শব্দের চাতুরি করে তিপ্রাসাদের প্রতারণা করেছেন প্রদ্যোত!!!

 শব্দের চাতুরি করে তিপ্রাসাদের প্রতারণা করেছেন প্রদ্যোত!!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। রাজনীতির ময়দানে নেমে ‘শব্দের চাতুরিতে’ রাজ্যের লক্ষ লক্ষ জনজাতিদের সাথে প্রতারণায় শামিল হয়েছেন তিপ্ৰা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। শুধু তাই নয়, তিনি এই রাজ্যের লক্ষ লক্ষ জনজাতিদের আবেগ নিয়ে খেলেছেন। এমনই চাঞ্চল্যকর এবং বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে প্রদ্যোত কিশোরের বিরুদ্ধে।“গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ডের’ নামে শব্দের খেলা করেছেন খুবই চতুরতার সাথে। এই অভিযোগ, অন্য কারও নয়। খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। প্রদ্যোত কিশোর মুখে রাজ্য ভাগের কথা বলে রাজ্যের জনজাতিদের আবেগকে হাতিয়ার করে এডিসির ক্ষমতা দখল করলেও লিখিতভাবে রাজ্যভাগের দাবি জানাননি।

সব থেকে বড় কথা হচ্ছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিপ্রা মথা যে ভিশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে, তাতেও শব্দের চাতুরিতে মূল অ্যাজেণ্ডা খুবই সচেতন ভাবে এড়িয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, তিপ্ৰা মথা
রাজ্যের ক্ষমতায় এলে যে পনেরোটি প্রতিশ্রুতি সরকার গঠনের ১৫০ দিনের মধ্যে পূরণ করবেন বলে উল্লেখ করেছেন, সেই পনেরোটি প্রতিশ্রুতির মধ্যে কোথাও গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ডের উল্লেখ নেই। তিপ্ৰা মথার প্রকাশিত ভিশন ডকুমেন্টে গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ড সম্পর্কে যা বলা হয়েছে সেটি হলো, “TIPRA Motha Party is fully committed to our core-ideolog- ical demand of a permanent constitutional solution for the indigenous people of Tripura and until it’s not achieved, we shall continue to fight for the rights of our People.

“তার এই বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট যে, তিনি সংবিধানের মধ্যে থেকে যে কোনও একটি স্থায়ী সমাধান চাইছেন। কিন্তু স্থায়ী সমাধানটা কী? সেটা কিন্তু স্পষ্ট করেননি। এমনকী লিখিতভাবেও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপন করেননি। আইনজ্ঞরাও এই প্রশ্ন তুলেছেন, স্থায়ী সমাধানটা কী? এটা সংবিধানের ২৪৪(এ) ধারা মোতাবেক হতে পারে। টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল
হতে পারে। ষষ্ঠ তপশিল সংশোধন করে ডাইরেক্ট ফাণ্ডিং হতে পারে। ত্রিপুরাকে ভাগ করে আরেকটি পৃথক রাজ্য হতে পারে। প্রদ্যোত কিশোর সংধিানের মধ্য থেকে কোন স্থায়ী সমাধান চাইছেন? সেটা কিন্তু চতুরতার সাথে এড়িয়ে গেছেন।

গত সোমবার ছয় ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, প্রদ্যোত কিশোরের কোনও লিখিত দাবিই তো নেই। শুধু তাই নয়, তার দাবি আসলে কি? সেটাই তো স্পষ্ট নয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, গত দেড় বছর ধরে প্রদ্যোত কিশোর যে দাবি তুলে পাহাড়কে কবজা করেছেন, জনজাতিদের আবেগ উসকে দিয়ে এবং আবেগকে হাতিয়ার করে এডিসির ক্ষমতা দখল করেছেন, রাজ্যের জনজাতিদের আকাশ- কুসুম স্বপ্ন দেখিয়ে নিজেকে মহান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়েছেন, এই সবই কি তাহলে ভূয়ো? প্রদ্যোত কিশোর কি তাহলে তিপ্রাসাদের সাথে প্রতারণা করেছেন?

IMG-20230206-WA0072

তিপ্রাসাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের আবেগ নিয়ে খেলেছেন? এই প্রশ্নগুলি কিন্তু আজ বড় হয়ে উঠেছে। রাজনীতির উত্থান- পতন ও সময়ের নিয়মে অনেক কিছুই হয়ত পাল্টে যাবে। কিন্তু ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ড’ নামক এক শস্বব্রহ্মে রাজ্যের জাতি-জনজাতিদের মধ্যে যে বিদ্বেষের বিষ ঢুকিয়েছে প্রদ্যোত কিশোর,তা হয়তো ভবিষ্যত প্রজন্মকেও বয়ে বেড়াতে হবে। এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের মতে আর কিছু হোক বা না হোক, প্রদ্যোত কিশোর রাজ্যের জাতি-জনজাতির মধ্যে বিভাজনের রেখা টানতে সফল হয়েছেন। ‘১০,৩২৩ এই সংখ্যাটি যেমন এই রাজ্যের ইতিহাসে অভিশপ্ত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। তেমনি হয়ত ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ডও স্থান করে নেবে। অপেক্ষা শুধু শেষ দেখার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.