৩ বছর পর পুনরায় চালু সাব্রুমে শ্রীনগর সীমান্ত হাট
৩৮ মাস পর খোলা হলো দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার শ্রীনগরের সীমান্ত হাট। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবের হাত ধরে আরেকবার পূর্ণরূপ পেলো রাজ্যের সব থেকে জমজমাট উক্ত সীমান্ত হাট । আজ সকাল থেকেই কাতারে কাতারে দু’পারের জনগণ সীমান্ত হাটে আসার জন্য মুখিয়ে থাকে।
ফের আরেকবার যেন হাটের যৌবন ফিরে এলো। গত 2020 সালের দশই মার্চ সারা বিশ্বব্যাপী করোনার মহামারিতে হঠাৎ করে ছন্দপতন ঘটে শ্রীনগর সীমান্ত হাটের । করোনার মতো মহামারিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় হাট। শত শত জনগণের রুজিরোজগার বন্ধ হয়ে পড়ে। এক সময়ে পুরো সীমান্ত হাট পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। করোনার হ্রাস পরতেই আশা বাঁধে শ্রীনগর এবং বাংলাদেশের ছাগলনাইয়া এলাকার জনগণের, কবে চালু হবে উক্ত হাট। বাংলাদেশের ছাগলনাইয়া এলাকার নরুল আমিন, কৃষি বীজ বিক্রেতা মণিরুল আব্বাস এবং কার্তিক কর্মকারের মতো বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আজ সীমান্ত হাটে এসে তাদের মতামত জানাতে গিয়ে বলেন, যে দীর্ঘ আটত্রিশ মাস ধরে দুদেশের জনগণ মুখিয়ে ছিলো যে কবে শ্রীনগরের সীমান্ত হাট চালু হবে। করোনাকালে বন্ধ ছিলো ঠিক, কিন্তু করোনা বিদায় নিতে তাদের আশা ছিলো তা সহসাই খুলবে ৷ তা হলো না ৷ তার জন্য তাদের দীর্ঘ মাস অপেক্ষা করতে হলো। তবে মঙ্গলবার শ্রীনগরে সীমান্ত হাটের দ্বার মুক্ত হতেই নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের মেলা বসে। ভারতীয় জনতা মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ইলিশ আর বাংলাদেশের ইলিশ সুটকি। তাছাড়া স্থানীয় মাছ তো রয়েছে। প্রথম দিকে বাংলাদেশের মাছ ব্যবসায়ীরা দামের দিক থেকে চড়া করলেও শেষ দিকে তা ছিলো না ।
তীব্র দাবদাহে মাছ কিছুটা নরম হতেই দাম তলানিতে এসে ঠেকে। তাতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে এ পাড়ের জনতা। ছিলো বাংলাদেশের নানা জাতের বিস্কুট সহ বাংলাদেশের কাপড়। আজ কিন্তু ভারতীয় পণ্যের ততটা বিক্রি হতে দেখা যায়নি। কিছু দোকান থাকলেও তাতে এতটা বিক্রি ছিলো না। সংবাদ সূত্রে জানা যায়, যে ভারতীয় প্রসাসনের কড়াকড়িতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ ছিলো। ফেনী জেলার এডিএম অভিষেক দাস আজ দৈনিক সংবাদকে জানিয়েছেন, দিল্লী-ঢাকার মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরে দুদেশের সীমান্ত হাট চালু করা হয়। দুদেশের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে সবাই ইচ্ছে করলে সীমান্ত হাটে আসতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় হাজারো জনগণ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রসিদ কেটে হাটে আসতে পারবে। যে সমস্ত জনগণ হাটের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করে তাদের বৈধ নাগরিকত্ব দেখিয়ে হাটে প্রবেশ করতে হবে তিনি মন্তব্য করেন। এই দিকে ভারতীয় প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর এলাকার পাঁচ কিমিটির মধ্যে বসবাসকারী জনগণ তাদের আধার কার্ড দেখিয়ে হাটে প্রবেশ করতে হবে। তবে ভারতের দিক থেকে বারোশ জনগণ হাটে যেতে পারবে।
আজ সীমান্ত হাটে দাঁড়িয়ে এলাকার জনগণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যে দীর্ঘ আটত্রিশ মাস পরে তাদের চেষ্টাতে শ্রীনগরে সীমান্ত হাট ফের একবার চালু হয়েছে।