নির্বাচনের আগেই বিরোধীরা হার স্বীকার করে নিয়েছে : রাজনাথ সিং
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট বিজেপি’র সামনে হেরে গিয়েছে, তাই তারা জোট করেছে। তবে এমন চারটি দল জোট বাঁধলেও তাদের ফল হবে শূন্য। এই দাবী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এর। মঙ্গলবার আগরতলার বাধারঘাটে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথাগুলো বলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি তিপ্রামথা দলের সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোরকে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি কি উদ্দেশ্যে দল গঠন করেছেন তা তিনি নিজেও জানেন না।
নির্বাচনী প্রচারে এদিন রাজনাথ সিং ত্রিপুরায় আসেন। প্রথমে তিনি চলে যান ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী মবস্বর আলীর সমর্থনে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। কৈলাসহরের সমাবেশে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর চলে আসেন আগরতলায় বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী মিনারানী সরকারের সমর্থনে একটি সমাবেশ করেন । এই সভায় রাজনাথ সিং ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজনাথ সিং বলেন, নির্বাচনী প্রচারে এসে তিনি একাধিক জায়গায় সভা করেছেন। এইসব সভা গুলিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি প্রমান করছে রাজ্যে আবার বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। গত ৫ বছরে রাজ্যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যের আইন ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। একই ভাবে ২০১৪ সালের পর মোদী তার কাজের জন্য সারা বিশ্বের সামনে অনেক প্রশংসিত হয়েছেন।কারণ মোদী খুব সংবেদনশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ভালো সরকার চালানোর কৌশল যদি কোন দলের থাকে তবে একমাত্র বিজেপির হাতে রয়েছে বলে দাবী করেন রাজনাথ সিং। তাই দেশের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে ত্রিপুরায়ও ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে। বিশেষ করে শৌচালয়, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেন। শুধু মাত্র সরকার গঠনের জন্য রাজনীতি করেন না। দেশ ও সমাজ গঠনের জন্য রাজনীতি করেন। কিন্তু অনেক দল রয়েছে যাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র সরকার গঠন এবং এর জন্যই তারা রাজনীতি করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রদ্যুৎ কিশোর নতুন করে তিপ্রামথা নামে একটি দল গঠন করেছেন। কিন্তু কী উদ্দেশ্যে এই দল গঠন করেছেন তা তিনি নিজেও জানেন না বলে অভিমত রাজনাথের। ত্রিপুরায় আগে থেকেই অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। প্রদ্যুৎ জনজাতিদের উন্নয়ন করার জন্য দল গঠন করার কথা বলছেন। দেশ স্বাধীন করার জন্য জনজাতিদের অনেক গুরুত্ব রয়েছে।তাই বিরসা মুন্ডার জন্মদিনকে জনজাতি গৌরব দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি বলেন, জনজাতি অংশের মানুষের জন্য চিন্তা বিজেপি সরকার করে। তাই তাদের উন্নতির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে বর্তমান সরকার। ২০১৪ সালের আগে জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হতো মাত্র ৩১হাজার কোটি টাকা, বর্তমান বিজেপি সরকার তাদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করছে ৮১হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রদ্যুৎ কিশোর জনজাতিদের সুরক্ষার কথা বলেন, কিন্তু এটা বললে চলবে না যে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রপতির পদে একজন জনজাতি মহিলাকে বসিয়েছে বিজেপি। যা আগে কেউ কল্পনাও করতে পারত না। সেই সঙ্গে বিরোধী দলগুলির প্রতি তার পরামর্শ মর্যাদা রেখে যেন সবাই রাজনীতি করে।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ত্রিপুরায় কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট জোট করেছে। তারা আগে থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছে যে একা বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয়, তাই নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের লড়াই থাকার পরও জোট করেছে। কংগ্রেস শূন্য বামফ্রন্ট শূন্য, তাদের যোগ ফল শূন্য। তাই এমন চারটি দলও যদি এক হয় তারপরও ফল শূন্য হবে। রাজ্যের বিজেপির প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে পুরাতন সব রেকর্ড ভেঙে ৫০টির বেশী আসনে বিজেপি জয়ী হবে।
এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।