মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
জুনেই আগরতলা থেকে উড়বে আন্তর্জাতিক বিমান : সুশান্ত
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || অবশেষে প্রায় সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে বিমানে বহিঃরাজ্যে জিনিসপত্র, মালামাল নিতে কার্গো বুকিং শুরু হয়েছে। এ দিন বিমানবন্দরে নতুন নির্মিত আধুনিক কার্গো ভবনও চালু করা হয়। কার্গো ভবনের উদ্বোধন করেন রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। বিমানবন্দরের এই কার্গো ভবনেই কার্গো বুকিং শুরু হয়েছে।
বিমানে যাওয়া আসা সব ধরনের বুকিং কার্গো এই কার্গো ভবন থেকে হবে। বিমানে নেওয়ার কার্গো বুকিং ও হ্যাণ্ডলিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছে আপাতত ইণ্ডিগো বিমান সংস্থা। গত সাড়ে চার মাস কার্গো বুকিং বন্ধ থাকায় আগরতলা থেকে বিমানে কলকাতা সহ বহিঃরাজ্যে মানুষের জরুরি চিঠিপত্র, পার্সেল, ভারতীয় ডাক বিভাগের ডাক, ক্যুরিয়ার সার্ভিসের ও ব্যবসায়ীর মালামাল, জিনিসপত্র না যাওয়ায় রাজ্যের মানুষ চরম বিপাকে পড়েন। সম্প্রতি রাজ্যের নতুন পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কার্গো বুকিং বন্ধ হয়ে থাকায় যে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেই বিষয়ে অবগত করে ও দ্রুত কার্গো বুকিং চালু করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকেও চিঠি দেন। রাজ্য পরিবহণ মন্ত্রী শ্রীচৌধুরীর এই চিঠির পরই দিল্লীর নির্দেশে ব্যুরো অব্ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি কার্গো বুকিং পুনরায় চালু করার দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করে। অবশেষে পরিবহণ মন্ত্রীর চেষ্টায় সুফল মেলে। সফলতা পাওয়া যায়। কার্গো বুকিং পুনরায় চালু হলো। রাজ্যবাসী, ব্যবসায়ী সকলেই তাতে স্বস্তি পেলেন। বিমানবন্দরের সমস্যা সমাধানে ও বিমান পরিষেবা সম্প্রসারণে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাও কয়েকদিন আগে দিল্লীতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এদিকে, ১ হাজার ২৭২ স্কোয়ার মিটার আয়তন বিশিষ্ট এই কার্গো ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সতেরো কোটি টাকা। প্রতি বছর এর মাধ্যমে মোট ৪০ হাজার ১৫০ মেট্রিকটন পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব হবে। যা পূর্বের তুলনায় প্রায় দশগুণ বেশি। প্রাথমিকভাবে ইণ্ডিগো এই পরিষেবা প্রদানের সাথে যুক্ত হয়েছে।কার্গো ভবনের উদ্বোধন করে পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিমানবন্দরের বিভিন্ন পরিষেবা দ্রুত শুরু করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।এই লক্ষ্যেই আজ থেকে কার্গো পরিষেবা, তিনদিন আগে বিমানবন্দরে প্রিপেইড অটো পরিষেবা প্রদান শুরু হয়েছে। তিনি ইণ্ডিগো বিমান সংস্থার আধিকারিকদের এই পরিষেবা প্রদানে যুক্ত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।এবং আশা প্রকাশ করেন অচিরেই অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলিও এই পরিষেবা প্রদানে এগিয়ে আসবে।শ্রীচৌধুরী আরও বলেন, এই কার্গো পরিষেবা বন্ধ থাকার ফলে রাজ্যের ব্যবসায়ীদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তিনি আশা করেন পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে।অনুষ্ঠানে পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ত্রিপুরার তিনদিকে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ।তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম থেকেই এই রাজ্যের বিমান ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়েছেন। এদিনের অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগরতলা-চিটাগাং আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আগরতলা থেকে সরাসরি সিঙ্গাপুর,ব্যাঙ্কক ইত্যাদি শহরের সাথেও বিমান পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পরিবহণমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের পুরানো টার্মিনাল ভবনের সামনে থেকে মহারাজার মূর্তিটিকে স্থানান্তরিত করা সম্ভব না হওয়ায় বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল ভবনের সামনে মহারাজা বীরবিক্রমের একটি নতুন ব্রোঞ্জের মূর্তি বসানো হবে। এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা।পরিবহণমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার রাজ্যের জনগণের স্বার্থে উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজ্য উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে।অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবহণ দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা, এয়ারপোর্ট অথরিটির অধিকর্তা কে সি মিনা।উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, পরিবহণ দপ্তরের কমিশনার সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য, নতুন এই ভবনে পচনশীল এবং অপচনশীল পণ্য, বিপজ্জনক পণ্যের জন্য কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা রয়েছে।