জি-২০ ও ভোট প্রস্তুতি
একদিকে ভোট মিটতেই ফের ভোটের প্রস্তুতি, একইসাথে আগামী এক বছর ধরে দেশে অনুষ্ঠিত হতে চলা জি-২০ সম্মেলনের প্রস্তুতি। দুটোই একসাথে শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা। আরও স্পষ্ট করে বললে, গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশের ভোট চাঙ্গা হতেই আগামী বছরের একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এবং দু’বছর বাদে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন মোদি-শাহরা।গুজরাট ও হিমাচলে ভোটের ফলাফল কী হতে যাচ্ছে, সোমবার প্রকাশিত একাধিক সংস্থার বুথফেরত সমীক্ষায় একটা আভাস পাওয়া গেছে।গুজরাট,হিমাচলের ভোট সাঙ্গ হতেই সোমবার দিল্লীতে বিজেপি’র দলীয় কার্যালয়ে দলের রাষ্ট্রীয় পদাধিকারীদের বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ দেশের প্রতিটি রাজ্যের শীর্ষ পদাধিকারী ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা। আগামী বছরের শুরুতেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরামে। এছাড়াও আগামী বছর ভোট অনুষ্ঠিত হবে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে,ছত্তিশগড়, অরুণাচলপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যগুলোতে।বৈঠক মঙ্গলবারও চলবে।খবরে প্রকাশ, দলীয় বৈঠকের প্রথমদিনই প্রধানমন্ত্রী মোদি রাজ্যওয়াড়ি দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আগামী এক বছর ধরে দেশে হতে চলা জি-২০ সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন দলকে। বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যের বুথ সংগঠন, মণ্ডল কমিটি,জেলা কমিটিগুলিকে শক্তিশালী করার উপর জোর দিয়েছেন।
বেশ কিছু রাজ্যে বুথ পর্যায়ে সংগঠন খাতায় কলমে থাকলেও বাস্তবে তা নেই। বুথ পর্যায়ের পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যে ‘পন্না প্রমুখ’ অর্থাৎ ‘পৃষ্ঠা প্রমুখ’ কমিটি গড়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। উল্লেখ্য, বাম শাসিত ত্রিপুরা রাজ্যে ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই ‘পন্না প্রমুখদের উপর নির্ভর করেই বাজিমাত করেছে গেরুয়া শিবির। পাঁচ বছর পর সেই ‘পন্না প্রমুখ’ কমিটি বেশ কিছু ক্ষেত্রে নড়বড়ে হয়ে গেছে বলে খবর। জানা গেছে, গুজরাট মডেলকে সামনে রেখে প্রতিটি রাজ্যে ‘পন্না প্রমুখদের’ নিয়োগে জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। তাছাড়া আগামী বছর যেসব রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে, সেইসব রাজ্যে কোন কোন নেতা বা নেত্রী, কীভাবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে তারও রূপরেখা তৈরি হবে দুইদিনের রাষ্ট্রীয় বৈঠকে।
অন্যদিকে, এ বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে আগামী এক বছর জি- ২০ এর প্রায় দুশোটি সম্মেলন আয়োজিত হতে চলেছে দেশের ৫৫টি শহরে। খবরে প্রকাশ, দলের রাষ্ট্রীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,ভারতের মতো দেশের জন্য জি-২০ সম্মেলন আয়োজন করা কৃতিত্বের বিষয়। তাই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এমনভাবে প্রচারে নামতে হবে যাতে প্রতিটি ভারতবাসী এ নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে। শুধু তাই নয়, জি ২০ সম্মেলনের প্রথম প্রস্তুতি বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, জি-২০ সামিট গোটা দেশের। কোনও একটি দল বা কেন্দ্রীয় সরকারের নয়। এটি বিশ্বের কাছে ভারতের শক্তি প্রদর্শনের একটি অনন্য সুযোগ। সফল টিম ওয়ার্কের মাধ্যমেই এই মেগা ইভেন্ট সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করতে হবে যাতে গোটা বিশ্বের সামনে ভারতের সম্মান, মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পায়। আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, সোমবার দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে জি-২০ সম্মেলনের প্রস্তুতি বৈঠকে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা নেত্রীরাই যোগ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে আগামী ২০২৩ সাল সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।