সরকার এগিয়ে এলে খাসার ধান চাষের সংকট দূর হবে
গ্রামীণ ত্রিপুরায় উৎপাদিত খাসার চালের ভালো বাজার রয়েছে রাজ্যের সর্বত্র। বিশেষ করে শীতের মরশুমে পিঠেপুলির গতানুগতিক এবং রকমারি আয়োজনের খাতিরে খাসার চালের প্রচণ্ড চাহিদা থাকে। খাসার চালের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, যুগের পর যুগ ধরে সে গতানুগতিক পদ্ধতির উপর ভর করেই হোক অথবা আধুনিকতার ভিত্তিতেই হোক রকমারি খাসার ধান প্রজাতির চাষবাস দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কালি খাসার গুণগত মান অনেকটাই উন্নতমানের বলে এই খাসার চালের চাহিদা বেশি। তবে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে এই খাসার ধান চাষ অনেকটাই কমে গেছে। এরপরেও কিছু কিছু জায়গাতে এখনও বিক্ষিপ্তভাবে কালি খাসার ধান চাষ কিংবা বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে।এরকম একটি এলাকা হচ্ছে তেলিয়ামুড়া মহকুমার অন্তর্গত তেলিয়ামুড়া আর ডি ব্লকের অধীন হাওয়াই বাড়ি এবং রাংখল পাড়ার সন্নিহিত এলাকা। সংশ্লিষ্ট এলাকায় এখনও মোটামুটি ভালো পরিমাণেই কালি খাসার চাষ হয়ে থাকে। এই বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক এই এলাকায় গেলে কথা হয় স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে এই খাসার ধান উৎপাদন বা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এর মধ্যে কয়েকজন কৃষক খোলাখুলি জানালেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই কালি খাসার চাষ করে চলেছে।অর্থনৈতিক লাভালাভের কথা উঠতেই অকপটে জানালেন, ভালো বাজার রয়েছে এই প্রজাতির চালের। তবে পূর্বের তুলনায় উৎপাদন খরচ অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং গত বছরের তুলনায় ফলন অনেকটাই কমে যাওয়ার কারণে লাভ আগের মত আর পাওয়া যায় না। মূলত একদিকে যেমন শ্রম বাবদ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি উৎপাদন সহায়ক সার কীটনাশক ওষুধ এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার জনিত খরচবৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিকভাবে উৎপাদন খরচের বহর অনেকটাই বেড়ে চলেছে বলে কৃষকদের অভিমত। এরপরেও গতানুগতিকতার টানে এবং নিজেদের ব্যবহারের প্রয়োজনে এই সবকিছুকে মিলিয়েই।এখনও অল্প পরিমাণে হলেও কালি খাসার চাষ টিকে রয়েছে তেলিয়ামুড়া মহকুমা বিভিন্ন প্রান্তরে। সরকার প্রায় হারিয়ে যেতে বসা কালি খাসার চাষকে উৎসাহিত করতে প্রত্যক্ষভাবে তেমন সাহায্য করছে না বলেই কৃষকদের অভিমত। তবে দাবি উঠেছে, বর্তমান সরকার যেন এই খাসার ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।