‘সরে জাঁহা সে আচ্ছা’র স্রষ্টা মুঘল সাম্রাজ্যের পর এবার পাঠ্যসূচি থেকে বাদ কবি ইকবাল।

 ‘সরে জাঁহা সে আচ্ছা’র স্রষ্টা মুঘল সাম্রাজ্যের পর এবার পাঠ্যসূচি থেকে বাদ কবি ইকবাল।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত এপ্রিল মাসেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ন্যাশানাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি তাদের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে ছেঁটে ফেলে গোটা মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস।তা নিয়ে ইতিহাসবেত্তা মহলে তোলপাড় শুরু হয়। সেখান থেকে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ফের একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল শুক্রবার জানায়, তাদের স্নাতকস্তরের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়তে চলেছে উর্দু কবি মহম্মদ আল্লামা ইকবালের অধ্যায়।রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এবং বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।সূত্রের খবর,পাঠ্যসূচি থেকে ইকবালের অধ্যায় বাতিলের এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে গ্রহণের জন্য খুব শীঘ্রই এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে পেশ করা হবে।ইকবাল একাধারে একজন কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও মনীষী।দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ‘সারে জাহাঁ সে আচ্ছা হিন্দুস্থা হামারা’-র অমর স্রষ্টা তিনি। ইকবাল পাকিস্তানের জাতীয় কবি।১৮৭৭ সালে তিনি অবিভক্ত ভারতবর্ষের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন।দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকস্তরে ষষ্ঠ পেপারে ‘মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল থট’
শিরোনামের একটি অধ্যায়ে রয়েছে কবি ইকবালের জীবনী। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইকবালের জীবনী ছাত্রছাত্রীদের আর পড়ানো হবে না।মূলত বিখ্যাত ভারতীয় চিন্তাবিদদের বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করানোই এই পাঠ্যসূচির উদ্দেশ্য।এই কোর্সে ইকবাল ছাড়াও রামমোহন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, ভীমরাও আম্বেদকর ও পণ্ডিত রামাবাইকে নিয়ে স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে।এ বিষয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক সদস্য
বলেন, ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস পরিবর্তনের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।আর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই আল্লামা ইকবালের একটি অধ্যায় সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।তবে ইকবালকে নিয়ে গেরুয়া শিবিরে অনেক দিন ধরেই আপত্তি রয়েছে। এবিভিপি কবি ইকবালকে ‘ধর্মান্ধ ধর্মতাত্ত্বিক পণ্ডিত’ হিসেবে দেখে এবং দেশভাগের নেপথ্যেও তাকে দায়ী করে।দিল্লি বিশ্ববিদ্যালেয়র এই সিদ্ধান্তের পর এবিভিপির তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মহম্মদ ইকবালকে পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।তিনি জিন্নাকে মুসলিম লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সহযোগিতা করেছিলেন। ভারত ভাগের ক্ষেত্রে মহম্মদ ইকবাল জিন্নার মতোই দায়ী।’ যদিও ইতিহাস বলে, জিন্নার অনেক আগে দ্বিতীয় সবসংঘচালক গুরু গোলওয়াকার দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.