বোধিসত্ত্ব হত্যার দায়ে ৪ অপরাধীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
অনলাইন প্রতিনিধি || ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোধিসত্ত্ব দাসকে হত্যার দায়ে চার অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে পশ্চিম জেলার জেলা ও দায়রা জজের আদালত। শনিবার ওই আদালতের মাননীয় বিচারক শুভাশিস শর্মা রায় চার অপরাধীকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ শোনান। পাশাপাশি তাদের পঞ্চাশ হাজার টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে অতিরিক্ত তিন মাসের কারাবাস। চার অপরাধী হল সুমিত চৌধুরী, প্রাক্তন পুলিশ ইনস্পেক্টর সুকান্ত বিশ্বাস, ব্যবসায়ী সুমিত বণিক এবং ওমর শরিফ ওরফে সোয়েব মিঞা।২০১৯ সালের ৩ আগষ্ট রাতে রাজধানীর জ্যাকশন গেট এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।ওই রাতে প্রায় বারোটা নাগাদ ওই এলাকায় একটি ওষুধের দোকানের সামনে বসে অপর বন্ধুর সাথে বসে বিয়ার পান করছিল ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোধিসত্ত্ব দাস। তখন কালিকা জুয়েলার্সের সুমিত চৌধুরীর গাড়িতে চেপে সেখানে পৌঁছায় সুমিত চৌধুরী, সুকান্ত বিশ্বাস এবং সুমিত বণিক। সুকান্ত প্রকাশ্যে উন্মুক্ত জায়গায় প্রস্রাব করতে শুরু করলে বোধিসত্ত্ব আপত্তি জানান। এ নিয়ে এদের মধ্যে তর্কবিতর্ক এবং হাতাহাতি শুরু হয়। সুকান্ত বিশ্বাসেরা তখন আকন্ঠ মদ্যপান করেছিল। হাতাহাতির ফাঁকে তাদের মধ্যে একজন সোয়েব মিঞাকে মোবাইলে ফোন করে অকুস্থলে ডেকে আনে। সোয়েব এসেই ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোধিসত্ত্বকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। একসময় বিয়ারের বোতল ভেঙে বোধিসত্ত্ব দাসের পেটে আঘাত করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে চারজনই কেটে পড়ে। রাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি করে বোধিসত্ত্বকে জিবি হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের বেডে পুলিশের কাছে চার অপরাধীর নাম জানান ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোধিসত্ত্ব দাস। বয়ান মোবাইলে রেকর্ড করে রাখে পুলিশ।পরবর্তী সময়ে কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ষোল আগষ্ট মারা যায় বোধিসত্ত্ব ।মামলায় হত্যার ধারা যোগ করে তদন্ত চালায় পুলিশ। কারণ এর আগে চার আগষ্ট বোধিসত্ত্বর মা পশ্চিম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।তদন্তশেষে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যার দায় এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। প্রায় চার বছর মামলার বিচার প্রক্রিয়াশেষে চারজনকেই শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত করে মাননীয় আদালত। আজ তাদের শাস্তির রায় শোনানো হয়। উল্লেখ্য,চার অপরাধীর বিরুদ্ধেই কাস্টডি ট্রায়াল চলে।অর্থাৎ এদের জেল হাজতে রেখেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছিল।