বিমানে টিকিট সঙ্কট আটক বহু যাত্রী
আসামে প্রবল বর্ষণে ভূমিধসে ত্রিপুরার সঙ্গে বহিঃরাজ্যের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ও সড়কপথে বিপর্যয়ের কারণে বিমানে প্রচন্ড ভিড় দেখা দিয়েছে। আগরতলা-গুয়াহাটি রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে বিমানের টিকিটের প্রচন্ড সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সেসঙ্গে টিকিট যদি পাওয়াও যায়, ভাড়া একেবারে দুর্মূল্য, আকাশছোঁয়া। আগরতলা থেকে কলকাতা যেতেও যাত্রীভিড়ে টিকিটের আকাল চলছে। পাশাপাশি ভাড়াও একেবারে যাত্রীর নাগালের বাইরে চলে গেছে। তাতে বহু যাত্রী আটকে পড়েছেন। সঙ্কট মোকাবিলায় ও আটক যাত্রীরা যাতে সহজেই যাতায়াতে ও নাগালের মধ্যে বিমান ভাড়া এনে সুযোগ করে দিতে দ্রুত অতিরিক্ত বিমান দেওয়ার দাবি উঠলেও অতিরিক্ত বিমানের দেখা নেই। বিমান টিকিট সঙ্কট ও যাত্রীভিড় কমাতে অতিরিক্ত বিমান দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও শনিবার রাতে পরিবহণ দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এল এইচ ডার্লং জানিয়েছেন, এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিব কুমার অলক দিল্লীতে অতিরিক্ত বিমান চেয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে টেলিফোনে অতিরিক্ত বিমান চেয়ে অনুরোধ জানিয়ে কথা বলেছেন।
ইন্ডিগোর সিওর কাছে অতিরিক্ত বিমান চেয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যসচিব। কিন্তু তারপরও দ্রুত আগরতলা-কোলকাতা ও আগরতলা-গুয়াহাটি রুটের উভয়দিকে যাতায়াতে অতিরিক্ত বিমান দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল নিশ্চিত নয়। জরুরি কাজে, উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার জন্য, চাকরি প্রার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য, ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বহিঃরাজ্যে আগরতলা থেকে বিমানে যেতে পারছেন না। ট্রেন বন্ধ, সড়কপথে অপ্রতুলতা- এসব কারণে বহিঃরাজ্যে যেতে বিমান টিকিটের আকালে যাত্রীদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিমান টিকিটের মূল্যও সমানতালে পাল্লা দিয়ে দুর্মূল্য হয়ে গেছে। রাজ্যের অসহায় যাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া এয়ারলাইন্সগুলি নিলেও রাজ্যসরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে রহস্যজনকভাবে নির্বিকার। তাতে যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছে। এদিকে আগরতলা ভায়া ঢাকা-কলকাতা সড়কপথে বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাতায়াতে বাস সার্ভিস এখনও চালু হয়নি। গত ২৮ এপ্রিল বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েও বাংলাদেশের অনুমতি পাওয়া যায়নি বলে বাস সার্ভিস সেদিন চালু হয়নি। তারপর অনেকদিন চলে গেলেও বাস সার্ভিস চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর। দ্রুত এদিকে বাস সার্ভিস চালু হলে বাসেও এই পথে কলকাতায় রাজ্যের যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু কবে বাস সার্ভিস চালু হবে তা নিশ্চিত করে রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকগণও কিছু বলতে পারছেন না। বাংলাদেশ থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই বাস সার্ভিস চালু হবে বলে পরিবহণ দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এল এইচ ডার্লং শনিবার রাতে জানান। বাংলাদেশের সঙ্গে এ বিষয়ে অনুমতির জন্য যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন বলেও জানান। এদিকে শনিবার বিকেলে কলকাতার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য কলকাতা-আগরতলা রুটে বিকালের পর সব বিমানের উড়ান বিলম্বিত হয়। বিলম্বিত বিমানগুলি রাত ৯ টার পর একে একে কলকাতা থেকে আগরতলায় আসে। শুক্রবার ফ্লাইবিগের কলকাতা থেকে আগরতলাগামী বিমান অনেক বিলম্বে রাত ১২ টা নাগাদ আগরতলায় আসে। পরে বিমান্টি গুয়াহাটি ফিরে যায় রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ। বিমানের উড়ান বিলম্বের জন্য যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এত রাতে আগরতলা বিমানবন্দরে নেমে বাড়ি ফিরতে যানবাহনের সঙ্কটে ও চড়া ভাড়ায়ও যাত্রীরা বিপাকে পড়ছেন।