ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের প্রস্তাব ঢাকার!
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে ডলারের পরিবর্তে রুপির ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ভারত সফরশেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। গত ২২-২৩ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের নেতৃত্বে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়। ঢাকায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারেন্সির বিষয়ে কথা হয়েছে, দু’দেশের বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারিনি, কারণ এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে। আমরা বলেছি আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। এটা পারবো কি না সেই হিসাবের ব্যাপারও আছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য খাদ্যসঙ্কট প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ। ভারতের কাছে এসব পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে অনুরোধ জানিয়েছি যাতে আমাদের সমস্যা না। হয়। যেমন ভারত পেঁয়াজ ও গম রপ্তানি বন্ধ করায় মধ্যে আমাদের সমস্যা হয়েছিল। তারা বলছে আমরা যা চেয়েছি তা তারা দিতে পারবে। বিগত বেশ কয়েক বছরের আমদানি-রপ্তানির তথ্য পর্যালোচনা করে এসব পণ্যের বার্ষিক পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাটজাত সামগ্রী ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে এন্টি ডাম্পিং ডিউটি আরোপ করেছে। এ ডিউটি প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সেপা) নামে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছিলেন। সেটা যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পাদন করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে একমত হওয়া গেছে। আশা করা যায়, অল্প সময়ের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষর সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদান এবং বিভিন্ন প্রকার শুল্ক বা অশুল্ক বাধা অপসারণের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজিকরণ, ভারত হতে উচ্চ ফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানি, ব্যবসায়ীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, ভারত এসব বিষয়ে বাংলাদেশকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভারতের পক্ষে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রীপীযূষ গয়ালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভারতের অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।