‘ডব্লউ’ উঠে গেল ট্যুইটার থেকে
ট্যুইটারের সিইও এলন মাস্কের কাণ্ডে ফের একবার হকচকিয়ে গেল গোটা বিশ্ব। তবে এবার প্লাটফর্মের মধ্যে কিছু পরিবর্তন না করলেও তার অভিনব পদক্ষেপ আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। নিজের সংস্থা ট্যুইটার থেকে হঠাৎ মুছে ‘দিয়েছেন ‘ডব্লিউ’ বর্ণটিকে। আর তাতেই ইলনের সংস্থার নাম বদলে যাওয়ার একটা আভাষ মিলেছে।
ট্যুইটারের সিইও এর কথায়,সান ফ্রান্সিস্কোতে অবস্থিত সদর দফতরের যিনি জমির মাশিক তার দাবি, ‘আমরা আইনত ট্যুইটার সাইন থেকে কখনও ‘ডব্লুউ’ শব্দটি সরাতে পারব না, তাই আমরা ওই শব্দটির ব্যাকগ্রাউন্ডে রঙ করে দিয়েছি, সমস্যা মিটে গেলে আবার স্বমহিমায় ফিরবে ‘ডব্লুউ’। এই বদলের ফলে ট্যুইটার লোগো বর্তমানে হয়ে উঠেছে টিটার। বহু ইউজার জানিয়েছেন, এই রঙ করার কাজ অনেকদিন ধরেই চলছিল।ট্যুইটার লোগো বলতে মানুষের মাথায় আসে নীল পাখির ছবি। সেই নীল পাখিকে সরিয়ে কুকুরের ছবির ব্যবহার করেছিলেন ইলন। যদিও এই পরিবর্তন বেশিদিন স্থায়ী থাকেনি। কয়েক দিনের মধ্যেই ডোজকয়েনের ছবি পাল্টে ফের নীল পাখির ছবি বসানো হয় ট্যুইটারে। বর্তমানে ট্যুইটার ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপে ট্যুইটারের লোগো রয়েছে নীল পাখির ছবি। ট্যুইটারের পুরনো লোগো ফিরে এলেও, সদর দফতরে অবস্থিত ট্যুইটার বোর্ড থেকে কি ডব্লুউ বর্ণ ফিরে আসবে তা নিয়ে জোর আলোচনা নেটমহলে। ইলন মাস্কের এই পদক্ষেপে এখনও অবধি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি উক্ত বিল্ডিংয়ের ল্যান্ডলর্ড। উল্লেখ্য, নাম বদল করা ছাড়াও ট্যুইটারে মালিকানা পাওয়ার পর এই সদর দফতরের গোটা চিত্র পরিবর্তন করেছেন ইলন মাস্ক। আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে বিক্রি করেছেন আসবাবপত্র, রান্নাঘরের সামগ্রী এবং দামি ভাস্কর্য।এমনকি অফিসের গাছও বিক্রি করে দিয়েছেন ইলন। গত বছর অক্টোবর মাসে ট্যুইটার কেনার পরেই সিইও পরাগ আগরওয়ালকে বের করে দিলেন ইলষ। শুধু সিইও পরাগকেই নয়, ট্যুইটারের চিফ ফাইন্যানশিয়াল অফিসার নেড সেহগাল, সিএফও এবং আইন বিভাগের প্রধান বিজয়া গাড্ডেকেও চাকরি থেকে বের করে দিয়েছেন ইলন। পরাগের বিরুদ্ধে প্রমাণ নষ্টের অভিযোগ করেছিলেন ইলন। উল্লেখ্য ট্যুইটারে জাল বা স্প্যাম অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে বলেছিলেন ইলন। ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ তার প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হয়। আর সেই কারণেই চুক্তি বাতিল করেন বলে দাবি করেছিলেন টেসলার কর্ণধার।ট্যুইটারে বট, স্প্যাম
অ্যাকাউন্টের নিষ্পত্তি না করলে চুক্তি করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।এই নিয়ে পরাগ এবং মাস্কের মধ্যে তিক্ততা বাড়ে। শেষ পর্যন্ত সংস্থার মালিক হতেই পরাগকে চাকরি থেকে বের করে দিয়েছিলেন মাস্ক। তারপর ধাপে ধাপে ৭৫ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করেন। তবে সংস্থার সান ফ্রান্সিস্কোর সদর দফতরে গিয়ে নিজে কর্মীদের চাকরীর বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। ট্যুইটারে আয়ের ৯০ শতাংশ আসে ডিজিট্যাল বিজ্ঞাপন থেকে। বিভিন্ন সংস্থা ট্যুইটারে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার কারণে সম্প্রতি আয়ে ধাক্কা খায়। আগে ট্যুইটারে যে কোনও ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ব্লু টিক দেখানো হত। সঠিক উপায়ে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শেষ করলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই পরিষেবা ব্যবহার করা যেত। কিন্তু ইলন মাস্ক ট্যুইটার অধিগ্রহণের পরেই ঘোষণা করেছিলেন ট্যুইটারে ব্লু টিকের জন্য কিনতে হবে মাসিক সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে। এরপরেই শুরু হয় নতুন ট্যুইটার ব্লু সাবস্ক্রিপশন।