বিমানবন্দর নতুন টার্মিনালে বৃষ্টির জল পড়ায় দুর্ভোগ
আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন উদ্বোধন হয়েছে এখনও পাঁচ মাসও হয়নি । কিন্তু এখনই টার্মিনাল ভবনের ভেতর উপর থেকে বৃষ্টির জল পড়ছে । যা বিমানযাত্রী ও বিমানবন্দরে কর্মরত সকলের কাছেই অবাক লাগছে । রবিবার দুপুরেও ২৫-২৮ মিনিটের যে ভারী বর্ষণ হয়েছে টার্মিনাল ভবনের ভেতর অনেক জায়গায় উপর থেকে বৃষ্টির জল চুইয়ে চুইয়ে টপ টপ করে পড়ছে । একটু ভারী বৃষ্টিপাত হলেই টার্মিনাল ভবন জুড়ে নানা জায়গায় উপর থেকে টপ টপ করে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ছে । প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারী নতুন নির্মিত এই আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । বিমানবন্দরের নতুন অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবনটি ৪৮০ কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয় । বিমানবন্দরের ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে টার্মিনাল ভবনটি নির্মাণ করা হয় । হায়দ্রাবাদের একটি নির্মাণ সংস্থা ভবন নির্মাণ করে । অভিযোগ উঠেছে হায়দ্রাবাদের এই নির্মাণ সংস্থাটি নিম্নমানের কাজ করায় এখন ভবনের ভেতর ও লাউঞ্জে বৃষ্টির জল পড়ছে । টার্মিনাল ভবন চালু হওয়ার পর কিছুদিন না যেতেই নানা বিপত্তি দেখা দিতে শুরু করে । লিফট অচল , বৈদ্যুতিক সিঁড়ি অচল সহ বিমান যাত্রীর পরিষেবায় নানা যন্ত্রাংশ একের পর এক অচল হতে থাকে । তাতে টার্মিনালে অত্যাধুনিক পরিষেবার কাজ প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে । নতুন বসানো এইসব যন্ত্রাংশ ক’দিন পর পরই অচল হয়ে পড়ার পর সাময়িক পরিষেবা বন্ধ থাকার পর মেকানিক্সরা আবার সারাই করেও দিচ্ছেন । টার্মিনাল ভবন উদ্বোধনের পর গত প্রায় পাঁচ মাসে বহুবার লিফট , বৈদ্যুতিক সিঁড়ি সহ অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ অচল হয়ে পড়ছে ।
এই ক্ষেত্রেও অভিযোগ উঠেছে অতি নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় করে বসানোর জন্য বার বার সেগুলি অচল হয়ে পড়ছে । অথচ এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার দিল্লীস্থিত প্রধান কার্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নির্বিকার বলেও অভিযোগ । কেন নতুন ক্রয় করা বহু মূল্যের লিফট , বৈদ্যুতিক সিঁড়ি সহ আরও যন্ত্রাংশ অতি অল্প দিনের মধ্যেই বারবার অচল হয়ে পড়ছে , তা এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার তরফে কোনও তদন্তও করা হচ্ছে না । কেন তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে বিমানযাত্রী ও বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে । সরকারের কোটি কোটি টাকায় ক্রয় করা এই লিফট বৈদ্যুতিক সিঁড়ি ও যন্ত্রাংশ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করলে কেঁচো খুড়তে গর্ত থেকে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা হতে পারে বলে বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন । তারপর এখন গোদের উপর বিষফোড়ার মতো ঠেকেছে বর্ষা শুরু হতেই টার্মিনাল ভবনের ভেতর উপর থেকে বৃষ্টির জল। টার্মিনাল ভবনের উপর বিশেষ ধরনের উন্নতমানের টিনের ছাউনি রয়েছে । প্রফাইল এমএস সিট দিয়ে টার্মিনাল ভবনের উপর ছাউনি দেওয়া হয়েছে । কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো নতুন নির্মিত টার্মিনাল ভবনে বিমান যাত্রী পরিষেবা চালুর পর প্রথম বর্ষাতেই ভেতরে জল পড়ছে । ডিপার্চার লাউঞ্জে প্রবেশের গেটে যেখানে সিআইএসএফ জওয়ানরা দাঁড়িয়ে যাত্রীর টিকিট ও নাম চেক করে সেই জায়গায়ও উপর থেকে টপটপ করে বৃষ্টির জল পড়ে । শুধু এখানেই নয় , ডিপার্চার লাউঞ্জ থেকে এরাইভেল লাউঞ্জে যাওয়ার পথে করিডরেও জল পড়ছে । তাছাড়াও আরও কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি হলেই জল পড়ছে । তাতে যাত্রীদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । সোমবার বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ম্যানেজার জানান , জল যাতে না পড়ে উপরে প্রফাইল এমএস সিটের ছাউনিতে মেরামতের কাজ চলছে । এয়ারপোর্ট অথরিটির আগরতলা বিমানবন্দরের ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের এক আধিকারিক জানান , টার্মিনাল ভবন নির্মাণের পরও যাত্রী পরিষেবা চালুর পর এই প্রথম বর্ষা পাওয়া গেছে । তাই এখন বর্ষায় উপরের ছাউনিতে কোথায় কোথায় ত্রুটিবিচ্যুতি রয়েছে তা ধরা পড়ছে । সম্পূর্ণভাবে মেরামত করা হচ্ছে বলে বিমানবন্দর ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের এই আধিকারিক জানান ।