গণনা প্রস্তুতি!

 গণনা প্রস্তুতি!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গণনার দিন আগাইয়া আসিতেছে আর তাহার সহিত পাল্লা দিয়ে বাড়িতেছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। সেই সকল উৎকন্ঠার কারণ একটাই, তাহা হইল ভোট হইতে গণনা অবধি দীর্ঘ বিরতিকাল। নানান ধরনের হিসাব নিকাশ আর জল্পনাকল্পনায় অত্যুৎসাহী মহল নিজেই নিজের ওপর তিতিবিরক্ত হইয়া উঠিয়াছে এতদিনে। প্রতিদিনই তাহারা কাউন্টডাউন করিতেছে— আর বাকি ছয়দিন, আর বাকি পাঁচদিন। চার তিন দুই ছাড়িবে কবে কখন এই লইয়া হা হুতাশ চলিতেছে। প্রার্থী, সমর্থক ছাড়াও উৎসাহী মানুষের মনে এখন টগবগ করিতেছে প্রহর অতিক্রমের উত্তেজনা। নির্বাচন কমিশন সেই সকল বিষয় বিবেচনা করিয়া অত্যুৎসাহী সমর্থকদের মধ্যে লক্ষ্মণরেখা অতিক্রমের ঝোঁক যাহাতে না আসে সেই জন্য সকল ব্যবস্থা লইতেছে।

FB_IMG_1676797470595

এই কথা অস্বীকার করা যাইবে না যে ভোট শেষ হইবার পরে এবং গণনার আগে যেই নির্বাচনি সন্ত্রাস শুরু হইয়াছিল তাহা বন্ধ করিতে নির্বাচন কমিশন সদর্থক ভূমিকা লইতে পারিয়াছে। আবার দলগুলিকেও নিজ নিজ কর্মীদের নিরস্ত করাইতে বাধ্য করিতে পারিয়াছে। নির্বাচন কমিশন এইবার গণনাবিষয়ক পর্যবেক্ষক পাঠাইবে।ভোটগ্রহণের মতই গণনা নির্বিঘ্ন করিতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইতেছে। নানান থানা বা মহকুমা স্তরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বা মহকুমাশাসকেরা রাজনৈতিক দলগুলিকে ডাকাইয়া সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করিতেছেন। গণনা কেন্দ্রে কী কী করা যাইবে আর কী করা যাইবে না,সেইগুলি দলগুলিকে পাখিপড়া করিয়া পড়ানো হইতেছে।

FB_IMG_1677143124111

সকল পড়া শেষ হইলে জানাইয়া দেওয়া হইতেছে, গণনাকেন্দ্রে নিয়ম ভঙ্গ কিংবা অশান্তি তৈরির প্রচেষ্টা কিছুমাত্র সহ্য করা হইবে না। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন একেবারেই জিরো টলারেন্স থাকিবে। একই সাথে নানান জেলা সফর করিতেছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক। সঙ্গে থাকিতেছেন মুখ্য সচিব এবং ডিজিপি। জেলা প্রধান আর পুলিশ সুপারদের সহিত বৈঠক ভে করিয়া গণনাপূর্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করিতেছেন। এইবার শুরু হইবে জেলাস্তরের সর্বদলীয় বৈঠক। কমিশনের এই নির্দেশ রহিয়াছে। সেই বৈঠকগুলিতে জেলার বিভিন্ন রিটার্নিং অফিসার সহ প্রশাসনের অন্য অফিসারেরা উপস্থিত থাকিবেন। পর্যালোচনা হইবে সকল বিষয়ে। উদ্দেশ্য একটাই — গণনা যেন নির্বিঘ্ন করা যায়।

4d76038c-6587-11eb-9024-f0893c954548_1612291785527_1617345581769

সারা রাজ্যে পথে ঘাটে, চা দোকান হইতে প্রাতভ্রমণের পথ সর্বত্র এখন একটাই আলোচনা-ভোট পড়িয়াছে কোন্ দিকে কোন্ পথে। তাহাদের আলোচনা যাহা লইয়া সেই সকল ইভিএম বন্দি ভোট এখন ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায় স্ট্রং রুমগুলিতে রহিয়াছে। বাহিনীর এই নিরাপত্তা আঁটুনির বাহিরে ভোট পাহারায় রহিয়াছেন নানান দলের কর্মীরা। বাম, কংগ্রেস, বিজেপি সকলেই রহিয়াছে ২৪ ঘণ্টা ধরিয়া পালা করিয়া। সেই অর্থে তাহাদের কোনও কাজ এইখানে নাই। তবে কাহারা আসিতেছে বা যাইতেছে সেই সকল খবর লইয়া দলগুলির মধ্যে যেন বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয় সেই জন্য তাহাদের উপস্থিতি প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, স্ট্রং রুমের ব্যবস্থা, অবস্থা কেমন রহিয়াছে তাহা চাক্ষুষ করিতে পারিবেন যেকোনও দলের প্রার্থী।

igztfe4hc9ijc1hm_1639492581

স্ট্রং রুমের পাশে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে মনিটর রাখা হইয়াছে। সেই মনিটরে স্ট্রং রুমের সামনেকার সিসি টিভির ছবি ভাসিতেছে।যে কোনও রাজনৈতিক দলের লোক বা প্রার্থী সেই মনিটরে বসিয়া যে কোনও সময়কার দৃশ্য সেই মনিটরে দেখিতে পারিবেন। আবার একজন টিসিএস পর্যায়ের আধিকারিক সর্বক্ষণ এই কক্ষের দায়িত্ব সহ স্ট্রং রুমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখাশোনা করিতেছেন। সবকিছু মিলাইয়া নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনায় রাজনৈতিক দলগুলির অসন্তোষের কোনও খবর নাই। তাহারাও এই সময়ে কেবল দুই মার্চের অপেক্ষায় রহিয়াছেন। গণনার দিন কবে আসিতেছে ইহারই অপেক্ষা এখন সকলের। রাজ্যের মানুষ এই নির্বাচনে বিশাল পরিমাণে ভোট দিয়াছেন। তাহারা যে শান্তি আর হিংসাহীন পরিবেশ চাহিয়াই ভোট দিয়াছেন তাহা কিন্তু স্পষ্ট।

who-can-vote-in-india
Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.