এক বছরে লোকসান ৮০ কোটিরও বেশি!

 এক বছরে লোকসান ৮০ কোটিরও বেশি!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে আর্থিক দিক দিয়ে লোকসান, বেড়েই চলেছে।৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরে ঝাঁ চকচকে অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করে যাত্রী পরিষেবা চালুর পরও বিমানবন্দরের লোকসান কমেনি। বরং লোকসানের গতি কেবল বাড়ছেই। ছোট বড় মিলিয়ে গোটা ভারতে ১২৩টি বিমানবন্দর রয়েছে। একটি পরিসংখ্যানে জানা গেছে, দেশের বিমানবন্দরগুলির মধ্যে লোকসানের তালিকায় আগরতলা বিমানবন্দরের স্থান তৃতীয়। সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানে তুলে ধরা হয়েছে গত ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কোন বিমানবন্দরে কত লাভ, আবার কোন বিমানবন্দরে কত লোকসান হয়েছে।পরিসংখ্যানে দশটি বিমানবন্দরের লাভের অঙ্ক দেওয়া হয়েছে। আবার দশটি বিমানবন্দরের লোকসানের অঙ্কও দেওয়া হয়েছে। লোকসানে চলা যে দশটি বিমানবন্দর পরিসংখ্যানে তুলে ধরা হয়েছে তার ক্রমিক নং অনুযায়ী এক নম্বরে রয়েছে চেন্নাই বিমানবন্দরও। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে চেন্নাই বিমানবন্দরে লোকসান হয়েছে ১৮৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। দেরাদুন বিমানবন্দরে এই সময়ে লোকসান হয়েছে ৯৮ কোটি ২ লক্ষ টাকা। তারপরই এই সময়ে লোকসান হয়েছে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে ৮০ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা ৷ চতুর্থ লোকসানে চলা বিমানবন্দরের নাম হল হল দিল্লীর সফদরজঙ বিমানবন্দর।লোকসান ৬৮ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। পঞ্চম লোকসান হল বিজয়ওয়াড়া, লোকসান ৬৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা। ষষ্ঠ লোকসান ৫৬ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা বারাণসী বিমানবন্দর। সপ্তমে ভুপাল বিমানবন্দর। লোকসান ৫৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা, অষ্টম ভাদোদরা বিমানবন্দর, লোকসান ৫১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। নবম স্থানে রাজামাণ্ডি বিমানবন্দরে লোকসান ৪৬ কোটি ৫ লক্ষ টাকা ও লোকসানের দশম স্থানে রয়েছে রাঁচি বিমানবন্দর। লোকসান ৪৫ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। লাভের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। লাভ হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১৪৫ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসাবে লাভে রয়েছে পুনে বিমানবন্দর – ৩৯ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। ২০ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা লাভ করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শ্রীনগর বিমানবন্দর। ৫ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা লাভ করে কানপুর বিমানবন্দর রয়েছে চতুর্থ স্থানে। পঞ্চম স্থানে রয়েছে লেহ বিমানবন্দর। লাভ করেছে ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দ্বারভাঙ্গা বিমানবন্দর। লাভ ২ কোটি ১ লক্ষ টাকা। ভেলোর বিমানবন্দরের লাভ ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা।এদিকে, আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে ২০২১- ২২ অর্থবর্ষে ৮০ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা লোকসান হওয়ায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।এত বিপুল টাকা কেন লোকসান হল আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এই বিমানবন্দরে লোকসান শুধু এখনই নয়,বেশ কয়েক বছর ধরেই লোকসানে চলছে বিমানবন্দরটি। আগে পুরানো টার্মিনাল ভবনে ছিল যাত্রী পরিষেবা। গত ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসে বিমানবন্দরের নতুন জায়গায় নতুন অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করে যাত্রী পরিষেবা শুরু করা হয়। জানা গেছে এত টাকা ব্যয়ে নতুন টার্মিনাল ভবন করা হলেও বিমান পরিষেবায় বিমান সংখ্যা সেইভাবে বাড়ছে না। কার্গো বুকিং বন্ধ করে রাখায় লোকসান হচ্ছে।বিমানবন্দর নতুন টার্মিনাল ভবনের ভেতর স্টল দেওয়ার জন্য ঘর থাকলেও ভাড়া অস্বাভাবিক হওয়ায় কোনও ব্যবসায়ী স্টল নিতে আসছেন না। বিমানবন্দরের ভেতর গাড়ি প্রবেশে অতিরিক্ত এন্ট্রি ফি নেওয়ায় ও গাড়ির পার্কিং চার্জ অস্বভাবিক হওয়ায় গাড়ি নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রেও গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। তাতেও লোকসান হচ্ছে। তাছাড়াও অন্যান্য আরও বিষয়ও রয়েছে। তবে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার আগরতলা বিমানবন্দর অধিকর্তা কে সি মিনা জানান, অপারেশনাল খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বিমানবন্দরে লোকসান হচ্ছে। বিমানবন্দরে অপারেশনাল কাজের জন্য ও অন্যান্য কাজে চাকরিরত কর্মচারীদের বেতনভাতায়ও প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। সিআইএসএফের বেতন ভাতা সবই দিতে হচ্ছে বিমানবন্দর অথরিটিকেই। বিমানবন্দর অধিকর্তা আরও জানান, কোভিড পরিস্থিতির জন্য বিমান পরিষেবা অনেকদিন বন্ধ ছিল। তখন কম বিমান চলাচল করেছে। কোভিডের সময় বিমানে যাত্রীসংখ্যাও ছিল একেবারে কম। তাতেও আয় কম হয়েছে বিমান বন্দরের। আগে পুরানো টার্মিনাল ভবনটি ছিল ১০ হাজার বর্গ ফুট জুড়ে। নতুন টার্মিনাল ভবনের বর্গফুট হল ৩০ হাজার। তাতেও খরচ বেড়েছে। এসব কারণে বিমানবন্দরে লোকসান হয়েছে বলেও তিনি জানান।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.