মানুষকে বোকা বানিয়ে ২৫ বছর রাজত্ব করেছে বামফ্রন্টঃ মিঠুন
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় রাজ্যে সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান শাসক দল বিজেপি তাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবং দলীয় কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি করে আসছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপি প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকায় বিজয় সংকল্প সমাবেশ সংগঠিত করছে। মূলত এরই অঙ্গ হিসেবে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার তেলিয়ামুড়া চিত্রাঙ্গদা কলা কেন্দ্র মাঠ প্রাঙ্গণে তেলিয়ামুড়া মণ্ডলের উদ্যোগে বিজয় সংকল্প সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই বিজয় সংকল্প সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা ভারতের চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট চিত্রতারকা মিঠুন চক্রবর্তী। তাছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা পাপিয়া দত্ত সহ বিজেপি দলের অন্যান্য নেতৃত্বরা। তাছাড়া সভায় সভাপতিত্ব করেন তেলিয়ামুড়া বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রঞ্জিত সূত্রধর। এদিনের এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী তার স্বভাব সুলভ আচরণের মাধ্যমে তার অভিনীত কিছু বাংলা ছায়াছবির সংলাপ জনগণের উদ্দেশে তুলে ধরেন। তার পাশাপাশি বর্তমান বিজেপি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রশংসায় মুখর ছিলেন তিনি। তাছাড়া তিনি বলেন, বিগত বাম সরকারের আমলে ত্রিপুরায় কোনও ধরনের উন্নয়ন হয়নি। শুধু মিথ্যার উপর আশ্রয় করে বিগত বাম সরকারের নেতৃত্বরা মানুষকে বোকা বানিয়ে ২৫ বছর ক্ষমতা ভোগ করে গেছেন। বর্তমানে রাজ্যে বিজেপির পাঁচ বছরের শাসনকালে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সকল স্তরের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে বলে তিনি তার অভিমত ব্যক্ত করেন। তাছাড়া তিনি এই সভা মঞ্চ থেকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান রাখেন। অন্যদিকে এই সভায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বিগত বাম সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তার পাশাপাশি তিনি কমিউনিস্ট পার্টিকে করোনা ভাইরাসের সাথে তুলনা করে তিনি বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি হলো করোনা ভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাস যা বিগত ২৫ বছরে ত্রিপুরা রাজ্যকে শেষ করে দিয়েছে। এবং রাজ্যের মানুষের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার সংঘটিত করেছে। এর থেকে রেহাই পেতে মূলত রাজ্যের মানুষ ২০১৮ সালে বিজেপি সরকারকে সমর্থন করেছিল এবং সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তার পাশাপাশি কংগ্রেস দলের সমালোচনায় মুখর ছিলেন তিনি। তাছাড়া তিনি আগামী দিনে রাজ্যে পুনরায় অধিক সংখ্যক আসন নিয়ে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। এদিকে রাজ্য বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি যার নাম দেওয়া হয়েছে জন বিশ্বাস যাত্রা। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বুধবার রাজ্যে আসেন বিজেপি নেতা তথা প্রখ্যাত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তেলিয়ামুড়ার পরে তিনি মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জন বিশ্বাস যাত্রায় যোগ দেন। কলাবাগান থেকে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জন বিশ্বাস যাত্রার সূচনা হয় । সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা, রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। জন বিশ্বাস যাত্রা কর্মসূচিকে সামনে রেখে এবং মিঠুন চক্রবর্তীকে দেখার জন্য সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায় আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের দুপাশে। মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্র হয়ে বিজেপির জন বিশ্বাস যাত্রা পৌঁছয় খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানেও একই ছবি লক্ষ্য করা যায়। খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পুরাতন আগরতলা ব্লক এলাকায় আয়োজিত হয় এক সভা। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা, রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী সহ অন্যরা। এদিন রাজ্য বিজেপির এই রথযাত্রা বা জন বিশ্বাস যাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এদিন জন বিশ্বাস যাত্রায় মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বিজেপি নেতা তথা প্রখ্যাত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাকে দেখার জন্যই এদিন ৮ থেকে ৮০ আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের দুপাশে ভিড় করেছিলেন।