কালীঘাটে অখিলেশ

 কালীঘাটে অখিলেশ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে একদিকে কংগ্রেসকে সামনে রেখে একটি বিরোধী জোট। অপরদিকে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আরেকটি বিজেপি বিরোধী জোট করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দ্বিতীয় জোটটি নিয়ে আরও একটু খোলাসা করে বললে যেটা দাঁড়ায়, সেটি হলো ‘অকংগ্রেসি তৃতীয় ফ্রন্ট’। শুক্রবার সমাজবাদী পার্টির দুইদিনের সাংগঠনিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছেন সপা সুপ্রিমো অখিলেশ সিং যাদব। এদিনই বিকাল পাঁচটায় বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে মমতার সাথে বৈঠক করেন অখিলেশ যাদব। এরপরই জল্পনা তুঙ্গে উঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে অকংগ্রেসি তৃতীয় ফ্রন্টের দিকে ঝুঁকছেন মমতা-অখিলেশ। তার সলতে পাকাতেই কালীঘাটে গেছেন এসপি নেতা। অনেকের মতে মমতা-অখিলেশের মুলাকাত তৃতীয় ফ্রন্টের প্রথম পদক্ষেপ। অকংগ্রেসি জোট করার কাজটা এখান থেকে শুরু হতে চলেছে।শুক্রবার কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে অবশ্য তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি অখিলেশ। এই ব্যাপারে বলেন, যা কথা হবে মমতার বাড়িতে। তা এখন বলা যাবে না। তবে বিজেপিকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। বলেন, বিজেপি লাগাতার সংবিধান, গণতন্ত্রকে আঘাত করছে। বিপক্ষ যাতে সরব না হয়, সেই চেষ্টা করছে। প্রতিবাদ করলেই পিছনে এজেন্সি লাগিয়ে দিচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের বহু নেতা মিথ্যে মামলায় জেলে। যে দলকে বিজেপি ভয় পায়, তাদের ঘরে ইডি-সিবিআই পাঠিয়ে দেয়।
যতটুকু খবর, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তৃতীয় ফ্রন্ট করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এর পিছনে প্রধান কারণ হচ্ছে কংগ্রেস। সম্প্রতি কংগ্রেসের প্ল্যানারি বৈঠকে তৃতীয় ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো।শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রকৃত বিজেপি বিরোধী বলতেও কংগ্রেসের আপত্তির কথা সামনে চলে আসে। ২০২৪ বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসই প্রধান শক্তি হিসাবে এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বেই বিরোধী ফ্রন্ট গড়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।কংগ্রেসের এই মনোভাবের পরই স্পষ্ট হয়ে যায় বিজেপি বিরোধী জোটের চাবিকাঠি এবার কংগ্রেস নিজের হাতে রেখেই সামনে এগোতে চায়। যারাই এই জোটে আসতে চাইবে, তাদেরকে কংগ্রেসের নেতৃত্ব মেনেই আসতে হবে। বার্তাটা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একপ্রকার স্পষ্টই ছিলো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানে রাহুল গান্ধীকে নেতা মেনে বিজেপি বিরোধী সব দল এক ছাতার নিচে আসতে পারবে কি না?এই প্রশ্নের জবাব আগেও পাওয়া যায়নি, এখনো পাওয়া যাচ্ছে না, ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে কি না? তা এখনই হলফ করে বলা যাচ্ছে না।তার কারণ মমতা-অখিলেশের তৎপরতা ফের একবার অকংগ্রেসি তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনা উসকে দিয়েছে। রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কারণেই কংগ্রেস জোটে যাওয়া মমতার পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া সম্প্রতি তিন রাজ্যে ভোটের ফল এবং বঙ্গের একটি বিধানসভা ক কেন্দ্রে উপনির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবি মমতাকে জাতীয় রাজনীতির অঙ্গনে অনেকটাই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। তার উপর বঙ্গে দুর্নীতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, মমতা এখন ঘরে বাইরে ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিজেপি বিরোধী অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও এই মুহুর্তে মমতাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে এই সময়ে মমতা-অখিলেশ বৈঠক আর কিছু হোক না হোক, মমতা একটু বাড়তি অক্সিজেন পাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.