রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
বিমানে লাগামছাড়া ভাড়া যাত্রীরা চরম বিপাকে, ক্ষোভ
অনলাইন প্রতিনিধি || বিমানের টিকিটের অস্বাভাবিক চড়া মূল্যে দিকে যাতায়াতে বিমানযাত্রীরা পড়েছেন মহা বিপাকে। বিমান সংস্থাগুলি এই রুটে বিমান ভাড়া সাধারণ বিমানযাত্রীর নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে।আগরতলা-কলকাতা রুটে যাতায়াতে ট্রেন পরিষেবার অপ্রতুলতায় রাজ্যের মানুষকে জরুরি প্রয়োজনে বিমানের উপর নির্ভর করতে হয়। দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষেও এখন পর্যন্ত আগরতলা-কলকাতা রুটে যাতায়াতে সহজ ও সুবিধাজনক ট্রেন পরিষেবা প্রতিদিন নেই। যা রাজ্যবাসীর কাছে বিস্ময়জনক হয়ে ঠেকেছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারের ৫ বছরের শাসন ক্ষমতায়ও প্রতিদিনের জন্য আগরতলা- কলকাতা রুটে যাতায়াতে ট্রেন পরিষেবা না চালু হওয়ায় ট্রেন পরিষেবার উন্নয়নের প্রচারে রাজ্যবাসী বেকুব বনে যাচ্ছেন। ট্রেন তথা রেল পরিষেবার অপর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় রেল টিকিট সংকটে রাজ্যবাসীকে কলকাতায় যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে রাজ্যের মানুষকে বিমানে কলকাতায় যাতায়াতে বিমানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। প্রতিদিন যদি এই রুটে যাতায়াতে একটি বা দুটি ট্রেন চালু থাকতো
তাহলে রাজ্যবাসীকে কলকাতায় যাতায়াত করতে এভাবে নিত্যদিন চরম দুর্ভোগে পড়তে হতো না এমনটাই দাবি করছেন ক্ষুব্ধ মানুষ। রাজ্যে এখনও সেভাবে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা চালু না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীরা কলকাতা বা কলকাতা হয়ে অন্য রাজ্যে যান। উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ছাত্রছাত্রীরা কলকাতা বা কলকাতা হয়ে বহি:রাজ্যে যান। বেকার চাকরি প্রার্থীরাও এই রুটে যান। মানুষ জরুরি নানা প্রয়োজনে কলকাতা বা কলকাতা হয়ে ট্রেনে বা বিমানে বহি:রাজ্যে যান। কিন্তু দিনদিন বহি:রাজ্যে যাওয়া ও আসার মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও ট্রেন ও বিমানের সংকোচিত ও অপ্রতুলতা পরিষেবার মাসুল দিচ্ছেন রাজ্যবাসী। বিমানে কেবল ভিড় বাড়ছে। আর সেই সুযোগে বিমান সংস্থাগুলি ভাড়া যাত্রীর পকেট ফাকা করার জন্য লাগামহীনভাবে যাত্রী ভাড়া বাড়িয়েই চলেছে। ভাড়া নিয়ন্ত্রণেও অসহায় যাত্রীসাধারণের নাগালের মধ্যে রাখতে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের (ডিজিসিএ) কোনও হেলদোল নেই। রাজ্য সরকারও যাতে বিমানে অস্বাভাবিক এই ভাড়া নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে ভাড়া যাত্রীসাধারণের জন্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তথ্যভিত্তিক চিত্র তুলে ধরে দাবি জানান তা চাইছেন বিমানযাত্রীরা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ঘটনা হলো, আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে যাত্রী পরিষেবার নামে নতুন করে ইউজার ডেভেলপমেন্ট ফিস (ইউডিএফ) একলাফে অনেকটা বৃদ্ধি করেছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়া। নতুন ইন্টিগ্রেটেড অত্যাধুনিক টার্মিনালে বিমানযাত্রীর পরিষেবা চালু হওয়ায় কয়েকদিন আগে ইউজার ডেভেলপমেন্ট ফিস (ইউডিএফ) বৃদ্ধি পেয়ে যাত্রীপিছু ৭৯৭ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। আগে পুরানো টার্মিনাল ভবনে সাড়ে তিনশ টাকার মতো ছিল। এখন সাড়ে তিনশ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হলো ৭৯৭ টাকা। তাছাড়াও এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়া যাত্রীর কাছ থেকে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির নামে যাত্রীপিছু ২৩৬ টাকা আদায় করে নেয়। বিমান টিকিট কাটার সময় এই দুই ধরনের ফিসের টাকা যাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিবার আগরতলা থেকে কলকাতায় যেতে ৫,৮০০ টাকার নিচে কোনও টিকিট নেই। কোনও কোনও বিমানে বিশেষ করে রবিবারের সকালের বিমানগুলিতে ইণ্ডিগোর ভাড়া শনিবার সন্ধ্যায় ৭৮৬২ টাকা নেওয়া হয়। ইণ্ডিগো, এয়ার ইণ্ডিয়া সব বিমানেই ভাড়া যাত্রীর নাগালের বাইরে। অন্যান্য দিনের ভাড়াও আকাশছোঁয়া। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিমানবন্দরে নানা বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা চালু থাকায় যাতায়াতে যে সুবিধা রয়েছে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে সেই সুবিধা এখনও হয়ে ওঠেনি। আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে শুধু ইণ্ডিগো ও এয়ার ইণ্ডিয়ার বিমানের পরিষেবা এই রুটে চালু রয়েছে। অন্য বিমান সংস্থাগুলির বিমান এখানে চালু না থাকায় বিমান স্বল্পতায়ও আগরতলা-কলকাতা রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে যাত্রী ভিড়ের সুযোগ নিয়ে এই অস্বাভাবিক চড়া ভাড়া দাঁড় করিয়ে রেখেছে ক্ষুব্ধ বলে বিমানযাত্রীদের অভিযোগ। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বর্তমান রাজ্য সরকার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এমবিবি বিমানবন্দরে অ্যাভিয়েশন টার্বাইন ফুয়েলের উপর (এটিএফ) ভ্যাট ১৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে মাত্র এক শতাংশে নিয়ে আসে। তাতে বিমানবন্দরে এটিএফের মূল্য কমলেও রাজ্যের বিমানযাত্রীরা তার কোনও সুফল পাচ্ছেন না। ভাড়া আগের মতোই চড়া।