জাহাজের রাডারে বসে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে এলেন তিন অনুপ্রবেশকারী

 জাহাজের রাডারে বসে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে এলেন তিন অনুপ্রবেশকারী
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নাইজেরিয়া থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে আসা একটি জাহাজের রাডার থেকে তিন ব্যক্তিকে
জীবিত উদ্ধার করেছে স্প্যানিশ কোস্টগার্ড। জানা গিয়েছে, আফ্রিকার দেশটি থেকে তারা ১১ দিনের ভয়াবহ সমুদ্রযাত্রা শেষে স্পেনের
স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছান। স্প্যানিশ কোস্টগার্ডের ট্যুইটারে উদ্ধারকৃত তিন ব্যক্তির একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে । ছবিতে দেখা
গিয়েছে , তেল ও রাসায়নিক বোঝাই
জাহাজটির রাডারের মাথায় বসে আছেন তিন অনুপ্রবেশকারী। সমুদ্রের জলস্তরের ঠিক ওপরেই ঝুলছে তাদের পা। সমুদ্রগামী জাহাজ-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট মেরিন ট্র্যাফিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নাইজেরিয়ার লাগোস থেকে ১১ দিনের যাত্রা শেষে সোমবার বিকেলে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের লাস পালমাসে পৌঁছায় আলিথিনি দুইটি
জাহাজটি। ওই জাহাজের রাডারেই বসে ছিলেন উদ্ধারকৃত তিন ব্যক্তি। কোস্টগার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, বন্দরে পৌঁছানোর পর জাহাজ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
জলশূন্যতা ও শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া বা হাইপোথার্মিয়ায় কারণে উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গেই তিনজনকে ক্যানারির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঠিক এক বছর আগে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে
ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাষ্ট্র সংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন,
যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এই নৌপথকে ‘ভীষণ বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে আরও বলেছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশ ছেড়ে এই বিপজ্জনক পথ বেছে
নিতে বাধ্য হচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান ও পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ছেড়ে পালানো নাগরিকদের জন্য ইউরোপে প্রবেশে সংক্ষিপ্ত পথ হচ্ছে ভূমধ্যসাগর। জাহাজের পিছনে ব্লেড সদৃশ জায়গাটিকে বলা হয় রাডার। এই রাডারে করে ইউরোপে পাড়ি
দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। হাজারও অভিবাসী প্রতিবছর চোরাই পথে ইউরোপে যেতে জীবনের ঝুঁকি নেন। জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১৯ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরীয় রুটে
চলাচল কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এরপর থেকেই উত্তর আফ্রিকা থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্যানারিতে আসার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ২০২০ সালের অক্টোবরেও একইভাবে চার ব্যক্তি লাগোস থেকে তেলের ট্যাঙ্কারের রাডারে বসে লাস
পালমাসে আসেন। জানা গিয়েছে, ১০ দিনের বিপদজ্জনক যাত্রা শেষে সেখানে পৌঁছায় তারা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.