গোষ্ঠী সংঘর্ষে আতঙ্কিত ওপারের পার্বত্য চট্টগ্রাম
অনলাইন প্রতিনিধি:-শান্তির চুক্তি আড়াই দশক পেরিয়ে গেলেও আজও শান্তি ফিরেনি পার্বত্য চট্টগ্রামে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়জুড়ে অশান্তির আবহ যথারীতি বহাল। গোষ্ঠীগত সংঘর্ষের ডালপালা ক্রমশ ছড়াচ্ছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে পালা করে। গতকাল এক গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি মারা যায়। এই হত্যাকাণ্ডের পর আতঙ্কিত হয়ে লোকজন বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছে। গত মাসে এমন এক সংঘর্ষে আট ব্যক্তি মারা যান। ১৯৮৬ সালে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ীর সংঘর্ষের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির সাথে বাংলাদেশ সরকারের এক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই শান্তি চুক্তির পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া আধা লক্ষাধিক চাকমা শরণার্থী বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ফিরে যায়। প্রথম কয়েক বছর শান্তি বজায় থাকলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্বা জনজাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করার জন্য কৌশলী খেলা ভেতরে ভেতরে
চলতে থাকে। জুম্বা জনজাতির জনগণ শান্তি চুক্তির সুফল পুরো মাত্রায় পায়নি। তাদের মৌলিক দাবি আজও উপেক্ষিত। এর মধ্যে আবার অশান্তি। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন বৈরী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠে। আশ্চর্যজনকভাবে প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে থাকে। সুযোগ নিয়ে বৈরী গোষ্ঠীগুলি এলাকা দখলের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এবং ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেসি ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নিজেদের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই দুই বৈরী সংগঠনের অস্ত্রের আস্ফালনে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির জন্ম নিয়েছে। আটের দশকের ছায়া ক্রমশ প্রলম্বিত হচ্ছে।এখানে উল্লেখ্য যে আটের দশকে চাকমাদের অধিকার রক্ষার সংগঠন শান্তি বাহিনী সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে সমতল থেকে ধেয়ে আসা মুসলিম জনগোষ্ঠী লোকজন, চাকমাদের অধিকারকে লঙ্ঘিত করে জায়গা জমি কেড়ে নিতে শুরু করে। পুনর্বাসনপ্রাপ্ত মুসলিম জনগোষ্ঠীর লোকরা হামলা হুজ্জতি শুরু করে। যার অভিঘাতে হাজার হাজার চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন সব হারিয়ে জীবনে নিরাপত্তার খোঁজে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে চলে আসে। ভারত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে চাকমা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়। এদিকে শান্তি বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে নিজেদের শক্তি সংঘটিত করে পাল্টা প্রতিরোধে নামে ৷ দীর্ঘদিন চলে সংঘর্ষ। শেখ হাসিনার চেষ্টায় শান্তি ফিরে আসে ৷ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু এই শান্তি স্থায়ী হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে নতুন করে সংঘর্ষ সূত্রপাত হয়। হয়। গতকাল বান্দরবনে বম উপজাতি জনগোষ্ঠীর তিন ব্যক্তিকে গুলী করে হত্যা করা হয়। এর আগে আটজনকে গুলী করে হয়। এর আগে আটজনকে গুলী করে হত্যা করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামজুড়ে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ পার্বত্য চট্টগ্রামের আকাশের ঈশান কোণে নতুন করে কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আটের দশকের কালো ছায়ার আবহ পার্বত্য চট্টগ্রামজুড়ে।