রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
গেল্লালু ইয়েদুরাপ্পা
আজ থেকে নয় বছর আগে ক্ষমতায় এসেই কংগ্রেস মুক্ত’ভারত গড়ার হুঙ্কার ছুড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।শুধু তাই নয়,মোদির পথ অনুসরণ করে দলও সেই দিশায় এগিয়েছে।কিন্তু নয় বছরের যাত্রাপথে কংগ্রেসকে অবশ্য মুছে ফেলতে পারেনি মোদি এবং তাঁর দল।বরং কর্ণাটক পরাজয়ের সাথে সাথে দাক্ষিণাত্য থেকে মুছে গেল বিজেপি।আজকের দিনে এটাই বাস্তব।দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্য তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা—কোথাও এখন ক্ষমতায় নেই বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। দক্ষিণের এই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেষ্টার কোনও কসুর বাকি রাখেননি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাঁর বিশ্বস্ত অনুচর অমিত শাহ-সহ তামাম নেতৃত্ব।কোনও চেষ্টাই কাজে আসেনি।উল্টো মুখ পুড়েছে।দিনের শেষে হাসি ফুটলো কংগ্রেস নেতৃত্বের মুখে। প্রশ্ন হচ্ছে,এত চেষ্টা করেও কেন কর্ণাটকে এমন শোচনীয় ফল হলো পদ্ম শিবিরের?এই নিয়ে পদ্ম শিবিৱে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়তো হবে। সেই বিশ্লেষণ থেকে উঠে আসা ‘কারণ’ এবং ‘ভুল’গুলো সংশোধনের চেষ্টা হবে কিনা তা এখনই গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় না।কারণ,বিশ্বের এই বৃহত্তম দলে এখন গোষ্ঠীবিবাদ বড় হয়ে উঠেছে। দলের একাংশ তাত্ত্বিক নেতা এখন বাস্তবের সাথে সংযোগহীন হয়ে এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন,যা শুধু ভুলই প্রমাণিত হচ্ছে না বরং বুমেরাং হয়ে ফিরছে।হিমাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা থেকে ওই সব তাত্ত্বিক নেতারা যে শিক্ষা নেয়নি,তা পুনরায় প্রমাণিত হয়েছে এবার কর্ণাটকে।ত্রিপুরায় ডুবতে ডুবতে কোনও রকম তরিপার করা গেলেও কর্ণাটকে আর সম্ভব হয়নি। মাঝ নদীতেই পদ্ম নৌকা ডুবেছে। কিন্তু কেন?এই কেনর উত্তর খুঁজতে গিয়ে রাজনীতির পন্ডিত মহল প্রথমত যে কয়েকটি মূল কারণ চিহ্নিত করতে পেরেছেন,তার মধ্যে অন্যতম হলো দাক্ষিণাত্যে বিজেপির প্রবীণ নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে কোণঠাসা করা। যার হাত ধরে দক্ষিণের রাজ্যটিতে প্রথম সরকার গড়েছিল বিজেপি দলের কিছু নেতার কু-পরামর্শে এবং কলকাঠি নেড়ে সেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে কোণঠাসা করে নির্বাচনের একবছর আগে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলো বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব।প্রবীণ এই নেতার ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি। বিষয়টিকে তাঁরা ‘অপমান’ বোধ করে বদলা নিতে বিজেপি ছেড়ে ঝুঁকেছেন কংগ্রেসে।কর্ণাটকে বরাবরই বিজেপির বড় শক্তি লিঙ্গায়েত ভোট। ইয়েদুরাপ্পা,লক্ষ্মণ সাবদি, জগদীশ শেট্টারের মতো বড় মাপের লিঙ্গায়েত নেতাদের অপমান ভোটাররা মেনে নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী মোদি নন, কর্ণাটকে ম্যাজিকের নাম ‘ইয়েদুরাপ্পা’।এটা এবার নির্বাচনের আগে থেকে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কন্নড় রাজনীতিতে প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের প্রধান মুখ হচ্ছেন ইয়েদুরাপ্পা।শুধু মুখ নন, ইয়েদুরাপ্পা বলতে গেলে তাদের কাছে শেষ কথা।এই নেতার ইশারা ছাড়া লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের ১৭ শতাংশ ভোট পদ্মের বাক্সে আসা কঠিন।অথচ বিজেপির তথাকথিত তাত্ত্বিক নেতারা সেটা বুঝলো না ! প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশের যেখানেই সভা করতে গেছেন, সেখানেই মোদি-মোদি রব উঠতে দেখা গেছে।“মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়”দলের অন্দরেও এমন একটি মিথ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এবার কর্ণাটকে দেখা গেল ব্যতিক্রম। কর্ণাটকে মোদির সভায় মোদি-মোদি রব নয়,রব উঠলো ‘গেল্লালু ইয়েদুরাপ্পা’।কন্নড়ে ‘গেল্লালু’ শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ‘জয় হো’। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মাঝে স্থানীয় নেতার নামে ঘন ঘন জয়ধ্বনির নজির,চেষ্টা করেও মনে করা যাচ্ছে না।কিন্তু এই নজির এবার কর্ণাটকে দেখা গেছে।”বিজেপির নীতিনির্ধারক এবং তাত্ত্বিক নেতাদের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী হচ্ছেন বিএল সন্তোষ। তিনিই এবার কর্ণাটকে নির্বাচনি প্রভারি ছিলেন। হিমাচলেও ডুবতে হয়েছে। এইভাবে চললে কংগ্রেস
মুক্ত’ ভারত গড়ার স্বপ্ন অচিরেই ভঙ্গ হবে এ নিয়ে সন্দেহের কোনওঅবকাশ নেই। এখন দেখার পদ্ম শিবির কোন পথে হাঁটে।পদ্ম শিবির কর্ণাটক থেকে আদৌ কোনও শিক্ষা নেয় কিনা সেটা সময়েই বোঝা যাবে।