সৃজনশীলতায় মগ্ন দশ বছরের এক খুদে!!!
স্বরূপা নাহা।। কথায় আছে জন্মের পর শিল্পী হওয়া যায় না, শিল্পী হয়েই জন্ম নিতে হয়। কিছু কিছু জিনিস বয়স কিংবা অভিজ্ঞতা দিয়ে শেখা যায় না। একজন শিল্পীর কাছে বয়স, লিঙ্গ, জাত-পাত সমস্ত কিছুই তুচ্ছ। যে কোনও শিল্পীর একটাই পরিচয়, সে একজন শিল্পী। যেখানে অনেকের চিন্তা ভাবনা শেষ হয়ে যায়, সেখান থেকেই আবার কারও কারও চিন্তাভাবনা শুরু হয়। এমনই এক সৃজনশীলতায় মগ্ন শিশু শিল্পী দেব শৌর্য বসাক। ব্যবহারের অযোগ্য কাগজকে কাজে লাগিয়ে, রং তুলির সাহায্যে মূর্তি গড়ে তাক লাগাচ্ছে বছর দশের দেব শৌর্য। বাবা ডঃ দ্বৈপায়ন কিশোর বসাক ও মা ডঃ সোমা দাসের একমাত্র সন্তান দেব শৌর্য।
খুদে শিল্পী দেব শৌর্য রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। ছোটোবেলা থেকেই আঁকতে ভালোবাসতো সে। মা-বাবা অফিসে চলে গেলে ঘরে বসে খেলার ছলে আঁকতো। তাছাড়া কার্ডবোর্ড পেলে সেগুলো আঠা দিয়ে জুড়ে দিতো। এভাবেই তার দুপুর কাটতো। তার বানানো জিনিসগুলো মা-বাবাও সযত্নে সাজিয়ে রাখতো ঘরে। মা-বাবাকে এটা ওটা কিনে দেওয়ার জন্য বায়না করতো।ছেলের সৃষ্টিশীল আবদারে বাবা-মা কোনদিন না করেনি। এভাবেই খেলার ছলে তার এই পথচলা। সৃজনশীল কাজ তাকে খুব আকৃষ্ট করে। আর রাস্তায় পরিত্যক্ত মূর্তি তাকে ব্যথাতুর করে বলেই সে কাগজ, কার্ডবোর্ড দিয়ে ঠাকুর গড়তেই বেশি উৎসাহী।
দেব শৌর্য ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে জানায়, তার খুব ভালো লাগে এ ধরনের নিত্যনতুন জিনিস বানাতে। বিভিন্ন জায়গা থেকে তার কাছে অর্ডার এসেছে মূর্তি বানিয়ে দেওয়ার জন্য। তাই কঠোর পরিশ্রম করে এই মূর্তিগুলো তৈরি করেছে খুদে শিল্পী দেব শৌর্য। সে জানায়, চকলেটের বাক্স সহ ব্যবহারের অযোগ্য বিভিন্ন কাগজ, কার্ডবোর্ড ইত্যাদি জমিয়ে সেগুলো দিয়েই মূর্তিগুলো তৈরি করেছে সে।
পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণের যোগান দিয়ে ছোট্ট দেব শৌর্যকে এই কাজে সহায়তা এবং উৎসাহ যুগিয়ে চলেছে তার মা-বাবাও। ছোট্ট শিল্পী দেব শৌর্য আরও জানায়, এই মূর্তিগুলো বানানো ছাড়াও ছবি আঁকা, তবলা বাজানো, গিটার বাজানো ও ক্যারাটে করতেও ভালোবাসে সে। পাশাপাশি নাচ ও অভিনয়েও সম আগ্রহী সে। ঢাক বাজানোতেও অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে তার। মাত্র দশ বছর বয়সে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার এই দক্ষতা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তাকে দেখে অন্য শিশুরাও অনুপ্রাণিত হবে নিঃসন্দেহে।