রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
একাংশ টেট পরীক্ষার্থীর অনৈতিক দাবি ঘিরে বিভ্রান্তি
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || সম্প্রতি টিআরবিটি পরিচালিত ২০২২ সালের (টি-টেট) টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল বলে পরীক্ষার্থীদের একটা মহল থেকে অভিযোগ ওঠে। ওই পরীক্ষার্থীরা গত ক’দিন ধরেই দফায় দফায় সাংবাদিক সম্মেলন করে টিআরবিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলছে। এই নিয়ে কিছু কিছু মহলে বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা কী? তা জানতে বুধবার টিচার্স রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরার (টিআরবিটি) পরীক্ষা নিয়ামক প্রত্যুষ রঞ্জন দেবের সাথে যোগোযোগ করা হয়।তিনি প্রতিবেদককে স্পষ্টভাবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। ২০২২ সালের কিছু টেট পরীক্ষার্থী ধারবাহিকভাবে অসত্য অভিযোগ প্রচার করে চলেছে। ওই সব পরীক্ষার্থী গত দশ দিনের মধ্যে বেশ কয়েকবার বোর্ড অফিসে এসেছে। তাদের সঙ্গে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিরামকের বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু ওই একাংশ পরীক্ষার্থী বাইরে গিয়ে মিডিয়াকে বলছে, তাদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।কেউ তাদের কথা শুনছে না।এরা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং বেআইনি দাবি জানিয়ে অযথা বিভ্রান্তি তৈরি করছে।পরীক্ষা নিয়ামক বলেন, ২০২২ সালে টেট ওয়ান পরীক্ষার্থী ছিলো ১৬ হাজার ৪০০ উপরে। টেট-টু পরীক্ষার্থী ছিলো ২১ হাজার ৮০০ উপরে। দুটো মিলিয়ে ৩৮ হাজারের উপরে ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে টেট ওয়ান ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ইং এবং টেট-টু পরীক্ষা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ইং।
নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শেষে সম্ভাব্য উত্তরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে এই বছরের জানুয়ারীর চার তারিখ। সম্ভাব্য উত্তরপত্র প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ দিয়ে বলা হয়, এই উত্তরপত্র নিয়ে যদি কারও অভিযোগ, মতামত থাকে তাহলে অনলাইনে জানানোর জন্য। এরজন্য পাঁচ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। সেই মতো অভিযোগ ও মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর সেই অভিযোগ ও মতামতগুলি সাবজেক্ট এক্সপার্টদের কাছে পাঠানো হয়। পেপার ওয়ানের জন্য ছয় জন এবং পেপার টু-এর জন্য দশ জন সাবজেক্ট এক্সপার্ট রয়েছে। তারা অভিযঅভিযোগ এবং মতামতগুলি পর্যালোচনা করে বোর্ডকে লিখিতভাবে জানান। উত্তর কি হবে? এবং কি সোর্স,
সেটাও বোর্ডকে জানিয়ে দেয়। এটা গোপন থাকে। একমাত্র আদালত চাইলে বোর্ড সেটা আদালতকে দেখাতে পারে। এটাই নিয়ম। সাবজেক্ট এক্সপার্টদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতি মাসের ছয় এপ্রিল চূড়ান্ত উত্তর কী? তা প্রকাশ করা হয়।
বিস্ময়কর ঘটনা হলো, চূড়ান্ত উত্তর প্রকাশ করার পরই একাংশ (২০ থেকে ২৫ জন) পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রে ভুল ছিলো বলে প্রশ্ন তুলে। তাদের দাবি সাবজেক্ট এক্সপার্টের মতামত বাতিল করতে হবে ইত্যাদি।পরীক্ষা নিয়ামক আরও জানান,প্রশ্নপত্রে যদি ভুল থাকে,তাহলে পরীক্ষার পরদিনই তো এই নিয়ে শোরগোল পড়তো।তাছাড়া, পরীক্ষার সমস্ত নিয়মকানুনে উল্লেখ করা থাকে যে, ‘ফাইনাল আনসার কী’ প্রকাশের পর পরীক্ষার্থীদের কোনও রকম দাবি বা মতামত বোর্ড গ্রহণ করবে না। ২০২২ সালের টেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেও ওই একই নিয়ম অনুযায়ী ‘সম্ভাব্য আনসার কী’ এবং ‘ফাইনাল আনসার কী’ প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকেই টিআরবিটি সমস্ত রকমের পরীক্ষা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে গ্রহণ করে আসছে এবং তার ফলাফল প্রকাশ করে আসছে। ২০১৫ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একই নিয়মে বোর্ড কাজ করে চলেছে। অতীতে কখনও টিআরবিটি বোর্ডের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠেনি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু পরীক্ষার্থী যে দাবি জানাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক। নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করা বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়।এদিকে টিআরবিটি বোর্ডের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশিত ‘ফাইনাল আনসার কী’ অনুসারে ওই পরীক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হওয়ার মতো নম্বর পায়নি। এনসিইআরটির গাইডলাইন মোতাবেক টেট পরীক্ষার কার্ট অব মার্কস হচ্ছে জেনারেল ক্যাটাগরির জন্য ৯০ নম্বর এবং এসসি, এসটি, দিব্যাঙ্গদের জন্য ৮৩ নম্বর।