দুশো বছরের অবাক করা ঔষুধের দোকান ঢাকায়, এখানে মেলে ‘বাঘের দুধ’ ?

 দুশো বছরের অবাক করা ঔষুধের দোকান ঢাকায়, এখানে মেলে ‘বাঘের দুধ’ ?
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দুশো বছরের প্রাচীন এক আশ্চর্য ওষুধের দোকান। পুরোনো ঢাকার নবাবপুর রথখোলার ২০০ বছরের পুরোনো স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার ছোট্ট দোকানটিতে সারবন্দি তাকের মধ্যে জং ধরা টিনের বাক্সগুলিতে রাখা থাকে দুর্লভ এবং সব দুষ্প্রাপ্য গাছের শেকড়বাকড়।বৃদ্ধ তারক,কুসুমদানা,অশ্বগন্ধা, আড়াই গোটা, প্রথম চাপের সরিষার তেল, আতশ, কবাব চিনি, শৈলজ, রতনজোত, আকড়কড়া থেকে শুরু করে কত শত যে ভেষজ। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রোগীরা দোকানে এলে, দোকানের কর্মীরাই ওষুধ বানিয়ে দেন। রোগীদের মধ্যে অধিকাংশের বক্তব্য, এগুলি ব্যবহারে তারা সুফল পেয়েছেন। দোকানির আসনে বসে থাকা সুজিত ও তার ভাই বাবু বণিক দোকানের ‘ডাক্তার’। কোন রোগের কী ওষুধ দিতে হবে, সেগুলি কীভাবে সেবন করতে হবে, ওষুধসমেত তারাই বলে দেন। ভেষজ এক-একটি উপাদানের গুণাগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে তারা রোগীদের বোঝান। ডাক্তারি শাস্ত্রে প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও কীভাবে তারা এত কিছু মনে রাখেন আর কোথা থেকে শিখলেন, তাও বড় অদ্ভুত।

দুশো বছরের এক আশ্চর্য দোকান, যেখানে মেলে দুষ্প্রাপ্য ওষুধও, একসময় মিলত  বাঘের দুধ! | The Business Standard


সংবাদমাধ্যমেকে সুজিত বণিক বলেছেন,বংশানুক্রমিক ভাবে আমাদের এই ব্যবসা চলছে। দাদা-বাবার থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমার পড়াশোনার বিষয় ছিল জৈবপ্রযুক্তি এবং মেডিসিন। বায়োটেকনোলজি পড়তে গিয়ে নানা সমস্যার উৎপত্তি ও রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আর মেডিসিন পড়ার ফলে রোগের ওষুধ সম্পর্কে জেনেছি।’ তিনি জানান, এই দোকানে রোগের কারণ, পারিবারিক রোগের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রোগীদের ওষুধ তথা ভেষজ দেওয়া হয়। সুজিতবাবুর দাবি, প্রকৃতি থেকে উৎপাদিত এসব ওষুধ কখনও ক্ষতি করে না। বরং দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকতে চাইলে ভেষজ ওষুধের কার্যকারিতা বেশি।কথিত আছে, ১৮২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দোকানে এক সময় বাঘের দুধও পাওয়া যেত।এ প্রসঙ্গে সুজিতবাবু বলেন, ‘রূপকথার গল্পের মতো হলেও এটা আংশিক সত্য। এখনও পাওয়া যায়। তবে বাঘ থেকে দুধ সংগ্রহ করে আনা হয় না, কৃত্রিম উপায়ে সেই দুধ তৈরি করা হয় বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ তরা বাঁশ থেকে। বাঁশ পিষে বার করা সাদা জল চোখ সর্বরোগহর ধন্বন্তরির মতো। প্রতি কিলো বাঁশের জল বার করতে খরচ পড়ে ৮ হাজার টাকা।কবিরাজি, হেকিমি ও বনাজী ওষুধ মিলিয়ে ৩ হাজারের উপর উপাদান পাওয়া যায় এই দোকানে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা তো বটেই, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, স্পেন-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসব বনজ উপাদান সংগ্রহ করেন সুজিতবাবুরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.