রিপোর্ট কার্ড

 রিপোর্ট কার্ড
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ মূলত এই দুইটি স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৮ সালে বিজেপি – আইপিএফটি সরকার পথ চলা শুরু করেছিল। সাংবিধানিক নিয়ম নীতি অনুযায়ী বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদকাল শেষ হতে চলেছে। হাতে আর মাত্র দুই মাস। এর মধ্যেই নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাবতীয় প্রস্তুতি একেবারে অন্তিম পর্যায়ে রয়েছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৫ জানুয়ারী চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ১১ জানুয়ারী রাজ্যে আসবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ টিম।

218834-ecigujaratpolldate

ধারণা করা হচ্ছে, কমিশনের টিম যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে ফিরে যাওয়ার পরই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে। এরই মধ্যে বুধবার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের পাঁচ বছরের কার্যকালে তাদের ‘ভিশন ডকুমেন্টে’ উল্লিখিত লক্ষ্য নিদ পূরণের প্রতিশ্রুতিগুলি কতটা পূরণ করতে পেরেছে,তার রিপোর্ট কার্ড ঐতি প্রকাশ করেছে সরকার। এদিন রাজধানীর রবীন্দ্রভবনে ভিড়ে ঠাসা প্রেক্ষাগৃহে সরকারের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জোট সরকারের সকল মন্ত্রীরাও। প্রকাশিত রিপোর্ট কার্ডে সরকার রাজ্যের উন্নয়ন ও রাজ্যবাসীর কল্যাণে গৃহীত কর্মসূচি এবং প্রতিশ্রুতি প্রতি পালনের তথ্য তুলে ধরেছে।

জনগণের বিশেষ উন্নয়ন, শিক্ষা, কৃষক কল্যাণ, স্বাস্থ্য, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন, জনজাতি উন্নয়ন, পরিকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনীতি এত এবং শিল্প উন্নয়ন, সুশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা,পর্যটন- প্রতিটি বিভাগে যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ভোটের প্রাক্কালে সরকারের পাঁচ বছরের কাজকর্মের খতিয়ান লিখিত আকারে জনগণের সামনে তুলে ধরার বিষয়টি।সেই রিপোর্ট কার্ড এবং রিপোর্ট কার্ডে উল্লিখিত তথ্য ও পরিসংখ্যান কতটা বাস্তবের সাথে মিল রয়েছে,তার বিচার করবে জনগণ।কেননা জনগণই আসল বিচারক।

FB_IMG_1672843651069

তবে প্রাথমিকভাবে রিপোর্ট কার্ডে চোখ বুলিয়ে যা মনে হয়েছে, তাতে এমন কিছু ভুল বা হেরাফেরি আছে বলে মনে হয়নি। কারণ, এই তথ্য ও পরিসংখ্যানগুলি আগেই সময়ে সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে। যেমন সামাজিক ভাতা সাতশ থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা। ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে তিনশ চল্লিশ টাকা করা। কৃষক সম্মান নিধি, সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়। চা-শ্রমিকদের কল্যাণে গৃহীত সিদ্ধান্ত। শিক্ষায় নজিরবিহীন পরিবর্তন।সরকারী চাকরিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ। অনিয়মিত কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি। জনজাতি কল্যাণে গৃহীত একাধিক ব্যবস্থা।পরিকাঠামো উন্নয়ন।

রেল, জাতীয় সড়ক, বিমান পরিষেবার উন্নয়ন –এমন আরও বহু বিষয় রয়েছে।এগুলি উদাহরণ কেবলমাত্র। রিপোর্ট কার্ডে এমন ১০২টি বিষয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, গত পাঁচ বছরে সরকার যে কাজগুলো করেছে তার একটা সংক্ষিপ্ত তথ্য রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরা হয়েছে। এর বাইরেও অনেক কিছু কাজ করা হয়েছে, যেগুলি রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ নেই।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জোট সরকারের ভিশন ডকুমেন্টে অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ, চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের আইন অনুযায়ী সমস্যা সমাধান করা, ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই পঞ্চাশ হাজার চাকরি, এমন আরও কিছু প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল।

সেইগুলির কী হলো? রিপোর্ট কার্ডে কিন্তু এই ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ নেই। বিরোধীরা কিন্তু সুর চড়িয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিরোধীদের বক্তব্য,২৯৯টি প্রতিশ্রুতি ছিল – গত পাঁচ বছরে একটিও পালন করেনি বিজেপি-আইপিএফটি সরকার।বিরোধীদের এই অভিযোগ যেমন সঠিক নয়, তেমনি সব প্রতিশ্রুতি যে সরকার পালন করতে পারেনি— সেটাও ঠিক। এখন বিচার করার মালিক জনগণ। তারাই বিচার করবে ভালো-মন্দ। গণতন্ত্রের সবথেকে বড় পরীক্ষায় শাসক-বিরোধী সকলেই জনমত যাচাই করবে। ফলাফল দেবে জনগণ। এই রিপোর্ট কার্ড অনুযায়ী ভালো নম্বর নিয়ে পাস করা যায় কি না?সেটা সময়ই বলবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.