পাকিস্তান-তালিবান সম্পর্কের অবনতি।

 পাকিস্তান-তালিবান সম্পর্কের অবনতি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

পাক তালিবান জঙ্গি নয়। আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালিবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।তালিবান বরং পাকিস্তানের চরম শত্রু ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে।সম্প্রতি একাধিক রিপোর্টে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
২০২১ সালের আগষ্ট মাসে তালিবান আফগানিস্তানের ‘ক্ষমতা, দখল করে।মার্কিন এবং বিদেশি সেনা তার মধ্যেই কার্যত দেশে ফিরে যায়।সে সময় কাবুলে দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানের গোয়েন্দা হামিদকে সংস্থা আইএসআই-এর তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে।চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে তার আলোচনার ছবি ভাইরাল হয়েছিল।পাকিস্তান প্রথম ব্যাক চ্যানেলের মাধ্যমে সদ্য গঠিত তালিবান রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় গিয়েছিল।কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সেই চেষ্টা বুমেরাং হয়েছে।যত দিন গেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবান প্রশাসনের সম্পর্ক তত খারাপ হয়েছে।বিশেষজ্ঞরা এর জন্য কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।পাকিস্তানে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে তেহরিক-ই-তালিবান- পাকিস্তান।
কিন্তু এই গোষ্ঠীকে প্রশাসন নিজেদের বন্ধু বলে মনে করে না। আফগানিস্তানের তালিবান এই গোষ্ঠীকে গুরুত্ব দেয়।গত এক বছরে আফগান তালিবান যোদ্ধাদের প্রায় ১০০জন পাকিস্তানে এসে এই গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।এই গোষ্ঠী ইসলামিক অনুশাসনের পাকিস্তান চায়।গত এক বছরে পাকিস্তানে তারা একের পর এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণ চালিয়েছে।শ’খানেক অসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানি সরকারের দূরত্ব যত বাড়ছে, আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের সঙ্গেও পাকিস্তানের দূরত্ব বাড়ছে।আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি বড় অংশ মনে করে পাকিস্তান পুরোপুরি ইসলামিক রাষ্ট্র নয়। কারণ তার জন্মের ইতিহাস ঔপনিবেশিক। পাকিস্তানের প্রশাসনিক ভিত্তিও ইসলামিক নয়।ফলে এ পাকিস্তানকে তারা কখনোই বন্ধু বলে মনে করে না।অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে।যার জেরে বর্তমান তালিবান প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অংশ দীর্ঘদিন পাকিস্তানের কারাগারে থেকেছে।তারা পাকিস্তানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে চায়।এদিকে পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট চলছে।এই পরিস্থিতিতে তালিবান প্রশাসন পাকিস্তানের কাছ থেকে বিশেষ কোনও সুবিধা পাওয়ারও আশা দেখছে না। ব্যাক চ্যানেলের সাহায্যে তালিবান বরং ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। তালিবান শীর্ষ নেতৃত্ব প্রকাশ্যেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন।আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও আবেদন জানানো হয়েছে ভারতের কাছে। ভারতও ব্যাক চ্যানেলেই বিষয়টির মোকাবিলা করছে।এই পরিস্থিতিতে উপমহাদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের অভিমত। আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতা দখলের পর ভারতের প্রথম আশঙ্কা ছিল,পাকিস্তানের মাধ্যমে তালিবান যোদ্ধারা কাশ্মীরে ঢুকবে।এর আগে আফগানিস্তানে তালিবান শাসনামলে তেমনই ঘটেছিল।ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে বর্তমান তালিবানের সম্পর্ক যাতে তিক্ত হয়, ভারত বরাবর তেমনই চেয়েছে।বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা তেমনই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.