মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
নিলামে উঠছে বিশ্বের বৃহত্তম গণ্ডারের খামার
ত্রিশ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ধনকুবের ব্যবসায়ী জন হিউম তার সঞ্চিত অর্থের একাংশ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বের বৃহত্তম গণ্ডারের খামার। তারপর গত তিন দশক খামারটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে নিজের সঞ্চিত অর্থের বাকি অংশ ব্যয় করেছেন তিনি। কিন্তু এখন প্রায় শেষ হয়ে গেছে তার সঞ্চিত অর্থ। খামারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে ইচ্ছুক কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানও যোগাযোগ করেনি হিউমের সঙ্গে।এই পরিস্থিতিতে তাই বাধ্য হয়েই এটি
নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৮১ বছর বয়সি হিউম।দুই হাজার একর আয়তনের এই খামারটিতে বর্তমানে বিভিন্ন বয়সি দুই হাজার গণ্ডার আছে। আর আছে খামারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। এগুলোই নিলামে তোলা হবে, রবিবার এএফপিকে দেওয়া এক জুম সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান হিউম, যিনি ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথমসারির প্রাণী সংরক্ষণবিদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। হিউম বলেন, চলতি সপ্তাহে বুধবার অনলাইনে এই নিলাম শুরু হবে। খামারটির প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছে এক কোটি ডলার।যারা নিলামে খামারটি কিনবেন— তাদেরকে অবশ্যই এক কোটি ডলারের ওপর দর হাঁকতে হবে। হাতির পর গণ্ডারকে বিশ্বের বৃহত্তম স্থলচর প্রাণী বলে ঘণ্য করা হয়। এ মুহূর্তে বিশ্বে যত সংখ্যক গণ্ডার রয়েছে, সেসবের আশি `শতাংশেরই বসবাস দক্ষিণ আফ্রিকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোতে। আফ্রিকার চোরাশিকারী বা পোচারদের কাছে সবচেয়ে আকাঙিক্ষত প্রাণীগুলোর একটি হলো এই গণ্ডার; আর তার প্রধান কারণ এই প্রাণীটির শিং। গণ্ডারের শিং ঠিক গরু-ছাগল-মহিষ বা হরিণের শিংয়ের মতো নয় ৷ গণ্ডারের শিংয়ের মূল উরকরণ ক্যারোটির নামের একটি জৈব রাসায়নিক পদার্থ। মানুষের চুল-নখও এ উপাদানে তৈরি। চিন, ভিয়েতনাম, লাউসসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যগত বা কবিরাজি ওষুধ তৈরিতে গণ্ডারের শিং ব্যবহার করা হয়। সেসব দেশের জনগণের মধ্যে এসব কবিরাজি ওষুধের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।গণ্ডারের শিং কেনা-বেচার পুরো ব্যাপারটাই হয় চোরাবাজারে। ধারণা করা হয়, চোরা বাজারে প্রতি কিলোগ্রাম গণ্ডারের শিং বিক্রি হয় ষাট হাজার ডলার বা বাংলদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার টাকায়। সরকারের কড়াকড়ির কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ আফ্রিকায় খানিকটা হ্রাস পেয়েছে চোরাশিকারীদের তৎপরতা, কিন্তু এখনও গণ্ডার শিকার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বছরজুড়ে চোরাশিকারিদের কবলে পড়ে প্রাণ গেছে ৪৪৮টি গণ্ডারের।শিং ও গায়ের রঙের বিবেচনায় বিশ্বজুড়ে গণ্ডারের দুটি প্রজাতি দেখা যায়—এশীয় এবং আফ্রিকান।আফ্রিকান গণ্ডারের গায়ের রং তুলনামূলকভাবে সাদা। আন্তর্জাতিক প্ৰাণী সংর সংরক্ষণবাদী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আফ্রিকায় মাত্র আঠারো হাজারের মতো গণ্ডার অবশিষ্ট আছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও কয়েকটি ব্যক্তিমালিকানাধীন গণ্ডারের অভয়ারণ্য আছে, তবে জন হিউমের অভয়ারণ্যটি সবচেয়ে বড়। প্রাক্তন এই রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী এএফপিকে বলেন, ‘জীবনে কোনও এক পর্যায়ে আমি এই প্রাণীটিকে ভালোবেসে ফেলি এবং গণ্ডার হত্যা বন্ধে প্রচার-প্রচারণা অভিযানে অংশ নেওয়া শুরু করি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের দিকে এই প্রকল্পটি গড়ে তুলি। আমি যখন প্রকল্পটি শুরু করেছিলাম, সেসময় বিশ্বে গণ্ডারের সংখ্যা আরও বেশি ছিল।