উত্তাল সংসদে অচল দুই কক্ষ!
রাহুল গান্ধীর লণ্ডন বক্তৃতা নিয়ে উত্তাল সংসদ। শুধু যে বিজেপি সংসদীয় দল বিরোধিতায় মুখর তাই নয়। স্বয়ং মোদি সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, রাহুল গান্ধীর উচিত সভায় এসে ক্ষমাপ্রার্থনা করা।গোটা সভার প্রত্যেক দলের এমপিদের একযোগে রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের নিন্দা করা দরকার। কারণ, তিনি এই লোকসভার সদস্য এবং বিদেশে গিয়ে তিনি একজন সংসদীয় সদস্য ও ভারতীয় নাগরিক হয়েও দেশের বদনাম করেছেন। রাজনাথ সিং-এর এই অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে বিরোধী পক্ষ। কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা সরকারকে চেপে ধরে বলে আদানিকে দেশের সম্পদ বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই কেন?যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করতেই হবে। এই দাবিতে বিরোধীরা ওয়েলে নেমে এসে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।এদিকে পাল্টা বিজেপি সদস্যরা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন কোনও কাজই হতে পারল না। দফায় দফায় স্থগিত হয়ে যায় সভা। এরপর সারাদিনের জন্য দুই কক্ষই মুলতুবি হয়ে যায় । বিরোধীরা অবশ্য শুধুই সভা অচল হয়ে যাওয়ার পর বিরোধিতা সাঙ্গ করতে রাজি নয় ৷ তাই এদিন বিজেপি বিরোধী ১৬ টি দল একজোট হয়ে সংসদ ভবন থেকে বিজয়চক পর্যন্ত যায় মিছিল করে। উল্লেখযোগ্যভাবে সম্মিলিত বিরোধীদের এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মিছিলে অংশ নেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। তৃণমূল পৃথকভাবে সরকারবিরোধী অবস্থান তীব্র করেছে।নিজেদের মতো করে প্রতিবাদও জানিয়েছে। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এদিকে সরকার পক্ষ বনাম বিরোধীদের সংঘাতের অন্যতম ইস্যু হলো, অভিযোগ তোলা হচ্ছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে যখনই সরকার বিরোধী কোনও প্রসঙ্গ কিংবা দাবি তোলা হচ্ছে, তখনই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে মাইক্রোফোন। উল্লেখ্য, এই একই অভিযোগ করেছেন রাহুল গান্ধী লণ্ডনে। তিনি বলেছিলেন, ক্রমেই গণতন্ত্রকে সরিয়ে ভারতের সংসদ ও সমাজে স্থান করে নিচ্ছে স্বৈরতন্ত্র। সংসদে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। মাইক্রোফোন অফ করে দেওয়া হয়। এই একই অভিযোগ আজ প্রায় সব বিরোধী দলই তুলেছে। রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকর অবশ্য বলেছেন, আমি সকলকেই সমানভাবে বলতে দেওয়ায় বিশ্বাসী। কোনও ভাবেই কারও বলার অধিকার আমার পক্ষ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এরকম অভিযোগ তোলা সঙ্গত হবে না।আগামীকালও একইভাবে এই ইস্যু তো বটেই, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিকে দিয়ে বিরোধীদের নাস্তানাবুদ করে আদতে প্রতিহিংসার রাজনীতিই করা হচ্ছে, এই অভিযোগে সরব হবে বিরোধীরা। কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ইডি সিবিআই দিয়ে মানুষের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। সংসদে আমর মানুষের কথাই তুলব।