রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
বন্ধ হয়ে গেল পুরীর জগন্নাথের মন্দির, খুলবে ১৯ জুন।
গত রবিবার জ্যৈষ্ঠের পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে ১০৮ কলসি জল দিয়ে স্নানের পর বুধবার তাঁদের মন্দিরে অবস্থান করানো হয়েছিল। কারণ ঐতিহ্য অনুযায়ী, বিশ্বাস করা হয় যে পূর্ণিমায় অতিরিক্ত স্নানে ভগবান অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাই তাঁর চিকিৎসা করা প্রয়োজন। এই সময় প্রভু জগন্নাথকে অনেক ওষুধ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, অসুস্থতায় ভগবানকে শুধুমাত্র সাধারণ খাবার নিবেদন করা হয়। মনে করা হয়, ভগবানের অসুস্থতার কারণে ১৪ দিনের জন্য ভক্তদের দর্শন বন্ধ রাখা হয়। আষাঢ় কৃষ্ণ দশমী তিথিতে, মন্দিরে আচার পালন করা হয় যা ভগবান জগন্নাথের স্বাস্থ্যের পুনরুদ্ধারের প্রতীক। এখন তাঁদের ১৪দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।ফলে বুধবার থেকে বন্ধ হয়ে গেল পুরীর শ্রীজগন্নাথ দেবের মন্দির। দীর্ঘ চার দশক ধরে পুরীর মন্দির এবং সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ভাস্কর মিশ্র। তিনি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ‘ দৈতপতি’ সেবায়তদের মন্দিরের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, যেখানে দেবতা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রাম নেন। এখন জগন্নাথসহ তিন বিগ্রহকে গর্ভগৃহ থেকে সরিয়ে একটি কক্ষে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে পুরনো রীতি মেনে। যে ঘরটিকে বলে হয়, ‘আনাসার ঘর’। এই সময় ভোগের পাত্রে দেওয়া হয় আয়ুর্বেদিক পথ্যি। প্রাসাদের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক রাজ বৈদ্যের নির্দেশে তাঁদের ভেষজ, ফুল এবং মূলের নির্যাস দিয়ে চিকিৎসা করার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ভাস্করবাবু বললেন, ‘একজন মানুষ অসুস্থ হলে তাদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করা হয়, ঠিক তেমনই এখানে বিগ্রহের সঙ্গে করা হয়।’দৈত্যপতি সেবায়তরা ‘আনাসার ঘর’ থাকার সময় গোপন আচার অনুষ্ঠান করে এবং বার্ষিক রথযাত্রার আগে দেবতাদের পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করেন। দেবতাদের শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য প্রথমে ওষুধ দেওয়া হয় এবং তারপর ‘শ্রী অঙ্গ’ অর্থাৎ পবিত্র দেহে অন্যান্য অংশ ভেষজ তেল দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। দেবতারাও এই সময়ের মধ্যে সাধারণ ‘প্রসাদ’ পান না এবং শুধুমাত্র ফল দেওয়া হয়। আষাঢ় শুক্ল প্রতিপদ তিথিতে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং সেই দিন মন্দিরের দরজা খুলে ভগবানের আবির্ভাব হয়। ওই দিন মন্দিরে চক্ষু উৎসব হয়। নেত্র উৎসব নবজৌবন দর্শন নামেও পরিচিত। এ বছর নেত্রউৎসব ১৯ জুন সোমবার অনুষ্ঠিত ১৪-দিনের কোয়ারেন্টাইনের (যা অন্তত পক্ষে চারশো বছর ধরে তাল পাতাকেই ব্যবহার করা হচ্ছে) একে প্রার্থনা করা হয়। এসময় ভক্তরা পুরীতে ভগবান আলানাথকে দেখতে এবং তাঁর আশীর্বাদ পেতে হাজির হন। রীতি মেনে এবছরও রথযাত্রার একদিন আগে ‘নব জবনা দর্শন’ উপলক্ষে কয়েক লক্ষ ভক্তের সমাগম হবে বলে মনে করছে পুরীর জেলা প্রশাসন।
জগন্নাথদেবের রথযাত্রা শুরু হবে আষাঢ় শুক্লা দ্বিতীয়া তিথি অর্থাৎ ২০ জুন থেকে। প্রভু জগন্নাথ, ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রা তাদের রথে চড়ে তাদের মাসির বাড়িতে গুন্ডিচা মন্দিরে যাত্রা করবেন ওইদিন। পুরীর জেলাশাসক জানিয়েছেন, এবছর রথযাত্রা হয় ৮ থেকে ১০ লক্ষের ভক্তের সমাগম হবে। যেকোন ধরনের বিপত্তি এড়াতে প্রায় সত্তর হাজার পুলিশকর্মীকে মোতায়ন করা হয়েছে। গত দু’বছর ভিড় নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। এবছর নবীন পট্টনায়কের প্রশাসন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে বাহিনী তায় কিনা সেটাই দেখার।