রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উত্তরপত্র কেন্দ্রীয়ভাবে মূল্যায়নের প্রস্তাব
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্যদের লিখিত পরীক্ষা কার্যত শেষ। শুধু বাকি রয়ে গেছে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের ও ভোকেশনাল বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা। মাধ্যমিকে ১৭ এবং উচ্চমাধ্যমিকে ১৯ এপ্রিল এই পরীক্ষাগুলি শুরু হবে। এর পরই পর্ষদের চলতি ২০২৩ সালের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। পরীক্ষা শেষ হয়ে আসার সময় থেকে পর্ষদের তরফে পরবর্তী পর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তোড়জোড় চলছে উত্তরপত্র মূল্যায়নের। ইতোমধ্যে এর জন্য প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষক বাছাইয়ের কাজ চলছে। রাজ্যের আট জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের দিয়ে চিঠি প্রদান প্রক্রিয়া চলছে। এমতাবস্থায় এবার কেন্দ্রীয়ভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়নের চিন্তাভাবনা চলছে। মূলত এ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের তরফে পর্ষদকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্তরের পর্ষদের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমতুল মাদ্রাসা আলিম এবং মাদ্রাসা ফাজিল থিওলজি, ফাজিল কলার উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য। এক্ষেত্রে সরকারের তরফে প্রাথমিকভাবে বিশাল আয়তনের একটি সভাগৃহ বাছাই করা হয়েছে। আর সেটি হলো রাজ্যের আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণ। সেখানে একসঙ্গে হাজার লোকের বসার জায়গা রয়েছে। রয়েছে শৌচাগার সহ থাকার সুবিধা। ফলে
পর্ষদের পরীক্ষকদের তরফে এক সঙ্গে বসে কেন্দ্রীয়ভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়নে অংশ নিতে পারবে। এতো দিন ধরে পর্ষদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়ে আসছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে।
উচ্চমাধ্যমিকে আগরতলার মহারাণী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ে চলছে মূল্যায়নের কাজ। মাধ্যমিক চলছে আগরতলা শহরেরই বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। তার মধ্যে রয়েছে নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতন, বাণী বিদ্যাপীঠ, শিশু বিহার, বোধজং উচ্চতর বালিকা এবং বালক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়নে অংশগ্রহণকারীদের একাংশের গত কয়েক বছর ধরে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে শহিদ ভগৎ সিং যুব আবাসে। উল্লেখিতদের বেশিরভাগই অবশ্য বাড়ি থেকে আসা- যাওয়া করে উত্তরপত্র মূল্যায়নে অংশ নিচ্ছেন। অনেকে আবার নিজের উদ্যোগে থাকার ব্যবস্থা করছেন। এসব বিদ্যালয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করাতে গিয়ে পরিকাঠামোগত নানা সুবিধা মিলছে পর্ষদের। উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পর্ষদের কাছে প্রধান সহায় হিসাবে দেখা দেয় বিদ্যালয়গুলির শ্রেণীকক্ষে থাকা বেঞ্চ। আর পর্ষদের পক্ষে উত্তরপত্র মূল্যায়নের আগে বাছাই করে আলাদা আলাদাভাবে রাখা সহ মূল্যায়নের পর এগুলি রাখার ক্ষেত্রেও দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারাজনিত সুবিধা মিলছে পর্ষদের। এদিক থেকে অবশ্য হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণ পিছিয়ে রয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে বিশাল আয়তনের ভবন থাকলেও এতে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আলাদা কক্ষ নেই। নেই বেঞ্চ। ফলে এখানে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বাইরে থেকে প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিল ভাড়া করা ছাড়া বিকল্প নেই। তাতে পর্ষদের খরচ বাড়ার সম্ভাবনা আছে। ফলে পুরো বিষয়টি ঝুলে আছে এখন পর্যন্ত। চূড়ান্ত হয়নি উত্তরপত্র মূল্যায়ন কোথায় হবে তা। তাছাড়া চূড়ান্ত হয়নি পর্ষদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন কবে থেকে শুরু হবে তাও। প্রাথমিকভাবে স্থির হয় যে চলতি এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে মূল্যায়ন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটা সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে মূল্যায়ন শুরু হবে মে মাসের একেবারে শুরুতে, ২ তারিখ থেকে। এ বছর পর্ষদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ জন পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী ৩৭০০-র মতো। মাধ্যমিকে অংশ নিয়েছে প্রায় ৪৩০০০ জন। তাদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য প্রধান পরীক্ষক, সংশোধক ও পরীক্ষক মিলিয়ে প্রায় এক হাজার অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রয়োজন। মাধ্যমিক ৭টি এবং উচ্চমাধ্যমিকের ২৪টি বিষয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় পর্ষদের সচিব ড. দুলাল দের সঙ্গে। তিনি খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান সব কিছু আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি কিছু।