দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি করে নিঃসঙ্গতা, মত মার্কিন স্বাস্থ্যকর্তার।
নিঃসঙ্গতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।দিনে ১৫টি সিগারেট খেলে যতটা ক্ষতি হয় মানব শরীর, নিঃসঙ্গতা ততটাই ক্ষতিকারক।সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক মূর্তি।সার্জন জেনারেল বিবেক মূর্তি বিবিসিকে বলেন, “অতীত গবেষণায় দেখা গেছে, নিঃসঙ্গ ব্যক্তিদের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ বেশি।সামাজিকভাবে নিঃসঙ্গ ও বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের স্মৃতিভ্রংশ,স্ট্রোক,বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও অকালমৃত্যুর শিকার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।’তিনি বলেছেন,মার্কিন স্বাস্থ্য মন্ত্রক সামাজিক বিচ্ছিন্নতাকে স্থূলতা ও মাদকের অপব্যবহারের মতোই গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করার আহ্বান জানাচ্ছেন।বিবেক বলেন, ‘সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ আমেরিকান নিঃসঙ্গতায় ভুগছেন।দুই দশক আগে আমেরিকানরা প্রতিদিন সশরীরে বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের সঙ্গে গড়ে ৬০মিনিট সময় কাটাতেন।কিন্তু ২০২০ সালে তা কমে দৈনিক মাত্র ২০ মিনিটে নেমে আসে।শুধু আমেরিকা নয়,বিশ্বজুড়েই সামাজিক নিঃসঙ্গতা ও বিচ্ছিন্নতা দিন দিন বাড়ছে। করোনা অতিমারির সময় এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।’ বিবেকবাবু অনলাইন ও সমাজমাধ্যমে যোগাযোগের বদলে মানুষকে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, সহকর্মীদের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর আহ্বান জানান।তিনি বলেন, ‘বন্ধুর ফোনকলের জবাব দিন।একসঙ্গে খাবার খাওয়ার জন্য সময় বের করুন।ফোনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে মানুষের কথা শুনুন। একাকিত্ব মানুষের উপর দীর্ঘমেয়াদি চাপ তৈরি করতে পারে, যার ফলে সৃষ্ট প্রদাহ কোষ ও রক্তনালির ক্ষতি করে।’নিঃসঙ্গতার মহামারী তরুণদের বিশেষ করে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের বেশি ভোগাচ্ছে।আমেরিকায় এই বয়সি তরুণদের মধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিমাণ ৭০ শতাংশ কমেছে,মত সার্জন জেনারেলের।বিবেক মূর্তি পরামর্শ দিয়েছেন,কর্মস্থল,স্কুল, প্রযুক্তি কোম্পানি, সামাজিক সংগঠন, বাবা-মায়েরা যেন মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর উপর বিশেষ ভাবে সচেতন থাকেন।বিবেক বলেন, ‘সমাজমাধ্যম মানুষের মধ্যে একাকিত্ব বাড়িয়ে তুলছে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে মিথস্ক্রিয়া তৈরি হলে আদতে তার কোনও বিকল্প নেই।যোগাযোগের জন্য আমরা যত বেশি প্রযুক্তির দ্বারস্থ হয়েছি, ব্যক্তি পর্যায়ে মিথস্ক্রিয়া ততই হারিয়েছি।’