু হয় এবং আট বছর পর থেকে উৎপাদনের নিরিখে প্রতি হেক্টরে বছরে তিন লক্ষ টাকা আয়ের সুযোগ রয়েছে। পাম অয়েল গাছের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ত্রিশ বছর। সাংবাদিক সম্মেলনে উদ্যান পালন দপ্তরের অধিকর্তা ফণীভূষণ জমাতিয়া জানান,উদ্যান পালন দপ্তর থেকে কৃষকদের সুবিধার্থে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করার প্রক্রিয়া চলছে। আগ্রহী কৃষকরা এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তাদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবে।