১৫ দিন ধরে বিমানবন্দরে কার্গো বুকিং বন্ধ, বিভিন্ন অব্যবস্থায় দু্র্ভোগ চরমে

 ১৫ দিন ধরে বিমানবন্দরে কার্গো বুকিং বন্ধ, বিভিন্ন অব্যবস্থায় দু্র্ভোগ চরমে
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরের নতুন জায়গায় নতুন অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন গত জানুয়ারী মাসে চালু হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন টার্মিনাল ভবন উদ্বোধন করে ঘোষণা দেন এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ধাঁচেই নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিমানবন্দরের যাত্রী পরিষেবায় নানা জটিলতায় প্রতিদিন বিমানযাত্রীরা বিমানবন্দরে গিয়েও বিমান থেকে নেমে বাড়ি পৌঁছতে পরিবহণ সঙ্কটে দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন। দুর্ভোগের সীমা ছাড়িয়ে গেছে, বিমানে বুকিং করে নেওয়া কার্গো বন্ধ হয়ে থাকায়। অন্যদিকে বিমানযাত্রীরা বিমানবন্দরে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করলেই এন্ট্রি ফির নামে পকেট কাটার অদ্ভুত সিস্টেম চালু করে রাখায়ও যাত্রীদুর্ভোগের শেষ নেই। কিন্তু এইসব সমস্যা সমাধান করে যাত্রীদুর্ভোগ ও যাত্রী বিড়ম্বনা কমানোর দিকে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যেমন কোনও নজর নেই, তেমনি রাজ্য সরকার ও তার পরিবহণ দপ্তরেরও কোনও নজর নেই বলে যাত্রী সাধারণের অভিযোগ। সেই কারণে যাত্রী অসন্তোষ কোল বাড়ছে। গত ৬ ডিসেম্বর থেকে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দর থেকে বুকিং কার্গো বিমানে নেওয়া হচ্ছে না। বিমানবন্দর অধিকর্তা কে সি মিনার এক নির্দেশে বিমান সংস্থাগুলি বিমানে নেওয়ার জন্য কার্গো বুকিং বন্ধ রেখেছে। ফলে গত ১৫ দিন ধরে বিমানে কোনও কার্গো বুকিং নেওয়া হয়নি। পোস্টঅফিসের জরুরি ডাক, চিঠিপত্র, পার্সেল, ক্যুরিয়র সার্ভিসের জরুরি চিঠিপত্র, কোনও কিছুই বুকিং না নেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। শুধু চিঠিপত্র, পার্সেলই নয়, কোনও মালপত্ৰও বিমানে বুকিং নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি বহিঃরাজ্যের পাঠকদের জন্য বিমানে নেওয়ার জন্য পত্রিকা পর্যন্ত বুকিং নেওয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রেস ম্যাটেরিয়ালসও বুকিং নেওয়া হচ্ছে না। বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে ইতিপূর্বে আর কোনও সময় বিমানে নেওয়া কার্গো বুকিং বন্ধ হয়নি। এতো বড় বিপর্যয়ের মধ্যে আর কোনও সময় পড়েনি রাজ্যবাসী। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে পুরানো টার্মিনাল ভবনে কার্গো বুকিং ও কার্গো এক্সরে করার সিকিউরিটির ভ্যালিডিটির সময় আগে থেকে আরও বৃদ্ধি না করায় মূলত দিল্লীস্থিত ব্যুরো অব সিভিল অ্যাভিয়েশন পুরানো ভবনে এই কাজ বন্ধ রাখার সার্কুলার ধরিয়ে দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। তাতেই বিমানের কার্গো বুকিং বন্ধ হয়ে যায় গত ৬ ডিসেম্বর থেকে। আর তাতেই ১৫ দিন ধরে চরম বিপত্তি ও চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাজ্যবাসী থেকে শুরু করে বিমান সংস্থা, ভারতীয় ডাক বিভাগ, ক্যুরিয়র সার্ভিস সকলেই। ক্যুরিয়ার সার্ভিস, বিমান সংস্থাগুলির তাতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কবে নাগাদ পুনরায় বিমানে কার্গো বুকিং নেওয়ার কাজ শুরু হবে সেই বিষয়ে বুধবার রাতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তথা অধিকর্তা কে সি মিনাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ব্যুরো অব সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে নির্দেশ এলেই কার্গো বুকিং নেওয়া শুরু হবে। কবে সেই নির্দেশ আসবে সেই প্রশ্নের উত্তরে বিমানবন্দর অধিকর্তা জানান যে কোনও সময়, যে কোনও দিন ব্যুরো অব সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে পুনরায় বিমানের জন্য কার্গো বুকিং নেওয়ার নির্দেশ আসতে পারে। ফলে কার্গো বুকিং শুরু নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা ঝুলেই রইল। এদিকে, বিমানবন্দরে গাড়ি প্রবেশে এন্ট্রি ফি নিয়েও জটিলতা জারি রয়েছে। কমার্শিয়াল নয়, এমন গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে যাত্রী নামিয়ে বা গাড়িতে যাত্রী উঠিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে যদি বিমানবন্দরের বাইরে বেরিয়ে যায় তাহলে কোনও এন্ট্রি ফি নেওয়া যাবে না। পাঁচ মিনিটের বেশি সময় বিমানবন্দরের ভেতরে গাড়ি থাকলে সেই নির্ধারিত এন্ট্রি ফি নেওয়া হচ্ছে। দাবি উঠেছে পাঁচ মিনিট নয়, সময় বাড়িতে দশ মিনিট করা হোক। এতো অল্প সময়ে অর্থাৎ পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাত্রী নামিয়ে বা যাত্রী তুলে গাড়ি বাইরে বেরিয়ে আসা কিছুতেই সম্ভব নয়। এদিকে কমার্শিয়াল যে কোনও গাড়ি বিমানবন্দরের ভেতর যাত্রী নিয়ে প্রবেশ করলে বা যাত্রী তুলতে গেলে নির্ধারিত এন্ট্রি ফি আদায় করে নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও দাবি উঠেছে কমার্শিয়াল গাড়ির ক্ষেত্রেও বিমানবন্দরের ভেতরে যাত্রী নামিয়ে ও তুলে আনতে দশ মিনিট পর্যন্ত বিনা এন্ট্রি ফি চালু করা হোক। এদিকে, বিমানবন্দরে এখনও প্রিপেইড অটো/ফোর হুইলার গাড়ি পরিষেবা চালু না হওয়ায় যাত্রীর বিমান থেকে নেমে বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পরিবহণ জুলুমে পড়ছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তারপরও বিমানবন্দরে প্রিপেইড পরিবহণ ব্যবস্থা চালু হয়নি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.